ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

বিশ্বের নবীনতম দেশ কোনটি?

প্রকাশিত: ১২:২১, ৪ জুলাই ২০২৫

বিশ্বের নবীনতম দেশ কোনটি?

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক দশকে যুদ্ধ, রাজনৈতিক সংস্কার ও বৃহৎ রাষ্ট্রের ভাঙনের মধ্য দিয়ে বিশ্বে একাধিক নতুন দেশের জন্ম হয়েছে। কিন্তু আজকের দিনে বিশ্বের সর্বশেষ স্বীকৃত স্বাধীন দেশ কোনটি?

নতুন একটি দেশ নির্ধারণের ক্ষেত্রে নির্ভর করে আপনি কীভাবে "সার্বভৌম রাষ্ট্র" সংজ্ঞায়িত করছেন—আইনগত স্বাধীনতা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নাকি স্বাধীনতার গণভোটের মাধ্যমে ঘোষিত স্বাধীনতা?

নিচে জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত অথবা কার্যকরভাবে স্বাধীনতা অর্জন করা বিশ্বের কিছু নবীনতম দেশের তালিকা দেওয়া হলো—

১. দক্ষিণ সুদান (২০১১)
দক্ষিণ সুদান সুদানের কাছ থেকে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর ২০১১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে এবং একই বছর জাতিসংঘের সদস্যপদ পায়। এটি বর্তমানে বিশ্বের নবীনতম দেশ। পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটি অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে।

২. কসোভো (২০০৮)
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের কসোভো ২০০৮ সালে সার্বিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। যদিও ১০০টির বেশি দেশ এটি স্বীকৃতি দিলেও এখনও সার্বিয়া এবং কিছু জাতিসংঘ সদস্য এটি স্বীকৃতি দেয়নি। এটি নিজস্বভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও প্রশাসন পরিচালনা করে।

৩. মন্টেনেগ্রো (২০০৬)
সার্বিয়ার সঙ্গে রাজ্য ইউনিয়ন থেকে গণভোটের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হয়ে মন্টেনেগ্রো স্বাধীনতা লাভ করে। এটি বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রার্থী দেশ এবং স্বাধীনভাবে নিজস্ব সরকার পরিচালনা করে।

৪. তিমোর-লেস্তে (২০০২)
পূর্ব টিমোর নামেও পরিচিত, এই দ্বীপ রাষ্ট্রটি পর্তুগালের উপনিবেশ এবং পরে ইন্দোনেশিয়ার অংশ ছিল। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি গণভোটের মাধ্যমে ২০০২ সালে এটি সম্পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে।

৫. সার্বিয়া (২০০৬)
মন্টেনেগ্রো আলাদা হয়ে যাওয়ার পর সার্বিয়া এককভাবে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যদিও সার্বিয়ার ইতিহাস অনেক পুরনো, তবে এর বর্তমান স্বাধীন রাষ্ট্ররূপটি ২০০৬ সাল থেকে শুরু।

৬. পালাউ (১৯৯৪)
প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমাংশে অবস্থিত ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র পালাউ ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ফ্রি অ্যাসোসিয়েশন চুক্তির মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে। এটি আগে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ট্রাস্ট টেরিটরি অব দ্য প্যাসিফিক আইল্যান্ডসের অংশ ছিল।

৭. ইরিত্রিয়া (১৯৯৩)
ইথিওপিয়ার কাছ থেকে একটি দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ইরিত্রিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে। এটি আগে একটি ইতালীয় উপনিবেশ ছিল এবং ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পায়।

৮. স্লোভাকিয়া (১৯৯৩)
১৯৮৯ সালের ভেলভেট বিপ্লবের পর চেকোস্লোভাকিয়া শান্তিপূর্ণভাবে বিভক্ত হয়ে স্লোভাকিয়া এবং চেক প্রজাতন্ত্রে রূপ নেয়। স্লোভাকিয়া বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সংযুক্ত একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র।

৯. চেক প্রজাতন্ত্র (১৯৯৩)
একই বিভাজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জন্ম নেওয়া চেক প্রজাতন্ত্রেরও স্বাধীনতা অর্জন ঘটে ১৯৯৩ সালে। এর পুরনো ইতিহাস বোহেমিয়া এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল পর্যন্ত বিস্তৃত।

১০. ক্রোয়েশিয়া (১৯৯১)
যুগোস্লাভিয়া ভেঙে পড়ার সময় ক্রোয়েশিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে। যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক কূটনীতির মাধ্যমে এটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় এবং পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয়।

বর্তমানে বিশ্বের নবীনতম রাষ্ট্র হিসেবে দক্ষিণ সুদানকে বিবেচনা করা হয়, যেটি ২০১১ সালে জাতিসংঘে যোগ দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সর্বাধিক স্বীকৃত। তবে বিশ্বের আরও অনেক দেশ রাজনৈতিকভাবে নবীন এবং নিজেদের সার্বভৌমত্বের জন্য নানা রকম সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

নোভা

×