ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এলিফ্যান্টকে সমীহ করে সেমিতে চোখ আবাহনীর

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

এলিফ্যান্টকে সমীহ করে সেমিতে চোখ আবাহনীর

জাহিদুল আলম জয়, চট্টগ্রাম থেকে ॥ শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে দুর্দান্ত শুরু করা চট্টগ্রাম আবাহনীর সামনে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালের টিকেট কাটার সুযোগ। আজ রাতে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে লাওসের তারুণ্যনির্ভর ক্লাব ইয়ং এলিফ্যান্টকে হারাতে পারলেই এক খেলা হাতে রেখে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলের শেষ চারে খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে জামাল ভুঁইয়ার দলের। এ লক্ষ্য নিয়েই সোম ও মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বন্দর মাঠে ঘাম ঝরানো অনুশীলন করেছে কোচ মারুফুল হকের দল। চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ ও অধিনায়ক দু’জনই জয় পেতে আত্মবিশ্বাসের কথা শুনিয়েছেন। তবে ১৩০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহনবাগানকে হারানো ইয়ং এলিফ্যান্টকে খাটো করে দেখছেন না তারা। বরং তাদের গতি আর কাউন্টার এ্যাটাককে বেশ সমীহ করছেন। ‘এ’ গ্রুপের আরেক ম্যাচে আজ বিকেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হার মানা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ও কলকাতার মোহনবাগান এ্যাথলেটিক ক্লাব। ম্যাচটি দু’দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে ম্যাচটিতে জয়ের বিকল্প নেই কোন দলেরই। শেখ কামাল কাপের প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী দ্বিতীয় আসরে মুকুট ধরে রাখতে পারেনি। এবার তাই আঁটঘাট বেঁধে নেমেছে দলটি। প্রথম ম্যাচেই তারা ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন টিসি স্পোর্টসকে। বড় জয় পেলেও ওই ম্যাচ শেষে দলের কোচ জানান, দলের আরও উন্নতির জায়গা আছে, যে কোন আসরের প্রথম ম্যাচ কঠিন হয়। আমাদের খেলতে হয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে। তাছাড়া অনেক খেলোয়াড় বাইরের থাকায় টিম কম্বিনেশনের জন্য আমরা খুব বেশি সময় পায়নি। সামর্থ্যরে ৬০ ভাগ দিয়েছে ছেলেরা। আরও বেশি গোল না হওয়াতে হতাশ নই। কিন্তু আমাদের আরও গুছিয়ে খেলতে হবে। প্রথম ম্যাচে বড় জয় পাওয়ায় তরুণ হাতিদের হারাতে পারলেই নকআউট পর্বে খেলা নিশ্চিত হবে। ম্যাচটিতে মাঠে নামার আগে মোহনবাগানকে হারিয়ে দেয়া ক্লাবটিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন স্বাগতিক কোচ মারুফুল হক, ইয়ং এলিফ্যান্ট ভাল দল। আমার মনে হয়, টুর্নামেন্টে ওরাই সবচেয়ে ভাল প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ওরা প্রমাণ করেছে নিজেদের। ওদের হারাতে হলে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। ইয়ংয়ের সবচেয়ে ভাল দিক, ওদের গতি আছে। কাউন্টার এ্যাটাকেও অসাধারণ। তাহলে কি ইয়ংকে ভয় পাচ্ছেন? এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেয়া হয় মারুফুলকে। তিনি বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, না, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওরা মোহানবাগানকে হারিয়েছে বলে সব পেয়ে গেছে এমন নয়, আবার মোহনবাগান এক ম্যাচ হেরেছে বলে সব শেষ হয়ে গেছে এমনও নয়। জিতলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে বন্দরনগরীর দলটির। বিষয়টি মাথায় আছে তার, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিরোপা পুনরুদ্ধার। কিন্তু প্রথমে আমাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ইয়ংয়ের বিরুদ্ধে জিততে হবে। কোচের মতো ইয়ং এলিফ্যান্টকে সমীহ করছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ভাড়াটে অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়াও। বন্দর মাঠে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ইয়ং এলিফ্যান্টের ভিডিও দেখেছি। ওরা ভাল দল, দম আছে। দুই উইং দিয়ে আক্রমণে বেশ ধার আছে। মোহনবাগানকে হারানোর পর ওদের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়েছে। তবে আমরা আমাদের সেরাটা খেলতে চায়। তাহলে জয় পাওয়া অসম্ভব হবে না। প্রথম ম্যাচে চমক দেখালেও আজকের খেলা কঠিন হবে বলে মানছেন ইয়ং এলিফ্যান্ট কোচ ভি সালভারাই ভেংগাদাসালাম, আমরা জানি ম্যাচটি কতটা কঠিন হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম আবাহনী অনেক শক্তিশালী দল। তবে আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভাল কিছু করতে চাই। হারে শুরু করায় ভীষণ চাপে আছে টিসি স্পোর্টস ও মোহনবাগান। এ জন্য আজ জয় ছাড়া কিছুই ভাবছে না দল দু’টি। নিজেদের মুখোমুখিতে যারা জিততে পারবে সেমিতে খেলার সম্ভাবনাও তাদের জোরালো হবে। আর হারলেই অনেকটা বিদায় নিশ্চিত। এমন সমীকরণ সামনে রেখে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ জোশে এ্যান্টোনিও ভিকুনা বলেন, ‘ম্যাচটি আমাদের জন্য বাঁচা-মরার। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি জিতে আমরা সেমির রেসে টিকে থাকতে চাই। শুধু তাই নয়, বাকি দুই ম্যাচেই আমরা জয়ের জন্যই মাঠে নামব। আশাকরি সফল হতে পারব। স্বাগতিকদের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া টিসি স্পোর্টসের জন্যও ম্যাচটি জীবন-মরণের। দলটির কোচ মোহম্মদ হামিদ বলেন, আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর বিকল্প নেই। এজন্য সেরাটা দিতে হবে। আবাহনীর বিরুদ্ধে ছেলেরা ক্লান্ত ছিল। স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি। আশা করছি এই ম্যাচে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
×