স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে গ্যাস লিকেজের কারণে শনিবার এক বাড়িতে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দগ্ধ গৃহকর্ত্রী আকলিমা বেগম (৫০) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা গেছেন। ওই ঘটনায় আগুনে শতভাগ পুড়ে যাওয়া গৃহকর্তা ইয়াকুব আলী মন্ডলের (৬০) অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন। অপর অগ্নিদগ্ধরা হলেন তাদের ছেলে স্বপন (২২) ও ইয়াকুব আলীর শ্বশুর নুর মোহাম্মদ (৮০)।
নিহতের পুত্রবধূ সাদিয়া আফরিন সাথী জানান, বাড়িতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আকলিমা বেগমের শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে তিনি মারা যান। এছাড়া শরীরের শতভাগ পুুড়ে যাওয়া শ্বশুর ইয়াকুব আলী মন্ডলের অবস্থাও সঙ্কটাপন্ন।
জিএমপি’র সদর থানার ওসি সমীর চন্দ্র সূত্রধর, জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার জাকারিয়া খান ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর মহানগরীর সালনা কাথোরা মন্ডলবাড়ি এলাকার একতলা ভবনের একটি ইউনিটে ইয়াকুব আলী সপরিবারে বসবাস করেন। শুক্রবার রাতে ওই বাসার একটি কক্ষে ইয়াকুব ও তার স্ত্রী এবং পাশের কক্ষে স্বপন ও তার নানা ঘুমিয়ে ছিলেন। শনিবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিষ্ফোরণ হয়ে ঘরের দরজা-জানালা ভেঙ্গে ছিটকে পড়ে এবং অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভায় এবং কক্ষ থেকে দগ্ধ ও আহতাবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইয়াকুব আলী, তার স্ত্রী ও শ্বশুরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। অপর আহত স্বপনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়। আগুনে ঘরের খাট, বিছানা-পত্র, কাপড়-চোপড়সহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। তবে বিকট শব্দ ও তাদের দগ্ধ হওয়ার সঠিক কারণ জানা যায়নি।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর বাচ্চু মিয়া জানান, অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখানে ভর্তিকৃত ইয়াকুব আলীর শরীরের শতভাগ, স্ত্রী আকলিমার শরীরের ৯৫ শতাংশ এবং নুর মেহাম্মদের শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মোঃ শরিফুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, ওই বাড়ির রান্নাঘর অক্ষত ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চুলার গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে নির্গত হয়ে গ্যাস পুরো ঘরে ছড়িয়ে আটকা পড়ে। পরে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে জমাট থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণ ঘটে অগ্নিকা-ের সূত্রপাত। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা তদন্তের পর অগ্নিকান্ডের প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।