ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাউফলে বিপাকে দরিদ্র মানুষ

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

বাউফলে বিপাকে দরিদ্র মানুষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল ॥ বাউফলে চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ শ্রেণীর মানুষ। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ১২ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত । দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাউফলসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে আশ্বিনের আকাল চলছে। বছরের এই সময় ফসলের মাঠে একমাত্র আমন ধানের বীজ বপন করা হয়। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে তেমন কোন কাজ থাকে না। তাই সাধারণ পরিবারের সদস্যরা খুব কষ্ট করে দিন অতিবাহিত করেন। অনেকে ধার কর্জ করে আবার কেউ মহাজনের কাছ থেকে সুদের উপর টাকা এনে সংসারের ভরণ-পোষণ মেটান। আমন মৌসুমে ঘরে ফসল তুলে আবার সুদাসলসহ তারা ঋণের টাকা পরিশোধ করেন। প্রতি বছর এই সময়ে এলাকায় ধানের উৎপাদন না থাকায় বাজারে চালের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ফলে যশোরের নওয়াপাড়া, বেনাপোল ও খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চাল এনে বাজারের চাহিদা মেটানো হয়। স্থানীয় কয়েকজন আড়তদার জানান, ভারতের সঙ্গে স্থল পথের আমদানি বন্ধ থাকায় চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও দেশের রাইস মিলগুলোতে ধানের আমদানি নেই। ফলে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্যবধানে বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ১২ থেকে ১৬ টাকা। এক সপ্তাহ আগে কালাইয়া বাজারে স্বর্ণা ব্রান্ডের চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ২২ টাকা। বর্তমানে খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৪ টাকা দামে। দাম বেড়েছে ১২ টাকা। অপর দিকে হাইব্রিড নামের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০ টাকা। পূর্বের দাম ছিল ২০ টাকা। মিনিকেট ২৮ (জোড়া কবুতর) বর্তমানে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়। আর ৫০ কেজির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮ শ’ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই চালের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। অর্থাৎ ৫০ কেজির বস্তা চালের দাম ছিল ২ হাজার টাকা। কালাইয়া বন্দরের মিতালী এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুদ রানা বলেন, প্রতি সপ্তাহে শুধু কালাইয়া বন্দরে ২ শ’ ৮০ থেকে ৩ শ’মেট্রিক টন পর্যন্ত চালের চাহিদা রয়েছে। তিনি বলেন, শুক্রবার প্রতি কেজি স্বর্ণা চাল নওয়াপাড়ায় পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা। সেখান থেকে কালাইয়া বাজারে নিয়ে আসতে প্রতি বস্তা (৫০কেজি) চালের পরিবহন খরচ আছে ৮০ টাকা। এ সপ্তাহে চালের দাম আরও বেড়ে যাবে বলে তিনি জানান। এদিকে স্থানীয় খাদ্য গুদামে চালের মজুদ না থাকায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে বাউফলের কালাইয়া ও বগা খাদ্য গুদামে যথাক্রমে ১০ মেট্রিক টন ২৬ মেট্রিক টন আতপ চাল মজুদ রয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত চাল আমদানি করে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রির কর্মসূচী চালু করা না হলে দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ মহাবিপাকে পড়ে যাবেন। বাউফলের নবগঠিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য আফরোজা বানু বলেন, তার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষই জেলে ও কৃষক। বর্তমানে অনেকেরই হাতে কাজ নেই। ধারদেনা করে চলছে প্রত্যেকের সংসার।
×