ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ২৮ মে ২০১৯

 ঢাকার দিনরাত

ছবি সত্য বলে, কিন্তু কতটুকু বলে? কোন কোন ছবি রীতিমতো বক্তব্যই প্রকাশ করে ফেলে নিঃশব্দে, শব্দহীনভাবে। সংবাদপত্রের ছবির নিচে ক্যাপশন বা ছবি-পরিচিতি থাকে। অবশ্য শুধু স্থান-কাল উল্লেখ থাকলেও মানুষ যা বোঝার বুঝে নিতে পারে। সম্প্রতি দুটো ছবি দেখলাম কাগজে, পর পর দু’দিন। ভেতরে ভেতরে চমকে ওঠার মতো ছবি, শুধু চমকে ওঠা বললে কম বলা হয়। শঙ্কাই জাগাল ওই দুটো ছবি। তবে এই কয়েকটা দিন প্রায় নিয়মিতভাবেই এক ধরনের ছবি ছাপা হয়ে চলেছে। ঢাকা মহানগরের চালচিত্র কিংবা, বলা ভাল, নিত্যদিনের বাস্তবতা বোঝাতে এ ধরনের ছবি মোক্ষম। বলছি যানজটের ছবি। যান হচ্ছে সচলতার প্রতীক। আর যখন বিভিন্ন গতির নানা ধরনের যানবাহন সড়কের ওপর স্থিরচিত্র হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, সেই ছবি দেখে চিন্তাও যেন জট পাকিয়ে যায়। রমজানে গরমে জান যায়, যানজটেও জান যায় যায় দশা। শুক্রবার জুমার পরে উত্তরা থেকে অফিসের উদ্দেশে বেরিয়েছিলাম। মহাখালী মোটামুটি ভালোয় ভালোয় পার হয়েছি, তারপর থেকেই দীর্ঘ যানবাহনের সারি। একেকটা ট্রাফিক সিগন্যালে কমপক্ষে পনেরো মিনিট করে আটকে থাকা। ৩৫ ডিগ্রির ওপরে গরম, দুপুরের অড টাইম, তার পরও এত ভিড় রাস্তায়! ঈদ যে কাছে চলে এসেছে, পরের শুক্র শনিবার বহু মানুষই ঢাকায় থাকবেন না, কিংবা ঢাকা ছাড়ি ছাড়ি করবেন। তাই এই শুক্র-শনিবার ঈদের কেনাকাটা সেরে ফেলা চাই। তাই বলে মধ্যদুপুরে? ঈফতারির পরে বা সকাল সকাল কি মার্কেটে যাওয়া যায় না? নিজের মনেই নিজের প্রশ্ন বোকার মতো মনে হয়। ঢাকায় এখন কোটি মানুষ। এর সামান্য একটা অংশও যদি মনে করে এখনই মার্কেটে যাওয়া যাক, সেই এখন সময়টি সকাল, দুপুর বা সন্ধ্যা হোক না কেন, তখনই ভিড় তৈরি হওয়ার কথা। গত শুক্র-শনিবার দিনভরই যে ঢাকার সড়কে বিরাজ করেছে অসহনীয় স্থবিরতা, মানে ট্রাফিক জ্যাম, তার মূল কারণই হলো ঈদের কেনাকাটা। আর এটা মনে করার কোন কারণ নেই যে শুধু ঢাকাবাসীই যান ঈদের শপিংয়ে। সারা দেশ থেকেই মানুষ আসেন ঢাকায় ঈদের কেনাকাটা করতে। এই সুযোগে ছোট্ট করে বলে রাখি, অনেক ঢাকাবাসীই আবার ঈদের বাজার করতে ছোটেন ব্যাঙ্কক, সিঙ্গাপুরে, নিদেনপক্ষে কলকাতায়। সে যাক। প্রসঙ্গ থেকে সরে এসেছি, বলছিলাম দুটো ছবির কথা। একটি হলো কমলাপুর রেল স্টেশনে ঈদে বাড়ি যাওয়ার টিকেট কিনতে ইচ্ছুক মানুষ। গায়ে গা লাগা প্রচুর মানুষ। এদের ভোগান্তির শেষ নেই। ডিজিটাল যুগে এ্যাপসের মাধ্যমেও অনলাইনে টিকেট বিক্রির কথা বলা হয়েছে। বাস্তবে সাড়ে তিন ঘণ্টা চেষ্টা করেও ওই এ্যাপসের টিকেট ক্রয় প্রক্রিয়ায় খুব একটা অগ্রসর হতে পারেননি মানুষ। প্রতি বছরই এমনটা হয়, কমলাপুর থেকে ব্যর্থ হয়ে ভগ্ন হৃদয়ে ঘরে ফেরেন মানুষ। কোন না কোন উপায়ে চেষ্টা করেন ঈদের আগে দেশে যেতে। সবার চেষ্টা যে সফল হয় না, সেটি খুব সত্যি কথা। তাই ঈদের দিন, কিংবা ঈদের পরের দিনও মানুষ প্রিয়জনের সান্নিধ্য পেতে দেশের উদ্দেশে রওনা হন। কমলাপুরে মানুষের ভিড়ের ছবি আমাদের একসঙ্গে অনেকগুলো সত্য বলে দেয়। হ্যাঁ, টিকেটের অপ্রতুলতা আছে, মানুষ অনেক অনেক