ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর বাজার

ব্রয়লার মুরগি ও মাছের দাম বেড়েছে, অন্য পণ্য স্থিতিশীল

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ২ মার্চ ২০১৯

  ব্রয়লার মুরগি ও মাছের দাম বেড়েছে, অন্য পণ্য স্থিতিশীল

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে ব্রয়লার মুরগি ও হাইব্রিড মাছের দাম চড়া। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। তবে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, আটা ও পেঁয়াজসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। দু’একটির দাম বাড়লেও বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, যাত্রাবাড়ী কাঁচা বাজার ও ফকিরাপুল বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ঢাকার বাজারের এক মাসের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই সময়ে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্রয়রার মুরগির দাম। প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ২৫-৩০ টাকা। স্বল্প আয়ের মানুষের আমিষের প্রধান উৎস মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েছে। মুরগির পাশাপাশি গত এক মাসে বেড়েছে মাছের দাম। হাইব্রিড বা চাষের দেশী জাতীয় চিংড়ি পুঁটি ও কার্পজাতীয় মাছসহ বেড়েছে ইলিশ মাছের দাম। যদিও এই সময়ে গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়েনি। প্রতিকেজি গরু ৪৫০-৫০০ এবং জাত ও মানভেদে ৭৫০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি খাসির মাংস। পুরান ঢাকার কাপ্তান বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনছিলেন জোরপুকুর এলাকার বাসিন্দা রশিদুন নবী বাবু। তিনি আক্ষেপ করে জনকণ্ঠকে বলেন, সাধারণ মানুষের আমিষের প্রধান উৎস এই ব্রয়লার মুরগি। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে দাম না কমে বাড়ছেই। যেন এটা দেখার কেউ নেই। তিনি বলেন, সবাই এখন ব্রয়লার মুরগি খায়। কারণ গরু ও খাসির মাংসের দাম বেশি। এছাড়া অনেক সামর্থ্যবান ব্যক্তিও অতিরিক্ত চর্বি থাকায় গরু খাসির মাংস খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু মুরগিতে এ রকম তেমন কোন সমস্যা নেই। তাই সবার জন্য সহজলভ্য মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা রয়েছে। দ্রুত ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমানো উচিত। ওই বাজারের মুরগি বিক্রেতা হাবিব জানান, গত কয়েক মাস ধরে সরবরাহ কিছুটা কমেছে। কিন্তু বেড়েছে চাহিদা। বিশেষ করে উৎসব পার্বণ থাকায় এই সময়ের মুরগির চাহিদা বাড়ে। তিনি জানান, ব্রয়লার মুরগিসহ পাকিস্তানী লেয়ার ও ককের দাম বাড়তি। মাঝারি সাইজের পাকিস্তানী মুরগির জোরা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকায়। এছাড়া দেশী মুরগি জোড়া ৮০০-১০০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এদিকে, মুরগির পাশাপাশি চড়া মাছের বাজার। প্রায় সব ধরনের মাছ এখন বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। হাইব্রিড জাতীয় সরুপুঁটি, কৈ, পাবদা, শিং এবং রুই কাতলা জাতীয় মাছও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি হাইব্রিড সরুপুঁটি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা। মাঝারি সাইজের হাইব্রিড পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি রুই ও কাতলা মাছ মানভেদে ৩৫০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিজোড়া মাঝারি সাইজের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৫০০ টাকায়। এদিকে, শীতকালীন সবজির সরবরাহ কমে যাওয়া এবং শীতের প্রকোপ কমে যাওয়ার কারণে বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির চাহিদা বাড়ছে। মানভেদে প্রতিহালি কাঁচকলা ২৫-৩০ এবং প্রতিকেজি পেঁপে জাত ও মানভেদে ২০-৩৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজি বিক্রি হচ্ছে ২০-৪০ টাকার মধ্যে। জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২০-২৫, আদা ৯০-১২০ এবং রসুন ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে, মানভেদে আটা ২৭ থেকে ৩০ টাকা কেজি, সয়াবিন তেল লিটার ৮০ থেকে ৮৪ টাকা, মসুর ডাল কেজি ৬০ থেকে ১১০ টাকা, মুগ ডাল ৯০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহেও ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতিহালি ৩৩ থেকে ৩৫ টাকায়, চিনি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো সরু চাল ৫৪-৬৪, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা ৪৬-৫৫ এবং মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চাল ৩৮-৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
×