ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

ঈশ্বরদীতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, কৃষক গুলিবিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, ঈশ্বরদী

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ১২ জুলাই ২০২৫

ঈশ্বরদীতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, কৃষক গুলিবিদ্ধ

ছবি: সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়া এলাকায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বিকেলে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ রাউন্ড গুলির বিস্ফোরণ ঘটে, এতে সোহান (২৮) নামের এক কৃষক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তিনি মাজদিয়া গ্রামের সাহাবউদ্দিন মোল্লার ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুটি স্পিডবোট ও একটি নৌকায় করে সশস্ত্র একটি নিষিদ্ধ গোষ্ঠীর সদস্যরা নদী পার হয়ে এসে এলোমেলোভাবে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় মাঠে ঘাস কাটতে থাকা কৃষক সোহান গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ঘটনার পরপরই ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আ.স.ম. আব্দুর নূরের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। বর্তমানে এলাকাজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে, অনেকেই নিরাপত্তার আশঙ্কায় ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

স্থানীয় ও বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পদ্মা নদীর ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র ইজারার নামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। সম্প্রতি যুবদল নেতা টনি বিশ্বাস তার প্রতিষ্ঠানের নামে বৈধভাবে বালু উত্তোলনের অনুমতি পান। কিন্তু এই বৈধ উদ্যোগে বাধা দেয় আগের চক্রটি। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায় এবং সংঘর্ষের রূপ নেয়।

জানা গেছে, এর আগেও দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, যাতে অন্তত সাতজন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। শনিবারের হামলাকে এই বিরোধেরই ধারাবাহিকতা বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ চলছে। পাশাপাশি, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে তারা।

এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রকাশ পেয়েছে ঈশ্বরদীর পদ্মা নদী এলাকায় বালু উত্তোলন নিয়ে চলমান সহিংসতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির চিত্র। স্থানীয়রা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

আসিফ

×