ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক বদিউজ্জামান টুনু আর নেই

প্রকাশিত: ১৪:১০, ২২ জুন ২০২০

রাজশাহীর মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক বদিউজ্জামান টুনু আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ একাত্তরের রণাঙ্গনের অকুতোভয় যোদ্ধা বীর প্রতীক রাজশাহীর বদিউজ্জামান টুনু আর নেই। রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামান টুনুর পৈত্রিক বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর ঝাউতলা মোড়ে। এ বাড়িতেই তিনি থাকতেন। রাজশাহীর সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কবি আরিফুল হক কুমারের চাচা শ্বশুর তিনি। আরিফুল হক কুমার তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বেশ কিছু দিন ধরেই শারীরিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন বদিউজ্জামান টুনু। আরিফুল হক কুমার জানান, বেশকিছু দিন আগে বদিউজ্জামান টুনুর পা ভেঙ্গে গিয়েছিল। এছাড়া বার্ধক্যজনিত সমস্যা তো ছিলই। সপ্তাহখানেক আগে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এরপর তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর তাকে বাসায় নেয়া হয়েছিল। শনিবার তিনি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে আবারও রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। প্রায় দুই বছর আগে বদিউজ্জামান টুনুর স্ত্রী ফিরোজা বেগম মারা গেছেন। তার দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে। এদের মধ্যে এক ছেলে থাকেন কানাডায়। আর এক মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। অন্য দুই মেয়ে থাকেন ঢাকায়। আর এক ছেলে থাকেন লক্ষ্মীপুর ঝাউতলার বাসায়। পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা করে বীর প্রতীক বদিউজ্জামান টুনুর দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও জানান আরিফুল হক কুমার। বদিউজ্জামান টুনু ১৯৭১ সালে একটি ওষুধ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ৪২ বছর। ওই বয়সেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভারতে গিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেন। গেরিলাযুদ্ধের পাশাপাশি সম্মুখযুদ্ধও করেন। মুক্তিযুদ্ধে সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য বদিউজ্জামান টুনু বীর প্রতীক খেতাব পান। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বদিউজ্জামান টুনুর বড় ভাইয়ের দুই ছেলে, ছোট ভাই, ভগ্নিপতি ও ভাগনি জামাই নজমুল হককে হত্যা করে। নজমুল হক পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের এমএনএ (মেম্বার অব ন্যাশনাল অ্যাসেমব্লি) ছিলেন। এদিকে বীর প্রতীক বদিউজ্জামান টুনুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএ খায়রুজ্জামান লিটন ও সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। পৃথক শোক বার্তায় তারা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছেন।
×