ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ ॥ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ২৬ জুন ২০২০

বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ ॥ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অঙ্গীকার

গত মঙ্গলবার ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এবারের মুজিববর্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী একটি ভিন্নমাত্রা যুক্ত করেছিল। তার পরও বৈশ্বিক মহামারীর কথা চিন্তা করে অনেকটাই অনাড়ম্বরপূর্ণভাবে পালিত হয়ে গেল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উক্তি আমাদের বিশেষভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়Ñ ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠা লাভ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর সেই আওয়ামী লীগই বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনে। আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ধানম-ি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনে গত মঙ্গলবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময়ে বেগম মতিয়া চৌধুরীসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ এদেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণার্থে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২০ সালে এসেও বর্তমান সভানেত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বগুণে দলটি মানুষের কল্যাণে নিবেদিত রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারী শুরুর আগে সকলের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্নটি যথাযথ বাস্তবায়ন করে মানুষের জীবন-জীবিকা তথা শেখ হাসিনার ভাষায় পেটে-ভাতে রাজনৈতিক অর্থনীতির দর্শন বাস্তবায়নে সচেষ্ট ছিলেন। এখন সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল, মহামারীর জন্য দেশে দেশে বেকারত্বের সৃষ্টি হচ্ছে, বিপন্ন হচ্ছে মানবতা, বাবা-মাকে সন্তান কোভিড আক্রান্ত হলে পরিত্যাগ করছে, মাকে অজানা রোগের আশঙ্কায় ফেলে যাচ্ছে, পিতা মেয়ের লাশকে নদী বক্ষে নিক্ষেপ করছে, স্ত্রী স্বামীকে বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না, হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরেও কোভিড ও নন কোভিড রোগীরা ভর্তি হতে পারছে না, তখন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশে তৃণমূল থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যখন দেশে মার্চের ৮ তারিখ কোভিড রোগী প্রথম শনাক্ত হয়, তখন থেকেই জনসাধারণের পাশে থেকে মানুষের সেবায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মকা- মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। যারা বেইমানি করছে, দুর্নীতি করছে, মজুদদারী করছে, ঋণ খেলাপী হচ্ছে তারা সর্বকালে, তাদের মতো আগেও অনেকেই ছিল। এ মুষ্টিমেয়র জন্যর মিথ্যা প্রপাগা-াকারীদের জন্য ভাল কাজ ধূলিসাত হতে পারে না। গরিবের হক যাতে কেউ মারতে না পারে সে জন্য আওয়ামী লীগ সদা জাগ্রত রয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে পর্যন্ত তদারকি চলছে। আবার দেশের ক্রান্তিকাল উপলক্ষে দেশের প্রধানমন্ত্রী যে ৩১টি দফায় জনকল্যাণে সর্বস্তরে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছেনÑ সেটি প্রশংসনীয়। কিছু কিছু সমস্যা হয়ত দেখা দিতে পারে। কিন্তু সেগুলো ত্বরিত গতিতে সমাধান করতে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং নির্দেশ দেয়ায় ব্যবসায়ী ও আমলারা জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছে। ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালে জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেনÑ ‘একজনকে ডাক্তারী পাস করাতে বাংলার দুঃখী মানুষের না হলেও এক লাখ টাকা খরচ হয়। একটা ইঞ্জিনিয়ার করাতে না হলেও এক লাখ টাকা খরচ হয়। এ দেশের দুঃখী মানুষের পেটে খাবার নেই, তাদের অর্থে এদের লেখাপড়া শেখানো হয়েছে। আজ আমাদের বিবেচনা করতে হবে, কী আমি দিলাম তাদের?’ অত্যন্ত তাৎপর্যম-িত বক্তব্য। আজও মধ্য পঞ্চাশ বছরে এসে আমি বঙ্গবন্ধুর উক্তিটি মনেপ্রাণে লালন করি। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আমাদের অনুপ্রেরণা। কেননা তিনি যে কথা বলেছিলেন, আমরা যারা জেনারেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়েছি, তাদের জন্যও অনুপ্রেরণা। আমরা যারা জেনারেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করেছি তাদের ক্ষেত্রেও অর্থের প্রয়োজন হয়েছে। সেটি দিয়েছে বাংলার গরিব-দুঃখী জনগণ। তাই তো প্রতিনিয়ত চিন্তায় থাকি, আমার কর্মে যেন সাধারণ মানুষের উপকার হয়। আমার জন্মভূমি কুমিল্লায় ব্যক্তিগত ভাবে চেষ্টা করেছি কিছু অসহায় পরিবারের পাশে দূর থেকে দাঁড়াতে সীমিত সামর্থ্য নিয়ে। বঙ্গবন্ধুর কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু সেদিন জাতীয় সংষদে আরও বলেছিলেনÑ ‘সেই ১৯৩৮ সালে- যখন বাচ্চা মানুষ, তখন থেকে জেলে যাই। তারপর থেকে এক দিনও আমি বিশ্রাম করি নাই- আমি রাজনীতি করেছি। অত্যাচার, অবিচার আমি যা সহ্য করেছি, তা সব বাদ দিন।... বাজার নিয়ে খেলা, দাম নিয়ে খেলা।’ আসলে যুগে যুগে মজুদদার, মোনাফেক, ঋণ খেলাপীরা বাংলাদেশের অভুদ্যয়ের পূর্বেও ছিল, এখনও আছে। সরকারপ্রধান যেখানে দিবা-রাত্রি পরিশ্রম করে চলেছেনÑ কেমন করে জীবন ও জীবিকার মধ্যে ট্রেড অফ করা যায়, সেখানে কেউ কেউ বড় কথা পত্রপত্রিকা এবং টিভি চ্যানেলে, বিভিন্ন ওয়েভে সেমিনারে অগ্রপশ্চাৎ না ভেবেই নানা রকম অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন। প্রথম কথা হলো, সরকার তো সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল এবং জনগণকে সংক্রামক ব্যাধির হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা নিরন্তর করে যাচ্ছে। কি দরকার ছিল ঈদ-উল-ফিতরের সময়ে এভাবে বাড়িতে যাওয়ার? আবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সুনির্দিষ্ট ঘোষণার পরও অনেকে গুরুত্ব দেয়নি। বরং মহামারীকে হালকাভাবে নিয়েছে। যেহেতু আওয়ামী লীগ জনকল্যাণে বিশ্বাস করে, সেহেতু অতিরিক্ত কঠোরতা প্রদর্শন করা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী লীগ হচ্ছে একটি গণতন্ত্রমনা সংসদীয় পদ্ধতির জনগণ কর্তৃক সমর্থিত দল। কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী। কিছু কিছু টিভি চ্যানেলে ও পত্রপত্রিকায় এমন সব বিশেষজ্ঞ নিয়ে এসেছেÑতারা খালি গেল গেল রবে বিভোর। লকডাউন কর, লকডাউন কর! কিন্তু গরিব-দুঃখী মানুষেরা যদি কাজ না করে কোন দেশের কোন সরকার এককভাবে কতদিন খাবার দিতে পারবে? দু’মাস হলো দেশের প্রায় দেড় কোটি পরিবারকে নগদ অর্থ, ত্রাণসামগ্রী, খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে- ভবিষ্যতেও দেবে। অথচ কিছু কিছু অর্থনীতিবিদ, সমাজবিদ, জনস্বাস্থ্যবিশারদ, ভাইরোলজিস্ট, মাইক্রোবায়োলজিস্ট, চিকিৎসক অনেকেই কেবল লকডাউনের কথা বলছেন। কিন্তু যারা নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত তাদের কথা সরকার চিন্তা করে। তাই ধীরে-সুস্থে কাজ করাটাই বিচক্ষণ। ঢাকার দু’জন সিটি মেয়র অবস্থা বুঝে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন- যা প্রশংসনীয়। আজকের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। কিন্তু সব সময়ে জনগণের পাশে ছিল দলটি। মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে ব্রিটিশদের কাছ থেকে কিছু ক্ষমতালোভী মুসলিম লীগার ১৯৪৭-এ যে দেশ ভাগ হয় তাতে লাহোর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে গিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে পশ্চিম পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করে। মুসলিম লীগ সেদিন