মিলু শামস
বাড়ি
শ্যাওলা ধরা বাড়িটির সামনে দাঁড়াতেই
হু হু করে ওঠে প্রাণ-
সিঁড়ির ল্যান্ডিং বরাবর
ছোট্ট ব্যালকনি থেকে উড়ে যায়
নিঃসঙ্গ চড়ুই
চারদিক সুনসান;
এ-বাড়িতে একদিন
নহবতের সুরের মতো
উপচে পড়ত আনন্দ কোলাহল,
জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধতা নিয়ে
খিল খিল হাসতো
অষ্ট প্রহর,
আজ নিঃসীম শূন্যতা নিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে স্তব্ধতার পাহাড়।
এই প্রথম বাড়ির সংজ্ঞা স্পষ্ট হয়-
ইট কাঠ মার্বেলের
কারুকাজ নয়
বাড়ি অর্থ বসতি
কিছু মানুষের স্বপ্ন আর
মমতার সীমানা,
অঙ্কুরোদগম বীজের সজীবতা নিয়ে
বাড়ি বেঁচে থাকে
গৃহির কল্যাণ ছোঁয়ায়।
ডোর বেল বেজে যায় ...
আঁচল সামলে
হন্তদন্ত হয়ে আসে না
কোনো উজ্জ্বল হাসিমুখ,
কলাপসিবল গেট
খুলতে খুলতে
উচ্ছ্বসিত গলায় ঝরে না
অপার স্নেহ
‘এসেছিস?
ইস্্ রোদে পুড়ে কয়লা হয়েছিস।’
সদর দরজায় পা রেখে
এই প্রথম মনে হয়-
যাঁদের স্বপ্নে গড়া বাড়ি
তাঁরা চলে গেলে
বাড়িও মরে যায় ॥
** ঝিঙে ফুল বিকেল
ঝিঙে ফুল-রঙ হলদে বিকেল
ঝরে পড়লে কোনো এক
প্রাচীন নগরী পুষ্পবতী হয়-
দেহে তার মিছিল করে
কল্লোলিত প্রেমপদ্য;
গ্রামে গ্রামে রটলে প্রজাপতির
আগমন সংবাদ
ধুপছায়া শাড়ি ঢাকে
ছলছল যৌবনÑ
লৌকিক পুরাণ লতিয়ে ওঠে
গোছায় গোছায়।
ঝিঙে ফুলের মতো হলদে রঙের
বিকেল কিংবা সন্ধ্যায়
প্রেমসিক্ত পুষ্পবতী
তপ্ত মোমের মতো
ফোঁটা ফোঁটা স্নিগ্ধতা ছড়ায়।
শীর্ষ সংবাদ: