ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় চলবে না লেগুনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ঢাকায় চলবে না লেগুনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাস্তায় যানবাহনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে ঢাকায় আর কোন লেগুনা চলতে দেয়া হবে না। হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলের জ্বালানি দেয়া হবে না। ১২১টি বাসস্ট্যান্ডে বাস থামাতে হবে। অন্যত্র থামানো মাত্র জরিমানা। লাইসেন্সবিহীন রিক্সা চলতে দেয়া হবে না। মঙ্গলবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে মাসব্যাপী ট্রাফিক সচেতনতা কর্মসূচী ঘোষণার সময় এমনটাই জানালেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি আরও জানান, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো, যানজট নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতা তৈরির জন্য ট্রাফিক মাস ঘোষণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পুলিশের এ উদ্যোগে সহায়তা করবে রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সেলিব্রিটিরা। এই অভিযানে সুধী সমাজকে সম্পৃক্ত করা হবে। তিনি বলেন, সড়কে অব্যবস্থাপনার অন্যতম কারণ সড়কের দুরবস্থা। এ পরিস্থিতি একদিনে সৃষ্টি হয়নি। ঢাকায় ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি গাড়ি চলছে, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং হচ্ছে। এছাড়া যানজটের জন্য ইউটিলিটি ও এমআরটির মতো উন্নয়ন কাজে সড়কে খোঁড়াখুঁড়িও এর জন্য দায়ী। কমিশনার বলেন, তারপরও রাজধানীর রাস্তায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য ঢাকায় আর কোন লেগুনা (হিউম্যান হলার) চলতে দেয়া হবে না। কারণ এসব যানবাহন সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণও লেগুনা। লেগুনার কোন রুট পারমিট নেই। এতদিন অবৈধভাবে চলেছে। আর চলতে দেয়া হবে না। তবে শহরের উপকণ্ঠের মানুষের কথা মানবিকভাবে বিবেচনা করে ওসব এলাকায় লেগুনা চলতে পারবে। সেখানে পুলিশ কোন বাধা দেবে না। তিনি বলেন, ১২১টি বাসস্ট্যান্ডে বাস থামতে হবে। অন্যত্র থামামাত্রই জরিমানাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাসস্ট্যান্ডগুলোর জায়গা ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশ মিলে জরিপ করে নির্ধারণ করা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ড ছাড়া বাসের দরজা বন্ধ রাখতে হবে। স্টপেজ ছাড়া কোথাও থেকে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে না। সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত বাস স্টপেজগুলোতে সাইনবোর্ড বসাবে। সাইনবোর্ডের কাজ প্রায় শেষ। এ সপ্তাহেই এগুলো নির্ধারিত স্থানে বসানো হবে। কমিশনার বলেন, প্রত্যেক মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীকে হেলমেট পরতে হবে। হেলমেট ছাড়া কেউ কোন পেট্রোল পাম্পে জ্বালানি নিতে গেলে তাদের জ্বালানি দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে রাজধানীর পেট্রোল পাম্পগুলো এই কার্যক্রম চালু করেছে। তাদের এ বিষয়ে পুলিশ নির্দেশনা দিয়েছে। মোটরসাইকেলে দু’জনের বেশি চড়তে পারবে না। কোন ফুটপাথে মোটরসাইকেল দেখা গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। লাইসেন্সবিহীন কোন রিক্সা চলতে দেয়া হবে না। এসব লাইসেন্স দেবে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন। যেসব রিক্সার লাইসেন্স আছে, কেবল সেসব রিক্সা চলতে পারবে। তবে রিক্সাগুলোকে অবশ্যই নির্ধারিত রাস্তায় চলতে হবে। এছাড়া রাজধানীর জাহাঙ্গীর গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত মডেল ট্রাফিক সিস্টেম চালু করা হবে। এই পথে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালের মাধ্যমে গাড়ি চলাচল করবে। পর্যায়ক্রমে রাজধানীর অন্যান্য সড়কেও এই পদ্ধতি চালু করা হবে বলে জানান কমিশনার। কমিশনার আরও জানান, ফুটপাথের দোকানগুলো উচ্ছেদ করার জন্য রাজউক ও ঢাকার দুই সিটি করর্পোরেশনকে বলা হয়েছে। ফুটপাথের দোকান থাকার কারণে পথচারীরা হাঁটতে পারেন না। এছাড়া ঢাকার বড় বড় স্কুলে ক্লাস শুরু ও ছুটির সময় স্কুলের সামনে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেয়া হবে। তারা সেখানকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করবেন। এছাড়া স্কুলের সিনিয়ররা ছোটদের রাস্তা পারাপারে সহায়তা করবে। ডিএমপি কমিশনার বলেন, এর আগে গত ৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী দশ দিন বিশেষ ট্রাফিক সপ্তাহ পালিত হয়েছে। এবার যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, স্টপেজ ছাড়া যত্রতত্র বাস থামানো, ফুটপাথে মোটরসাইকেল ওঠানো, লাইসেন্স ও নিবন্ধন ব্যতীত গাড়ি চালানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী উভয়ের হেলমেট পরা, উল্টোপথে গাড়ি চালানো, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলাসহ এ ধরনের অপরাধে কেউ জড়িত থাকলে সে পার পাবে না। এমনকি যানবাহনের চালক ও মালিকরাও পার পাবে না।
×