ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দুরন্ত পাকরা আরেকটি জয় পেতে মরিয়া

প্রকাশিত: ১১:০১, ২৯ জুন ২০১৯

 দুরন্ত পাকরা আরেকটি জয় পেতে মরিয়া

মোঃ মামুন রশীদ ॥ একবার পা পিছলে গেলেই বিশ্বকাপ আসর থেকে ছিটকে যেতে হবে। তাই এই মুহূর্তে চলমান ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কোন সুযোগ নেই জয় ছাড়া ভিন্ন কিছু ভাববার। এখন ৭ ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট তাদের, বাকি দুই ম্যাচে জিতলেই সম্ভাবনা থাকবে সেমিফাইনালে ওঠার। তাই আজ দুর্বল ও বিপর্যস্ত আফগানিস্তানের বিপক্ষে সে লক্ষ্যেই নামবে এই মুহূর্তে টানা দুই জয়ে উজ্জীবিত পাকরা। টানা ৭ ম্যাচ হেরে অনেক আগেই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়া আফগানদের লক্ষ্য শেষটা ভাল করার। সে জন্য তারা অনুপ্রেরণা পাচ্ছে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে পাকদের হারিয়ে দেয়ার টাটকা স্মৃতি থেকে। তবে আজ পর্যন্ত পাকরা অবশ্য কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচে আফগানদের কাছে হারেনি। আর এখন দুরন্ত হয়ে উঠেছে পাকরা। তাই হেডিংলিতে আজও তারা জয়ের জন্যই নামবে। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে। ১৯৯২ বিশ্বকাপের স্মৃতিটা বারবারই ফিরিয়ে আনছে পাকরা। এবার বিশ্বকাপ যাত্রাটা ঠিক সেরকমই হয়েছে এখন পর্যন্ত তাদের। সেবারই প্রথম ইমরান খানের নেতৃত্বে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকরা। আর ১৯৯২ বিশ্বকাপের আদলেই এবারের আসরটি আয়োজিত হচ্ছে। এবারও ২৭ বছর আগের সেই বিশ্বকাপের মতো প্রথম ম্যাচে পরাজয়, দ্বিতীয় ম্যাচে জয়, তৃতীয়টি পরিত্যক্ত, চতুর্থ ও পঞ্চম ম্যাচে হার এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম ম্যাচে জিতেছিল পাকিস্তান দল। আশ্চর্যজনকভাবে পরিসংখ্যানটা মিলে যাওয়াতে এখন পাকদের নিয়ে নতুন করে হিসেব-নিকেশ শুরু হয়েছে। হয়তো আবার চ্যাম্পিয়নই হয়ে যাবে পাকরা। এবার সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বে ঠিক সেভাবেই এগিয়ে চলেছে তারা। সেদিক থেকে প্রাথমিক রাউন্ড পেরনোর রাস্তাটা কঠিন হলেও সুযোগটা বাড়াতে এখন বাকি দুই ম্যাচেই জয় পেতে হবে তাদের। আজ তারা আফগানদের বিপক্ষে জিততে পারলে অনেকখানিই এগিয়ে যাবে ১৯৯২ বিশ্বকাপের অনুকরণটা বাস্তবে রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে। এই মুহূর্তে দারুণ ফর্মে আছে দলটি। ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা অস্থিতিশীলতা থাকলেও বোলিংয়ে তা পুষিয়ে দিচ্ছে পাকিস্তান। বিশেষ করে মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজ যেভাবে প্রতিপক্ষের জন্য দুর্বার হয়ে উঠেছেন তা সত্যিই বড় শক্তি হয়ে উঠেছে তাদের। সর্বশেষ ম্যাচে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বাবর আজমও ফর্মে ফিরেছেন দারুণ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে। সে জন্যই নিউজিল্যান্ডের মতো দুরন্ত বেগে ছুটে চলা দলকেও পরে ব্যাট করে ৬ উইকেটের ব্যবধানে হারাতে পেরেছে। এখন সবচেয়ে বড় কাজ বাকি ম্যাচগুলো জেতা। তাই টানা দুই জয়ের পর কোনভাবেই সরফরাজ একাদশে পরিবর্তন আনতে চাইবেন না। হুঙ্কার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল আফগানরা। কিন্তু এখন কাগুজে বাঘ হয়ে গেছে তারা। নখ-দন্তহীন বোলিং ও ব্যাটিংয়ে হতশ্রী অবস্থা তাদের। তবে এশিয়ার দলগুলোর সঙ্গে যেন তারা দুর্বার। শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও লড়াই করেছে এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে তেমন খারাপ খেলেনি। শেষদিকে কয়েকটি ম্যাচে কিছুটা হলেও নিজেদের ফিরে পেয়েছে তারা। টানা ৭ ম্যাচ হেরে এখন হাস্যকর দলে পরিণত হলেও পাকদের তাই কিছুটা সাবধানী হওয়ার মতো ব্যাপার আছেই। বিশেষ করে দুই অফস্পিনার মোহাম্মদ নবি ও মুজিব উর রহমান টানা ভাল বোলিং করেছেন। এদের সঙ্গে অন্যতম শক্তি রশীদ খানের লেগস্পিন কার্যকর হয়ে উঠলে বিপদ ঘটতে সময় লাগবে না। পেসাররাও তেমন খারাপ করেনি। তবে ব্যাটিংয়ে বেহাল দশা দলটির। সেটা কাটিয়ে উঠতে পারলে পাকদের জন্য লড়াইটা সহজ হতে দেবে না আফগানরা। বিশ্বকাপে অবশ্য এখন পর্যন্ত দু’দলের সাক্ষাত হয়নি। এবারই প্রথম তারা এই মঞ্চে মোকাবেলায় নামছে। এর আগে এক টি২০ এবং ৩ ওয়ানডে হয়েছে দু’দলের মধ্যে। প্রতিবারই জিতেছে পাকিস্তান। সবগুলোই এশিয়া কাপে। তবে এবার বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে পাকদের ২৬২ রানে গুটিয়ে দিয়ে পরে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৬৩ রান তুলে জিতেছিল আফগানিস্তান। সেটা তাদের অনুপ্রেরণা, তবে সেই পাকিস্তান এখন বদলে অন্যরূপ ধারণ করেছে। সেমির স্বপ্নে মরিয়া দলটিকে থামানো বেশ কঠিনই হবে আফগানদের জন্য।
×