বেশি- এটা সত্য। এর পাশেই যে দুটো সত্য উঁকি দেয় তা হলো- জনসংখ্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ এবং উদ্যম, নতুন উদ্যোগ সত্ত্বেও ব্যর্থতা ও হতাশার হার বিরাট। আসা যাক দ্বিতীয় ছবিটি প্রসঙ্গে। মধ্যবিত্তদের জন্য সুলভ মূল্যে ঈদের কেনাকাটা করার প্রিয় স্থান গাউছিয়া মার্কেট ও নিউ মার্কেট। গাউছিয়ার ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে হাজার হাজার মানুষ নিউমার্কেটের দিকে আসেন। গিজগিজ করছে মানুষ। এত মানুষ! এদের বেশির ভাগই ঈদের ছুটিতে দেশের বাড়ি যাবেন, প্রিয়জনদের জন্য উপহার নিয়ে যাবেন। তাই কেনাকাটা করতেই হবে। সেটি সাধ্যের মধ্যে করা চাই। হাজার হাজার মানুষ তাই ছুটছেন। ফটোগ্রাফার বেশ দক্ষ হাতে বিপরীত দিক থেকে, বেশ খানিকটা উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। ফলে জমজমাট জনসভার মতোই মনে হচ্ছে এই জনচাপ। এই ছবি কি আমাদের মনের ওপর কোন চাপ সৃষ্টি করে না? ইচ্ছে প্রবল, তবু অপারগ ইচ্ছে থাকলে নাকি উপায় হয়। উপায় করে দেখেছি, কিন্তু ফলস্বরূপ হয়ে গেছি উপায়হীন। বলছিলাম ফলের কথা। এই গরমে রোজা-রমজানের দিনে রসাল ফলের সন্ধান করতে হয় না। আপনার হাতের নাগালেই আছে ঝুড়ি ঝুড়ি ফল। আমার দশা হয়েছে সেই অসহায় লোকটির মতো, যে প্রবল তৃষ্ণার্ত, পানির মধ্যেই তার বসবাস। কিন্তু সেই পানি দূষিত, পান করা সম্ভব নয়। কী না কিনেছি এই ফলের মৌসুমে। তরমুজ, লিচু, আম, আপেল, আনারস। সবটাতেই ঠকেছি। না দামের কথা বলছি না। দাম কম-বেশি ঠকা-জেতা হতেই পারে। কিন্তু ফল যদি ভেজাল হয়, তা হলে? কেমিক্যাল মেশানোর বিষয়টি ধীরে ধীরে টের পেয়েছি। তাই ভয় ঢুকে গেছে। ফল খেয়ে অসুস্থতাকে স্বাগত জানানোর চাইতে, ফল না খেয়ে সুস্থ থাকাটাই কি অপেক্ষাকৃত ভাল কাজ নয়? পাকা আমের ভেতর কচি আঁটি পাওয়ার খবর কি কাগজে দেখেননি? আমার এক অনুজতুল্য সাংবাদিক বন্ধু ‘ফল কেনা বারণ’ শিরোনামে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘কারওয়ান বাজারে ফলের সমাহার। ক্রেতার যোগান ভাল। ফলের টসটসে রং দেখে লোভ হলো ফল কেনার। দরদাম করছি। একজন প্রবীণ বিক্রেতা বললেন- নিতে পারেন, তবে পেঁপে ছাড়া সব ওষুধে পাকানো। রাতে কার্বাইড দেয়া হয়েছে আমে। আনারসে স্পিরিট, লিচুতে রং-স্পিরিট দুটোই। পেঁপে পেকেছে আগুনের তাপে। তরমুজে রং আর স্যাকারিনের ইঞ্জেকশন। জানতে চাইলাম তাহলে খাব কি? প্রবীণ বললেন- ডাব কিনবেন বুইঝা, ইঞ্জেকশন ডাবেও চলে। জাম খেতেও বারণ করলেন। আবার জানতে চাইলাম তা হলে খাব না কিছু? তিনি বললেন- ডেউয়া, কাউ, বাঙি, ডুমুর খান। আমি ফিরছিলাম পেছন থেকে ডেকে বললেন- ভাতিজা ভাত খাও, ধানের দাম কমছে!’ বিলম্বে হলেও সুখবর পাচ্ছি। ফরমালিন বা কার্বাইডযুক্ত ফলমূলবাহী যানবাহন ধরতে ঢাকার ৮ প্রবেশপথে বসানো হচ্ছে চেকপোস্ট। চেকপোস্টে ধরাপড়া ফলমূল ধ্বংস করা হবে। সেই সঙ্গে ভেজাল ফলমূল বহন, বেচাকেনার সঙ্গে জড়িতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক জেল-জরিমানা করা হবে। রমজান মাসের পরও অন্তত এক সপ্তাহ এমন অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ফলমূল ছাড়া ভেজাল খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে