ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় ক্রিকেট লীগে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম জয়ী

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

 জাতীয় ক্রিকেট লীগে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম জয়ী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) তৃতীয় রাউন্ডে রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগ জিতেছে। প্রথম স্তরে রংপুরকে ৬ রানে রাজশাহী ও দ্বিতীয় স্তরে সিলেটকে ৯ উইকেটে হারায় চট্টগ্রাম। দুইদিনে সিলেটকে হারিয়ে দেয় চট্টগ্রাম। প্রথম স্তরে খুলনা-ঢাকা এবং দ্বিতীয় স্তরে বরিশাল-ঢাকা ম্যাচ ড্র হয়েছে। তবে খুলনা-ঢাকা ম্যাচটিতে বাজিমাত করেছেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। খুলনার এ ব্যাটসম্যান প্রথম ইনিংসে ১২৬ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১৫১ রান করেছেন। বরিশাল-ঢাকা ম্যাচেও চমক মিলেছে। মোহাম্মদ আশরাফুল (১৫০*) সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। প্রথম স্তর ॥ কক্সবাজারে রাজশাহী-রংপুরের মধ্যকার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি ম্যাচ হয়েছে। দুই দলই শেষ মুহূর্তে জেতার মধ্যে ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সানজামুল ইসলামের অসাধারণ বোলিংয়ে ৬ রানে জিতে রাজশাহী। প্রথম ইনিংসে ২০১ রান করতেই গুটিয়ে যায় রাজশাহী। জবাবে প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রান করে রংপুর। ৭৩ রানে এগিয়ে থাকে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে আবার ব্যাটিং ধস হয়। এবার ১৯০ রানেই অলআউট হয় রাজশাহী। রংপুরের সামনে জিততে ১১৮ রানের টার্গেট দাঁড় হয়। চতুর্থ ও শেষদিনে মঙ্গলবার মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই গুটিয়ে যায় রাজশাহী। রংপুরের সামনে জিততে দুই সেশন থাকে। কিন্তু এই দুই সেশনেও রংপুর জিততে পারেনি। সানজামুল ইসলাম দুই ইনিংসেই দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিন ঘূর্ণিতে ৫ উইকেট শিকার করে নিয়েছেন। সানজামুলের সঙ্গে সাকলায়েন সজিবও ৫ উইকেট নিলে ১১১ রানেই অলআউট হয়ে যায় রংপুর। জিতে যায় রাজশাহী। খুলনা-ঢাকার মধ্যকার কক্সবাজারের ম্যাচটিতে ঢাকা একটুর জন্য বেঁচে গেছে। খুলনা জয়ের একেবারে কাছে চলে যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর খেলার সময় না থাকায় ম্যাচটি ড্র হয়। তবে খুলনার এনামুল হক বিজয় দেখিয়েছেন ব্যাটিং ঝলক। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করে দেখান। এবার সেঞ্চুরিকে দেড় শ’ (১৫১*) রানে নিয়ে যান বিজয়। খুলনা প্রথম ইনিংসে ৩৭১ রান করে। জবাবে ঢাকা বিভাগও প্রথম ইনিংসে ৩১৬ রান করে। খুলনা থেকে পিছিয়ে থাকলেও জবাবটা ভালই দেয় রংপুর। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে খুলনা ৩ উইকেট হারিয়ে ৩০১ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। বিজয় প্রথম ইনিংসে ১২৬ রান করার পর এবার দ্বিতীয় ইনিংসে ২২৫ বলে ৯ চার ও ৮ ছক্কায় অপরাজিত ১৫১ রান করেন। তৃতীয়দিন ২ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান করে খুলনা। বিজয় ৬১ ও তুষার ইমরান ১৬ রানে ব্যাট করছিলেন। চতুর্থদিনে বিজয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দেড় শ’ রানেও চলে যায়, তুষার (২১) বেশিদূর যেতে পারেননি। তবে নুরুল হাসান সোহান অপরাজিত ৬১ রান করেন। চতুর্থ উইকেটে বিজয় ও সোহান মিলে ১৪০ রানের জুটি গড়েন। এই জুটিই ঢাকার সামনে জিততে ৩৫৭ রানের টার্গেট দেয়। টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে দুই সেশনের কম সময়েই হারের মধ্যে পড়ে যেতে থাকে ঢাকা। ৯৭ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বসে। মেহেদী হাসান একাই ৫ উইকেট শিকার করে। শেষে গিয়ে নাজমুল ইসলাম (২৬*) হাল ধরলে রক্ষা মিলে। ৭ উইকেটে ১১৯ রান করে চতুর্থ ও দিন শেষ করে ঢাকা। ড্র করে মাঠ ছাড়ে। দ্বিতীয় স্তর ॥ রাজশাহীতে সিলেটকে সহজেই হারাল চট্টগ্রাম। প্রথম দুইদিন বৃষ্টিতে খেলা হয়নি। শেষ দুইদিন খেলা হয়। তাতেই চট্টগ্রাম জয় তুলে নেয়। প্রথম ইনিংসে সিলেট ১৬৩ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ভরাডুবি হয়। ১০৯ রানেই গুটিয়ে যায় সিলেট। ইরফান হোসেনের বোলিং তোপে পড়ে সিলেট। তবে চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংসে যে পিনাক ঘোষের (১০০) সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে, তাতেই এগিয়ে যায়। জিততে চট্টগ্রামের সামনে ৪৪ রানের টার্গেট পড়ে। ১ উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান করে জিতে যায় চট্টগ্রাম। বগুড়ায় বরিশাল-ঢাকা মেট্রোপলিস ম্যাচটি যে ড্র হবে তা আগেই নিশ্চিত ধারণা করা গেছে। বৃষ্টির জন্য খেলাই হয়নি তিনদিন। চতুর্থদিন খেলা হয়। একদিন সময়টিই কাজে লাগান বরিশাল ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে আশরাফুল। তিনি ওপেনিংয়ে নেমে ২০৪ বলে ১৬ চারে অপরাজিত ১৫০ রানের ইনিংস উপহার দেন। আশরাফুলের দেড় শ’ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১২ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে বরিশাল। জবাব দিতে নেমে ঢাকা মেট্রোপলিস ৩৪ রান করতেই দিন শেষ হয়। ম্যাচও ড্র হয়। স্কোর ॥ রাজশাহী-রংপুর প্রথম স্তরের ম্যাচ- কক্সবাজারে রাজশাহী প্রথম ইনিংস- ২০১/১০; ফরহাদ ৬০; রিশাদ ৫/৫০ ও দ্বিতীয় ইনিংস তৃতীয়দিন ১২৯/৬; সানজামুল ৩৬; তানভির ৩/৩০। রংপুর প্রথম ইনিংস- ২৭৪/১০; মেহেদী ৭৮, নাসির ৬২; সানজামুল ৩/৮৬ ও দ্বিতীয় ইনিংস- ১১১/১০; নাঈম ৩৬; সাকলায়েন ৫/৩৫, সানজামুল ৫/৪৮। ফল ॥ রাজশাহী ৬ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সানজামুল ইসলাম (রাজশাহী)। খুলনা-ঢাকা প্রথম স্তরের ম্যাচ- কক্সবাজারে খুলনা প্রথম ইনিংস- ৩৭১/১০; বিজয় ১২৬; তাইবুর ৩/৪১ ও দ্বিতীয় ইনিংস- তৃতীয়দিন ১৪৫/২; বিজয় ৬১* ও চতুর্থদিন ৩০১/৩; ইনিংস ঘোষণা; বিজয় ১৫১*, সোহান ৬১*; নাজমুল ২/১০৫। ঢাকা প্রথম ইনিংস- ৩১৬/১০; রনি ৭৩, সাইফ ৭২; মেহেদী ৪/৯২ ও দ্বিতীয় ইনিংস- ১১৯/৭; নাদিফ ৩৭; মেহেদী ৫/৪৬। ফল ॥ ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ এনামুল হক বিজয় (খুলনা)। চট্টগ্রাম-সিলেট দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচ- রাজশাহীতে সিলেট প্রথম ইনিংস- ১৬৩/১০; কাপালী ৪২; ইরফান ৬/৫৭ ও দ্বিতীয় ইনিংস- ১০৯/১০; কাপালী ৩১; মেহেদী রানা ৫/৩০, ইরফান ২/২২। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস- ২২৯/৯ ইনিংস ঘোষণা; পিনাক ১০০, মুমিনুল ৩৭; রাহী ৪/৮৬ ও দ্বিতীয় ইনিংস ৪৫/১; ইরফান শুকুর ২৬*, পিনাক ১০*। ফল ॥ চট্টগ্রাম ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ইরফান হোসেন (চট্টগ্রাম)। বরিশাল-ঢাকা মেট্রোপলিস ম্যাচ- বগুড়ায় বরিশাল প্রথম ইনিংস- ৩১২/৫; ইনিংস ঘোষণা; আশরাফুল ১৫০*, সোহাগ ৬৮; শরিফুল্লাহ ৩/১১৪। ঢাকা মেট্রোপলিস- ৩৪/০; ইনিংস ঘোষণা; সাদমান ১৭*, রাকিন ১৭*। ফল ॥ ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ মোহাম্মদ আশরাফুল (বরিশাল)।
×