ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুই অঙ্কের ঘরে নেমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

দুই অঙ্কের ঘরে নেমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অবশেষে দীর্ঘদিন পর দুই অঙ্কের ঘরে নেমে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। দাম কমেছে চাল, আলু, আদা ও ভোজ্যতেলের। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। সজনে ডাটাসহ গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ছে বাজারে। মাছ, মাংস ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করায় স্বস্তি ফিরে আসছে বাজারে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার, মুগদা বড় বাজার, খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন মার্কেট ও যাত্রাবাড়ি বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা কমেছে দেশী পেঁয়াজের দাম। ভারত রফতানি বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়ায় পেঁয়াজের দাম কমে আসছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পেঁয়াজের পাশাপাশি আদা ও রসুনের দাম কমতে শুরু করেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ভালো মানের দেশী পেঁয়াজের দাম কমে ৮০-৯০ টাকা হয়েছে। আর আমদানি করা ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০-১২০ টাকা। এছাড়া আমদানি করা চীনা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০০-২১০ টাকা কেজি। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা রসুনের দাম কেজিতে ৩০ টাকা কমেছে। আর দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০-১৬০ টাকা। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে দেশী রসুনের দাম কেজিতে কমেছে ৭০ টাকা। পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বাজারে স্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে চীনের করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীনা রসুন ও আদার দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল ভোক্তাদের। কিন্তু করোনার প্রভাব না কমলেও এ দুটি নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে খিলগাঁও সিটি কর্পোরেশন মার্কেটের পেঁয়াজ, রসুন ও আদা বিক্রেতা মিজান জনকণ্ঠকে বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কমায় খুচরা বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে। বাজারে দেশী পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। এছাড়া ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা শুরু হলে এসব পণ্যের দাম আরও কমবে বলে জানান তিনি। ওই বাজারের পেঁয়াজ ক্রেতা ব্যাংক কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান জানান, দীর্ঘদিন পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম ভোক্তাদের ভুগিয়েছে। ভারত রফতানি বন্ধ করায় বাজারে সঙ্কট তৈরি হয়। তবে এখন তাদের সেই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। ফলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে নিত্যপণ্যের বাজারে। মুগদা বড় বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদ হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে চীনা রসুনের দাম ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকা হয়েছিল। সে সময় দেশী রসুনের সরবরাহ কম ছিল। এখন বাজারে প্রচুর নতুন দেশী রসুন আসছে। এ কারণে সব ধরনের রসুনের দাম কমেছে। এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, লাউ, করলা, টমেটো, শশা, শিম, শালগম, মুলা, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। এছাড়া গ্রীষ্মকালীণ সবজি যেমন পেঁপে, সজনে ডাটা, বরবটি, কাঁচকলা, চিচিঙ্গার সরবরাহ বেড়েছে। এসব সবজির দাম একটু বেশি। এ মুহূর্তে বাজারে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সজনে ডাটা। প্রতিকেজি সজনে ডাটা ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া গত সপ্তাহে ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-১০০ টাকা। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। এছাড়া মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৫৪-৬০ এবং মাঝারিমানের পাইজাল ও লতা চালের দাম কেজিতে ২ টাকা কমে ৪২-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া খোলা সয়াবিন প্রতিলিটারে ২ টাকা কমে ৮৫-৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্থিতিশীল রয়েছে ডালের দাম। এছাড়া মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০ টাকা, শিং মাছ ৩০০-৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৫০০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা, নলা ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা কেজি। এছাড়া গরুর মাংস ৫৫০-৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০-৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দেশী মাছের পাশাপাশি বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশের সরবরাহ রয়েছে।
×