ধারাবাহিকভাবে। তবে মনে পড়ছে বেশ কিছুদিন আগে হাইকোর্ট আমসহ অন্যান্য ফল পাকানো বা সংরক্ষণে কেমিক্যাল ব্যবহার রোধে সারাদেশের ফলের বাজার ও আড়ত নজরদারিতে পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এসব দেখার কর্তৃপক্ষ থাকতেও বার বার হাইকোর্টকেই ভূমিকা রাখতে হচ্ছে। আমরা যে কাগজে এত লেখালেখি করছি, টিভিতে রিপোর্টিং হচ্ছে, প্রশাসন খুব একটা ভ্রুক্ষেপ করে না- এখন উচ্চ আদালতের নির্দেশে কতটা তৎপর হয় সেটাই দেখার বিষয়। হাইকোর্টের কথায় প্রসঙ্গত মনে পড়ল আরেকটি ঘটনা। সেটিও খাবারের ভেজাল সংক্রান্তই। হাইকোর্টকে কি হাইকোর্ট দেখান- এমন একটি প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। মানহীন ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার ও জব্দে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়ন না করায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। শুনানির সময়ে আদালত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘পণ্য জব্দ ও প্রত্যাহার করতে আদেশ দেয়া হয়েছিল। আপনারা একটি মসলার প্যাকেটও জব্দ করতে পারেননি। ভদ্রতার একটি সীমা আছে। ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না। আপনারা চিঠি দিয়েছেন, অনুরোধ করেছেন, কিন্তু পণ্য জব্দ বা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেননি। ইস্কাটনের অফিসের পাশে ১৭ জন (মোট জনবল) ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ মিলে একটি পণ্যও জব্দ করতে পারলেন না? আপনাদের অফিস রাখার দরকার কী? ভয় পাচ্ছেন? বড় বড় ব্যবসায়ী (পণ্য উৎপাদনকারী) কী করে ফেলেন বা কী করবেন। এমনটি হলে চাকরি করার দরকার কী?’ কথাগুলো একটু রূঢ় শোনাচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু জনস্বার্থেই আদালতকে এমন ভূমিকা রাখতে হয়েছে, সে কথা বলাই বাহুল্য। এই দেশে দায়িত্বপ্রাপ্তরা যদি যথাযথ দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যেত। পণ্য বাতিল করা হলো তার একটিরও উৎপাদক সংস্থা কি দেশবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছে? ব্যবসা করে তো কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছে। দেশের মানুষকে ঠকিয়েই তারা মুনাফা লুটছে। তাই শুধু পণ্য বাজার থেকে তুলে নিলেই কি এদের লজ্জা দূর হবে? প্রতীকী শাস্তির ব্যবস্থা থাকলে এবং সেটি ফলাও করে গণ্যমাধ্যমে আসলে হয়ত তারা কিছুটা সংশোধন হতো। রাতে গানবাজনা রোজার মাসে দিনের বেলা অনেক কিছুই বন্ধ থাকে সঙ্গত কারণেই। তবে ইফতারির পর থেকে শুরু করে সেহরি পর্যন্ত পানাহারে যেমন বাধা নেই, তেমনি গানবাজনা করলেও সমস্যা নেই। রাতের ঢাকা নিয়ে এই কলামে তেমন কিছু লেখা হয় না। ভেবেছিলাম একদিন সেহরির সময়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে পড়ব, শুনেছি ঢাকার কয়েকটি রেস্তরাঁয় সে সময় সেহরি খাওয়ার জন্য মানুষের ভিড় লেগে যায়। নিজ চোখে দেখে লেখার ইচ্ছে ছিল। হলো না। তবে ঘরে বসে টিভি দেখা বা রেডিও শোনার সুযোগ আছে বিনোদন সন্ধানী মানুষের। একটি বিষয় আমার জানা ছিল না, কবুল করে নিচ্ছি আগেভাগেই। আমরা