ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা ছাড়ালে আইপিও ছাড়তে হবে না

প্রকাশিত: ০৮:২০, ২৮ জুন ২০১৯

পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা ছাড়ালে আইপিও ছাড়তে হবে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশে ব্যবসায়রত কোম্পানিগুলোর পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা ছাড়ালেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আইনী বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সম্প্রতি এ সংক্রান্ত আট বছর আগের একটি প্রজ্ঞাপন বাতিল করেছে। বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর ফলে বড় কোম্পানিগুলোর প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ইস্যু তথা পুঁজিবাজারে আসার সম্ভাবনা আরও কমে গেল। বিশেষ করে জ্বালানি বিদ্যুত, কম্পোজিট টেক্সটাইল, পরিবেশ সনদপ্রাপ্ত তৈরি পোশাক কারখানা, বড় ওষুধ কোম্পানি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে আসার শর্ত থেকে ছাড় পেল। এখন থেকে বিষয়টি একেবারেই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। উল্লেখ্য, পুঁজিবাজারে বড় কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির সুবিধার্থে ২০১১ সালের ৫ মে বিএসইসি একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আইনী বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কোন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা ছাড়ালে অবশ্যই সেটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করতে হবে। নইলে ওই কোম্পানিকে নতুন করে মূলধন উত্তোলন করতে তথা মূলধন বাড়াতে দেয়া হবে না। অন্যদিকে কোন কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা ছাড়ালে সেটিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে হবে। অবশ্য এই আইনী বাধ্যবাধকতার কারণে এখন পর্যন্ত কোন বড় কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে জানা যায়নি। দুয়েকটি কোম্পানির মূলধন বেঁধে দেয়া সীমা অতিক্রম করলেও তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি ওই বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এছাড়া সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে সব বহুজাতিক তথা বিদেশী কোম্পানিকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, নতুন প্রজ্ঞাপন জারির আগে পর্যন্ত ১০ কোটি টাকার বেশি মূলধনসম্পন্ন কোন কোম্পানিকে নতুন করে মূলধন উত্তোলন করতে হলে বা মূলধন বাড়াতে হলে বিএসইসির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হতো। সম্প্রতি প্লেসমেন্ট শেয়ার সংক্রান্ত বিতর্কের কারণে বিএসইসি মূলধন উত্তোলনে তাদের অনুমতি নেয়ার শর্তটি প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘোষণা দেয়। চলতি সপ্তাহে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। যেহেতু মূলধন উত্তোলনে বিএসইসির অনুমতি নেয়ার শর্তটিই থাকছে না, তাই পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটি টাকার বেশি হলে নতুন মূলধন উত্তোলনে পুঁজিবাজারে আসার বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে। একটি কোম্পানির স্পন্সর/প্রমোটার্স ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে তিন বছর পর্যন্ত ন্যূনতম ৩০ শতাংশ ধারণ করার অপর একটি শর্তও প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, যে শর্তগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে বা যে প্রজ্ঞাপনগুলো বাতিল করা হয়েছে, সেগুলোর সবই ছিল মূলধন উত্তোলন সংক্রান্ত। যেহেতু বিএসইসি মূলধন উত্তোলনে তাদের অনুমতি নেয়ার বাধ্যবাধকতাটুকু তুলে নিয়ে বিষয়টি কোম্পানির ওপর ছেড়ে দিয়েছে, তাই মূলধন উত্তোলন সংক্রান্ত আগের প্রজ্ঞাপনগুলো আর প্রাসঙ্গিক নয়। তাই সেগুলো বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
×