এদেশের জনমানুষের আশা-আকাক্সক্ষাকে নির্বিচারে ধূলিসাত করে। মুসলিম লীগ সেদিন সমাজকে আশ্রাফ আর আতরাফে বিভক্ত করে। যারা আশ্রাফ শ্রেণীর তারা কিন্তু মুসলিম লীগের ক্ষমতা দখল করে। অন্যদিকে আমাদের মতো আতরাফ শ্রেণী ও তার পূর্বপুরুষেরা মুসলিম লীগের কর্মকা-ে ত্যক্ত-বিরক্ত ছিলেন। আমার দাদা নেওয়াজেস আলী বিএল ১৯৫৮তে মারা যাওয়া পর্যন্ত কংগ্রেসের সমর্থক ছিলেন। স্বাভাবিক কারণেই মুসলিম লীগাররা বাংলার স্থলে উর্দুকে রাষ্ট্রীয় ভাষা করতে চেয়েছিল। মোবাশ্বের আলী ‘বাংলাদেশের সন্ধানে’ গ্রন্থে লিখেছেন যে, ১৯৫১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী : বাঙালী হচ্ছে : ৫৪.৬%, পাঞ্জাবী : ২৮.৪%, উর্দুভাষী : ৭.২%, পশতু : ৭.১, সিন্ধী : ৫.৮। তিনি তার গ্রন্থে লিখেছেন : ‘বাংলা সমগ্র পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা। অথচ নবপ্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানে বাংলাভাষার কোন স্থান নেই, মর্যাদা পাওয়া তো দূরের কথা।’ মোবাশ্বের আলী তার গবেষণা গ্রন্থ বাংলাদেশের সন্ধানে লিখেছেন যে, ‘সত্যি বলতে, সূচনা থেকেই পাকিস্তান বলতে মূলত পশ্চিম পাকিস্তানকে বুঝিয়েছে এবং পূর্ব পাকিস্তানকে একটি করদ রাজ্য বলে মনে হয়েছে।’ বস্তুত আওয়ামী লীগের গঠনের মধ্য দিয়ে পূর্ব বাংলার সাধারণ জনমানুষের মধ্যে ঐক্যতান সৃষ্টির প্রয়াস পরিলক্ষিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে যদিও নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ, কিন্তু পরবর্তীতে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সুষ্ঠু দল হিসেবে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠার পর পরই দ্রুত দলটি সাধারণ জনমানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেÑ বিশেষ করে যখন থেকে শেখ মুজিবুর রহমান দলের হাল ধরেন। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শওকত আলী, ইয়ার মোহাম্মদ খান, শামসুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী। তবে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশ স্বাধীন প্রতিটি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যে ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন সে সম্পর্কে মোবাশ্বের আলী লিখেছেন : আইয়ুবের সামরিক শাসনামলেও শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ৬ দফা কর্মসূচী গ্রহণ করে (২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৬)। আওয়ামী লীগের ৬ দফা বঞ্চিত বাঙালীর নিকট ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ রূপে গৃহীত হয়।’ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এক প্রাজ্ঞ নেতার গতিশীল নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য ধীরে ধীরে সম্মুখসমরে এগিয়ে গেছে। কারাগারের রোজনামচা বইটি পড়লে তার প্রতি সে অত্যাচার-নিপীড়ন তা আমাদের অশ্রুসিক্ত করে তোলে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক জনকল্যাণের কথা বলেছে সবসময়। শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছিল। জাতির পিতাকে সপরিবারে ঘৃণ্যভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়া মোশতাক-চাষী গং দেশের স্বাধীনতাকে হরণ করার প্রয়াস নিয়েছিল। কিন্তু যে জাতি একবার স্বাধীনতার আস্বাদ পেয়েছে, তার পক্ষে আবার পরাধীন হওয়া কি সাজে? আসলে যে ধরনের ঘৃণ্য মন-মানসিকতা তাদের ছিল, তাতে একুশ বছর তারা চেষ্টা করেছিল ক্ষমতা থেকে আওয়ামী লীগকে দূরে রাখতে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন আবার বাস্তবায়ন শুরু হয়। ১৯৯৮ এর বন্যাকালীন ও পরবর্তী পর্যায়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাহায্যে মানুষের মঙ্গল সাধন এবং সে সময়ে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা দূর করতে সরকার একের পর এক প্রয়াস নিয়েছিল। