ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাউফলে মাতৃত্বকালীন ভাতার ভাগ দিতে হয় ৬ জনকে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১২ অক্টোবর ২০১৭

বাউফলে মাতৃত্বকালীন ভাতার ভাগ দিতে হয় ৬ জনকে

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১১ অক্টোবর ॥ বাউফলে মাতৃত্বকালীন ভাতায় ভাগ বসানো হচ্ছে। ইউপি সদস্য থেকে ব্যাংক পর্যন্ত ৬ জনকে এ টাকার ভাগ দিতে হয়। আর না দিলে ভাতাভোগীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। জানা গেছে, মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের অধীনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাউফল উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে মোট ১ হাজার ১শ’ ৮৫ জন অসহায় দুস্থ গর্ভবতী নারীকে মাসিক ৫শ’ টাকা করে ভাতা দিচ্ছে সরকার। প্রতি ৬ মাস পর এই ভাতার টাকা ছাড় করা হয়। কিন্তু এই ভাতাভোগীদের কাছ থেকে নানা অজুহাত দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য, ইউপি সচিব, চৌকিদার, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিস সহকারী। এ ছাড়াও এই ভাতার ভাগ দিতে হয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকেও। অভিযোগ রয়েছে, কেশবপুর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য এলিনা আক্তার ওই ইউপির ভাতাভোগী সদস্যদের কাছ থেকে তালিকায় নাম দেয়ার জন্য নিয়েছেন জন প্রতি একহাজার টাকা। এরপর ভাতা পাওয়ার পর প্রত্যেক ভাতাভোগীর কাছ থেকে নিয়েছেন আরও একহাজার টাকা। একই অভিযোগ রয়েছে ওই ইউপির ১,২ ও ৩ সংরক্ষিত মহিলা সদস্য লিপি আক্তারের বিরুদ্ধে। কিন্তু তারা দুজনই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে লিপি যাতায়াত ভাড়া বাবাদ দুই/একশ’ টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। মদনপুরা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আলতাফ হোসেন, সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মহিলা ইউপি সদস্য রিনা বেগমের বিরুদ্ধেও রয়েছে একই অভিযোগ। তারাও ভাতাভোগীদের কাছ থেকে এ্যাকাউন্ট খোলার কথা বলে জনপ্রতি ৫শ’ টাকা নিয়েছেন। এরপর ভাতা পাওয়ার পর প্রত্যেক ভাতাভোগীর কাছ থেকে নিয়েছেন এক হাজার টাকা করে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এনামুল হক মামুন ওরফে ফজলু স্লিপ দিয়ে ওই ইউনিয়নের প্রত্যেক ভাতাভোগীর কাছ থেকে নিয়েছেন দেড়শ’ টাকা করে। তবে ওই ইউপি সচিব এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা নেইনি। টাকা নিয়েছে রিনা আর চৌকিদার। মদনপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম মস্তফা বলেন, কিছু অনিয়ম হচ্ছে আমিও জানি। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অফিস সহকারী কামরুল অফিস খরচের জন্য জনপ্রতি ১শ’ করে টাকা নেয় এমনটা আমি শুনেছি। অভিযোগ রয়েছে সোনালী ব্যাংক বাউফল শাখার কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি চালান ফরম দেয়ার কথা বলে প্রত্যেক ভাতাভোগীর কাছ থেকে আদায় করছেন ২০ টাকা করে। আর তার সঙ্গে জোর করে দুইটি লটারির টিকেটও ধরিয়ে দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মনিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বদলি হয়ে গেছেন। তার অফিস সহকারী কামরুল ইসলাম ভাতাভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, সমাজসেবা অফিসার বদলি হয়ে গেছেন। নতুন কর্মকর্তা যোগদান করার পর তাকে নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
×