ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ে বৈঠক চলতি সপ্তাহে

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ে বৈঠক চলতি সপ্তাহে

এম শাহজাহান ॥ বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাসহ দশটি অমীমাংসিত ইস্যুর দ্রুত সমাধানে চলতি সপ্তাহে ঢাকায় শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক। সচিব পর্যায়ের এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যেসব বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে তা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। প্রতিবেশী এই দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৫ বিলিয়ন ডলার বা ৪০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে ভারতে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি কিছুটা বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে আমদানির পরিমাণও। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, সচিব পর্যায়ের এবারের বৈঠকে বাংলাদেশের বিএসটিআই কর্তৃক প্রদত্ত টেস্ট সার্টিফিকেটের ভারত কর্তৃক স্বীকৃতি প্রদান, ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে অস্থায়ী বাধা দূর করা, বর্ডার হাট বাড়ানো, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ওপর থেকে ভারতের আরোপিত সিভিডি প্রত্যাহার, পাটের ব্যাগ ভারতে রফতানির সমস্যা দূর করা, স্থল বন্দরগুলোর উন্নয়ন, খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্তে ফেনী নদীতে সেতুনির্মাণ, বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য চুক্তির অগ্রগতি, ভারত কর্তৃক স্পর্শকাতর হিসেবে বাংলাদেশী পণ্যের তালিকা প্রত্যাহার, ভারত থেকে কমলা জাতীয় ফলের আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার, ভারতীয় দুগ্ধজাতীয় পণ্যের বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত প্রবেশ ও নতুন আন্তর্জাতিক পাট গ্রুপ প্রতিষ্ঠা বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এর বাইরেও সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এবার ভারতের বিনিয়োগ এদেশে বাড়ানো, বিদ্যুত আমদানি বৃদ্ধি, বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল) চুক্তি কার্যকরসহ অমীমাংসিত বিষয়গুলোর ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব শুভাশিষ বসু জনকণ্ঠকে বলেন, বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসসহ বিভিন্ন অমীমাংসিত বিষয়গুলোর ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হবে এবারের বৈঠকে। তিনি বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হলে বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে যেসব বিষয়ে চুক্তি রয়েছে তা বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হবে। ইতোমধ্যে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি করা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্য চুক্তি পুরোপুরি কার্যকর করা হবে। জানা গেছে, সীমান্তে বর্ডার হাট কার্যকরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত। বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সামনে রেখে দু’দেশের পক্ষ থেকেই এ বিষয়ে কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সীমান্ত এলাকায় বৈধবাণিজ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে ২২টি বর্ডার হাট চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে দু’দেশের। হাটে বেচাকেনার জন্য পণ্য সংখ্যা ৪৭ থেকে বাড়িয়ে ৬০টি করা হতে পারে। বর্তমান বর্ডার হাটে কৃষি, হস্তশিল্পজাত ও খাদ্যসামগ্রী চানাচুর-বিস্কুটের মতো পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ভবিষ্যতে ভারি শিল্পে উৎপাদিত হয় এমনপণ্য বিক্রির চিন্তা-ভাবনা চলছে। এছাড়া বর্ডার হাটে বেচাকেনার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত রয়েছে তা শিথিল করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বর্তমান কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, ফেনী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে চারটি বর্ডার হাট চালু রয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে আরও ৬টি বর্ডার হাট চালু করার কাজ এগিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত। এসব হাট হলো মৌলবীবাজারের জুড়ীর পশ্চিম বটুলী ও উত্তর ত্রিপুরার পালবস্তি, কমলগঞ্জের কুরমাঘাট ও কামালপুরের ধলাই, বাংলাদেশ-মেঘালয় সীমান্তের সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ ও মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পাহাড়ের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সায়দাবাদ ও মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম খাসি পাহাড়সংলগ্ন নালিকাটা, মেঘালয়ের ইস্ট খাসি হিলসের রিংকু ও সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারের বাগান বাড়ি, ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার ভুঁইয়াপাড়া ও মেঘালয়ের দক্ষিণ গারো পাহাড়ের শিববাড়ি।
×