ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আক্রান্ত ২৬ লাখ ও মৃত্যু প্রায় ২ লাখ

ইউরোপে ফের করোনার হানা

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ২৭ জুন ২০২০

ইউরোপে ফের করোনার হানা

সংক্রমণ ঠেকাতে জারি করা বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের এক মাসের মাথায় ইউরোপে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক ড. হান্স হেনরি ক্লুগ সতর্ক করে বলেছেন, সংক্রমণের পুনরুত্থানের ঝুঁকি বাস্তবতায় পরিণত হচ্ছে। বিবিসি। ড. হান্স হেনরি ক্লুগ বলেছেন, আর্মেনিয়া, সুইডেন, মালডোবা ও নর্থ মেসিডোনিয়াসহ ১১টি স্থানে সংক্রমণের দ্রুততর সংক্রমণ খুব তাৎপর্যপূর্ণ পুনরুত্থান। বিশ্ব সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ভাইরাসের বিস্তার মোকাবেলায় যদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা নয় তাহলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আবারও খাদের কিনারায় চলে যেতে পারে। ডব্লিউএইচওয়ের তথ্য অনুসারে, ইউরোপে করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ লাখের বেশি ও মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৯৫ হাজার মানুষের। এখন তা ইউরোপীয় অঞ্চল, মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ায় ৫৪ দেশ ও ৭টি ভূখ-ে ছড়াচ্ছে। প্রতিদিন ২০ হাজারের বেশি আক্রান্ত শনাক্ত ও ৭০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ড. ক্লুগ বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউরোপের অনেক দেশ বিধিনিষেধ শিথিল করতে থাকলে আমি পুনরুত্থানের বিষয়ে সতর্ক করেছিলাম। ইউরোপের কয়েকটি দেশে এখন এই ঝুঁকিটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে ৩০ দেশে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা জানান, পোল্যান্ড, জার্মানি, স্পেন ও ইসরায়েল বিপজ্জনক সংক্রমণ ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে স্কুল, কয়লাখনি, খাদ্য উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ করেছে। দ্রুত পদক্ষেপের ফলে বিস্তার নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পুনরুত্থানের বিষয়ে সতর্ক করলেও ড. ক্লুগ জানান, ডব্লিউএইচও ধারণা করছে গ্রীষ্মে বেশিরভাগ দেশেই পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে বুধবার একদিনেই সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ৮৮০ জনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সংক্রমণের এই হার মূলত দেখা যাচ্ছে, সাউথ এবং ওয়েস্ট ফ্লোরিডা, ওকলাহোমা, সাউথ ক্যারোলাইনা এবং টেক্সাসে। এ রাজ্যগুলেই বুধবার একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের ওই সংখ্যা জানিয়েছে। ভাইরাস ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যর্থতা এবং পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাওয়ারই ইঙ্গিত দিচ্ছে এ পরিসংখ্যান। নিউইয়র্ক টাইমস’র দেয়া নতুন ভাইরাস সংক্রমণের পরিসংখ্যান বলছে, ভাইরাসের প্রকোপ যে কোন সময়ের চেয়ে এখন বেশি। কেবল ভাইরাস পরীক্ষাতেই রোগী বেশি শনাক্ত হচ্ছে তাই নয়, হাসপাতালগুলোতেও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে রোগীর ভিড়। বুধবারের সর্বশেষ হিসাবে ২৩ লাখের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ মারা গেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার গর্বনর তার রাজ্যে একদিন আগের তুলনায় ৭ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর জানিয়েছেন। ইউরোপে সম্প্রতি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ার পরই পোল্যান্ড, জার্মানি, স্পেনের মতো দেশগুলো খুব দ্রুতই আবার বিধিনিষেধ আরোপ করে তা ঠেকানোর ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স হেনরি ক্লুজ। দেশগুলোর এ পদক্ষেপ আশাব্যঞ্জক উল্লেখ করে তিনি আগামীতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমে আসার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছেন। ক্লুজ বলেন, ডব্লিউএইচও’র পূর্বাভাস অনুযায়ী, গ্রীষ্মের সময়টিতে বেশিরভাগ দেশেই পরিস্থিতি আরও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে বসন্তের সময়টির জন্য প্রস্তুতি রাখতে হবে। কারণ, তখন ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া এবং অন্যান্য রোগের সঙ্গে মিশে যাবে কোভিড-১৯। সমাজে এখনও ভাইরাসটির সক্রিয় উপস্থিতি আছে এবং এর কোন কার্যকর চিকিৎসা কিংবা টিকা এখনও নেই।
×