ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ঘরে বসেই আয় করুন! সাইড হ্যাসেলের এই নিয়মগুলো না জানলে পিছিয়ে পড়বেন!

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ৩ জুলাই ২০২৫

ঘরে বসেই আয় করুন! সাইড হ্যাসেলের এই নিয়মগুলো না জানলে পিছিয়ে পড়বেন!

ছবি: সংগৃহীত

আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও চাকরির বাজারে অতিরিক্ত আয়ের প্রয়োজন অনেকটাই বেড়ে গেছে। ঠিক এখানেই ‘সাইড হ্যাসেল’ বা পার্টটাইম আয়ের উৎস হয়ে উঠছে জনপ্রিয়। সাইড হাসেল শুধু বাড়তি আয়ই নয়, বরং নিজের পছন্দের কাজের পথে এগিয়ে যাওয়ার বা নতুন পেশায় অভিজ্ঞতা অর্জনের একটি দারুণ উপায়ও।

কিন্তু সাইড হ্যাসেল বলতে আসলে কী বোঝায়? কীভাবে শুরু করবেন? আর কোন ধরনের কাজগুলো আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে? আসুন জেনে নেই কেন সাইড হ্যাসেল শুরু করা উচিত।

সাইড হ্যাসেল কী?

সাইড হ্যাসেল মানে হচ্ছে আপনার প্রধান চাকরির বাইরে বাড়তি অর্থ উপার্জনের উপায়। এটি এমন এক ধরনের উদ্যোগ, যা আপনি মূল কাজের পাশাপাশি করতে পারেন। এতে যেমন বাড়তি আয় হয়, তেমনি নিজের পছন্দের কাজ বা নতুন কোনো ব্যবসার ধারণা পরীক্ষা করার সুযোগও থাকে।

সাইড হ্যাসেলের মধ্যে থাকতে পারে ফ্রিল্যান্সিং, নিজ হাতে তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি, ব্লগ লেখা, কিংবা রাইড-শেয়ারিং সার্ভিসে কাজ করা। এসব কাজে সময়ের স্বাধীনতা থাকে—আপনি অবসর সময়েই কাজ করতে পারেন।

বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক চাপে অনেকেই সাইড হাসেল শুরু করছে। অনেকেই ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার পথ বেছে নিচ্ছে।

একটি জরিপে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯% মানুষ সাইড হ্যাসেলে যুক্ত ছিল, আর ২০২৪ সালের আরেকটি জরিপে বলা হয়েছে, সাইড হ্যাসেল করা ব্যক্তিদের মধ্যে ১২% প্রতি মাসে ১,০০০ ডলারের বেশি আয় করছেন।

সাইড হ্যাসেল করার উপকারিতা

সাইড হ্যাসেলের অনেক সুবিধা রয়েছে। যেমন:

  • অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ: বাড়তি খরচ সামলানো, ঋণ পরিশোধ, অথবা সঞ্চয় বাড়াতে সাইড হাসেল কার্যকর।

  • নতুন দক্ষতা অর্জন: সাইড হ্যাসেলের মাধ্যমে নতুন স্কিল শেখা যায়।

  • ক্যারিয়ার পরিবর্তন: বিরক্তিকর চাকরির পরিবর্তে পছন্দের নতুন পেশায় পা রাখার সুযোগ।

  • নিজের শখ পূরণ: শখের কাজকে আয়ে পরিণত করা যায়।

  • নিজের নিয়ন্ত্রণে কাজ: সময়, শর্ত সবকিছু নিজের মতো করে নির্ধারণ করতে পারবেন।

কীভাবে সাইড হ্যাসেল শুরু করবেন?

সাইড হ্যাসেল শুরু করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

১. নিজের দক্ষতা খুঁজে বের করুন

প্রথমেই চিন্তা করুন—কোন কাজে আপনি দক্ষ? কী করলে ভালো লাগে? কী শিখতে চান? আপনার কোনো সার্টিফিকেট বা প্রশিক্ষণ থাকলে সেটিও কাজে লাগান।

নিজের পেশাগত দক্ষতা বা শখের কাজের তালিকা করুন। এতে আপনি দ্রুতই লাভজনক সাইড হ্যাসেল বেছে নিতে পারবেন।

২. বাজার সম্পর্কে ভালোভাবে জানুন

আপনার দক্ষতা ঠিক করার পর জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো ঘেঁটে দেখুন। Etsy, Amazon, Shopify বা Fiverr, Upwork-এর মতো সাইটে খোঁজ করুন।

আরও জানুন—আপনার টার্গেট গ্রাহক কারা? তারা কোথায় কেনাকাটা করে? কী ধরনের সেবা পছন্দ করে? এজন্য 'বায়ার পারসোনা' তৈরি করুন, যাতে কাজের সময় ফোকাস ঠিক থাকে।

৩. পরিকল্পনা করুন

একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরি করুন। শুরুতে আপনার সময়, খরচ ও আয় কেমন হবে, তা লিখে রাখুন।

সফলতার জন্য কোন কোন বিষয় গুরুত্বপূর্ণ হবে, তা আগেভাগেই ঠিক করে রাখলে ভবিষ্যতে হতাশা কমবে।

৪. সাইড হ্যাসেল সেটআপ করুন

আপনার কাজের ধরন অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলুন। Branded ইমেইল ঠিকানা তৈরি করুন, অনলাইন স্টোর বা ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে অ্যাকাউন্ট খুলুন।

Uber, Lyft, Rover বা Instacart-এর মতো কোনো সেবা চালু করলে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করুন এবং আইনগত বিষয়গুলো মেনে চলুন। কর সংক্রান্ত বিষয়ও আগেই হিসাব করুন।

৫. প্রচার করুন এবং বাড়ান

সব প্রস্তুতি হয়ে গেলে সোশ্যাল মিডিয়া, বন্ধু, পরিবার এবং পরিচিতদের মাধ্যমে আপনার সাইড হ্যাসেল প্রচার করুন।

বিশেষ করে টিকটক, ইন্সটাগ্রাম-এ ভিডিও মার্কেটিং করতে পারেন। সময়ের সঙ্গে আয়ের পথ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করুন।

গ্রাহকদের রিভিউ, পরিচিতদের রেফারেন্স এবং মুখে মুখে প্রচার আপনার আয় বাড়াতে সহায়ক হবে।

সাইড হ্যাসেল মানে শুধু বাড়তি টাকা নয়, বরং স্বাধীনতা, শখের কাজ, আর নতুন দক্ষতার পথও খুলে দেয়। পরিকল্পনা আর নিষ্ঠার সঙ্গে শুরু করলে আপনার সাইড হ্যাসেলও হতে পারে সফলতার নতুন গল্প!

আবির

×