জানি যে রেডিও অনুষ্ঠান হচ্ছে শুধুই শোনার। কালে কালে তা যে দেখার বিষয়ও হয়ে উঠেছে ফেসবুকের লাইভ সম্প্রচারের কারণে, সেটি নিজ চোখে প্রথম দেখার সুযোগ হলো সেদিন। একটি এফএম রেডিওতে দু’ঘণ্টাব্যাপী শো ছিল ভোকালিস্ট-গীটারিস্ট সাব্বির নাসির ও তার দলের। সেই অনুষ্ঠানের বেশ কিছুটা সময় ফেসবুক লাইভ প্রচার হলো ওই রেডিও স্টেশনের ফেসবুক পেজে। কালে কালে রেডিও অনুষ্ঠানও টেলিভিশনের মতো দেখা যাচ্ছে। মন্দ নয় ব্যাপারটা। নতুন ব্যান্ডের সদস্যদের কণ্ঠে নতুন-পুরনো মিলিয়ে বাংলা ও ইংরেজী গান শোনা, গানের ফাঁকে আলাপচারিতা, সব মিলিয়ে উপভোগ করার মতোই অনুষ্ঠান। সংগীতশিল্পী ও বাদকদের কস্টিউম, ভঙ্গিমা- সব কিছুই মনে হলো টিভি অনুষ্ঠানের জন্যই প্রস্তুত। ‘মানবতার দেয়াল’ এমন একটি প্রচারণামূলক দেয়ালের দেখা পাওয়া যাচ্ছে ঢাকার কয়েকটি জায়গায়। আমার নজরে পড়েছে বনানী-কাকলীর মোড়ের কাছে, নতুন তৈরি বেশ বড়সড় যাত্রী ছাউনিটির পাশে এই মানবতার দেয়াল। আর কিছুই না, ডিজিটাল প্রিন্ট করা একটি বড় পোস্টার। তার সঙ্গে বেশ কিছু আংটা গেঁথে দেয়া হয়েছে দেয়াল বা প্রাচীরের গায়ে। সেইসব আংটায় ঝুলছে নারী-শিশু-পুরুষদের পোশাক। ওপরে লেখা রয়েছে ‘মানবতার দেয়াল- আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসটি নিয়ে যান।’ দুই পাশে নিচের দিকে দুই ব্যক্তির পরিচিতি ও ফোন নম্বর দেয়া আছে চেহারার ছবিসহ। তার মানে ওই দুই ব্যক্তি হলেন উদ্যোক্তা। ভাল কথা। যিনি বা যারা বস্ত্র সঙ্কটের শিকার, সোজা কথায় পরনের পোশাকের অভাব আছে, তিনি বা তারা নিজের পছন্দমতো এক বা একাধিক পোশাক নিয়ে যেতে পারবেন এখান থেকে। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ঝুলতেই থাকে সেসব পোশাক দিনভর রাতভর। বিত্তহীন দুস্থ মানুষের পোশাকের সঙ্কট নিশ্চয়ই রয়েছে, কিন্তু এখানে দুটো প্রশ্ন। এক, তার পক্ষে কিভাবে জানা সম্ভব যে এই ‘মানবতার দেয়াল’ থেকে সে তার দরকারি পোশাকখানা নির্বিঘ্নে নিয়ে যেতে পারবে? দুই, বাংলাদেশ যেসব কারণে বিশ্বে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে তার মধ্যে তৈরি পোশাকশিল্প অন্যতম। এখন শস্তায় গরিব মানুষ পোশাক কিনতে পারে সহজেই ফুটপাথ থেকে। যাকাত এবং দান-অনুদান থেকেও পোশাক, এমনকি শীতের পোশাক পাওয়াও সহজ। তাই পোশাক বিতরণের জন্য এধরনের উদ্যোগ কতখানি বাস্তবসম্মত? যারা এর উদ্যোক্তা তাদের মধ্যে আত্মপ্রচারের লোভটাও বড় করেই দেখা যাচ্ছে। যদি গরিব-দুখী মানুষের জন্য সত্যি সত্যি অর্থবহ কোনো উপকার কেউ করতে চায় তাহলে সহজ দুটি পন্থা রয়েছে। এক, সবচেয়ে বড় মৌলিক মানবিক প্রয়োজন অর্থাৎ খাদ্য যোগান দেয়া। শুধুমাত্র খিচুড়ি রান্না করেই ক্ষুধার্ত দুস্থ মানুষের উপকার করা সম্ভব। দ্বিতীয়ত, বড় বড় সরকারি হাসপাতালের কাছাকাছি ওষুধের চালু দোকানের মালিককে বুঝিয়ে তার মাধ্যমেই অতি দরকারি ওষুধ কেনার টাকা যোগাতে ব্যর্থ রোগীর স্বজনকে প্রেসক্রিপশন দেখে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া। সেজন্যে দেয়ালে প্রচারণা চালানোর দরকার পড়বে না। দুদিনেই লোকেমুখে ছড়িয়ে পড়বে এই মহান উদ্যোগের কথা। ২৬ মে ২০১৯ [email protected]
×