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখিয়েছিল। আবার ২০০৯ সালে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বগুণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল উন্নয়নের দিকে। ইতোমধ্যে নিম্ন-মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আশা করা যায়, ২০২৪ সালে এলজিসি গ্র্যাজুয়েট হব। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। কোন দান খয়রাত বাংলাদেশ নেয় না কোন দেশ থেকেই। তবে কোভিড-১৯ এর টিকা চীন আবিষ্কার করে যদি বাংলাদেশকে দেয় তবে বুঝব তারা কথা রেখেছে। কোভিড-১৯ এসে দেশে নানা সমস্যার সৃষ্টি করেছে। যেহেতু দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের দল প্রথম থেকেই সুচিন্তিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টায় রত। তবে একদল মানুষ দুর্দিনেও ব্যবসার ধান্ধায় আছে। কিছু বেসরকারী হাসপাতাল অসহায় রোগীদের এত অধিক হারে ভুতুড়ে বিল দিচ্ছে, মনে হয় কোভিড-১৯ এর পরও তাদের মধ্যে মৃত্যু ভয় ও নৈতিকতা এবং সততা জাগ্রত হয়নি একটুও। সরকার তার সীমিত সামর্থ্যরে বাইরে গিয়ে মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে চেষ্টা করছে। এখানেই আওয়ামী লীগের মানুষের প্রতি উজাড়করণ ভালবাসা। এ জন্যই জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উক্তি আবারও স্মরণ করছি। গত মঙ্গলবার মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে এই দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা এদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করব। মানুষের কল্যাণে আমরা কাজ করে যাব। আজকের দিনে জাতির পিতার কাছে এটাই আমাদের অঙ্গীকার। সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি উন্নয়নের কারিগর। তার এই স্বপ্ন সাধারণ মানুষের মঙ্গল-আকাক্সক্ষাকে ঘিরে। যেহেতু মানুষের মঙ্গলার্থে তার পথচলা, সেটি সার্থক হবে বলেই বিশ্বাস করি। আজকে যে দুঃসময় তার মধ্যে যেমন ভাল মানুষের অভাব নেই, তেমনি খারাপ মানুষেরও অভাব নেই। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও কৃষক লীগও মানুষের মঙ্গলার্থে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। এদেশে যখন উন্নয়ন হচ্ছে, ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে এবং সব কিছু ধীরে ধীরে ট্রান্সপারেন্ট হয়ে উঠছেÑ মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘব হবেই। কোভিড-১৯ এর কারণে অনেকে শহর থেকে গ্রামে চলে যাচ্ছেন। স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনায় আমদানি বিকল্পায়ন শিল্প ও স্থানীয় পুঁজিÑস্থানীয়ভাবে খরচ করেছে সেখানকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লিখিত গ্রাম হবে স্মার্ট শহর। অনেকেই অনেক বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু সরকারপ্রধান সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগকে কাজে লাগাচ্ছেন। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও পিকেএফকে পাশাপাশি কৃষি উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ের জন্য শিল্প প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ উন্নয়ন ব্যাংককে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। কোভিড-১৯ এর কারণে প্রবাসীরা বেকার হলে সর্বাগ্রে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে কাজ করতে হবে। এ জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি দরকার। দীর্ঘ ৭১ বছরের পথপরিক্রমায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রধান সংসদে বলেছেন ‘করোনাভাইরাসে দুঃখ-কষ্ট মানুষের আছে। আজকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।’ জননেত্রী হয়ে উঠেছেন মানুষের চেতনার বাতিঘর, আলোকবর্তিকা। লেখক : ম্যাক্রো ও ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিস্ট [email protected]
×