ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাদিয়া তাবাস্সুম বৃষ্টি

করোনাজয়ীর ভূমিকা ও প্লাজমা দান

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ২৫ জুন ২০২০

করোনাজয়ীর ভূমিকা ও প্লাজমা দান

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের ফলে অবরুদ্ধ পুরো পৃথিবী। ব্যতিক্রম নয় আমাদের দেশও। করোনায় দৈনিক আক্রান্ত অথবা মৃত্যুর সংখ্যা উর্ধমুখী ধারা অব্যাহত আছে এ মাসেও। জুন মাসে লকডাউন শিথিল করার সঙ্গে সঙ্গেই মানুষ বেরিয়ে পড়েছে, কেউ কর্মক্ষেত্রে, কেউ জীবিকার সন্ধানে। সেই ফলস্বরূপ দেশে আক্রান্তের যে হার পরিলক্ষিত হচ্ছে তা অদূর ভবিষ্যতে ঠিক কি ঘটাতে চলেছে তা অত্যন্ত শঙ্কাযুক্ত। তবে পরিসংখ্যান বলে, করোনা আক্রমণের কিছুদিনের মধ্যেই শতকরা ৮০ ভাগ মানুষই সুস্থ হয়ে যান। অতি ভীতির কারণে যারা করোনার অনিবার্য পরিণতি হিসেবে মৃত্যুকে ভাবছে তাদের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারেন করোনাজয়ী প্রত্যেকটি মানুষ। এ সঙ্কটে সে সকল সুস্থ হয়ে ফেরা মানুষ যার যার জায়গায় দাঁড়িয়ে বিবেকপ্রসূত সেবামূলক কাজ যেমন, তাদের প্লাজমা ডোনেট করেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। এ সঙ্কট মোকাবেলায় এভাবেই একজনকে অপরজনের পাশে এগিয়ে আসতে হবে। সকল পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং প্রয়োজনের তাগিদে লকডাউন কিছুটা শিথিলের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে সরকার। বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকালেও দেখা যাচ্ছে, সব দেশের মানুষই কম বেশি কোভিড-১৯ কে যুদ্ধ হিসেবে নিয়েছে। ঘরে বসে থাকার পক্ষপাতি না কেউই। করোনার এ সময়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গেই করতে হবে বসবাস, এমন একটি কৌশল নিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গতি আনছে গোটা বিশ্ব। এছাড়া আর উপায় নেই মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত অথবা দিনমজুর শ্রেণীর কারোরই। আজ বাংলাদেশ যে সময়ে এসে দাঁড়িয়েছে সেখানে মানুষের পাশে মানুষকেই দাঁড়াতে হবে, সরকারের একার পক্ষে সার্বিক মোকাবেলা দুরূহ ব্যাপার। তবে সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, আমাদের সম্মুখ সারির যোদ্ধা যেমন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও সেনা সদস্য তাদের ভেতর আক্রান্তের সংখ্যা, এমনকি মৃত্যুও ঘটছে অনেক যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ফ্রন্টলাইনে থাকা এ সকল যোদ্ধাদের সর্বোচ্চ ত্যাগেই আমরা এখনও টিকে আছি। জীবনের মূল্য সকলেরই সমান, তবে তাদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত অনিবার্য। করোনার গ্রাস থেকে মানুষকে বাঁচাতে প্রথম দিন থেকে এখনও এ সকল ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ে জনসচেতনতাই একমাত্র অবলম্বন, যার সঠিক চর্চাই পারে আক্রান্তের ও মৃত্যুর উর্ধগামী সংখ্যাকে নিম্নগামী করতে। জনসচেতনতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নেই। বাঙালী জাতীসত্তার সঙ্গে যুক্ত মৃত্যুঞ্জয় শব্দটি। যুগে যুগে বহু যুদ্ধে আমরা জয়ী হয়েছি। আজ গোটা বিশ্বের অজানা ভাইরাস করোনাবিরোধী এ যুদ্ধেও আমরা জয়ী হবোই। এবারের অস্ত্র হবে সচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি নিষেধাজ্ঞাগুলো যথার্থভাবে পালনের মধ্য দিয়েই আমরা একটি সুস্থ, শংকামুক্ত পৃথিবী ফিরিয়ে আনব। এই প্রতিজ্ঞায় এই অঙ্গীকারে সচেতন থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে মানুষই আজ মানুষের শেষ ভরসা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা থেকে
×