ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমিরাতে কর্মী নিয়োগে আগামী মাসে যৌথ কমিটির বৈঠক

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৩০ জুন ২০১৭

আমিরাতে কর্মী নিয়োগে আগামী মাসে যৌথ কমিটির বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আগামী মাসেই দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হবে ঢাকায়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের পর দেশটিতে শ্রমবাজার খুলে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশটিতে কর্মরত ৭ লাখ বাংলাদেশী কর্মীর আকামা (চাকরি) পরিবর্তনের বিষয়টি অনুমোদন করেছে কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে বাংলাদেশী কর্মীরা তাদের ইচ্ছে মতো চাকরি পরিবর্তন করতে পারবেন। আকামা পরিবর্তন একটি বড় কাজ হয়েছে বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি সম্প্রতি বলেছেন, দেশটির মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রী সাকর গোবাশ সাঈদ গোবাশের সঙ্গে তার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে অধিক সংখ্যক কর্মী নেয়া ও কর্মীদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দেশটির মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে সরকারের কাছে বাংলাদেশী কর্মীর চাহিদাপত্র পাঠানো হবে। এই চাহিদার অনুকূলে কত সংখ্যক কর্মী তারা নেবে সে বিষয়টি ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে ঠিক হবে। আগামী মাসেই উচ্চপর্যায়ের আরব আমিরাতের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসবেন। তারা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে ঠিক করবেন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া কি হবে। তাছাড়া মানবসম্পদ মন্ত্রী গোবাশ আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশী কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হবে। দুই দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক, মুসলিম প্রধান দেশ, একই ধর্মীয় মূল্যবোধের অনুভূতি ও পারস্পরিক অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা বজায় রাখার জন্য পরস্পরের প্রতি একটা ঘনিষ্টতা আগে থেকেই বিরাজমান রয়েছে। বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত অভিবাসন ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে একযোগে কাজও করে যাচ্ছে। উভয় দেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামসমূহে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে সুষ্ঠু ও নিরাপদ অভিবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের বিভিন্ন ইস্যুতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছে। এতে কর্মীদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষা হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিররাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রণালয় বিদেশী কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জারিকৃত সর্বশেষ ডিক্রিসমূহের উদ্যোগকে প্রশংসা করেন। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও অধিক সংখ্যক দক্ষ কর্মী নেয়ার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরকে মন্ত্রণালয় সবচেয়ে ইতিবাচক হিসেবে বলা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয় সেই অপেক্ষা করতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম শামসুন নাহার সম্প্রতি বলেন, ২০১৬ সালে অন্য দেশগুলোর কর্মীদের জন্য আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হয়। সেই সময় বাংলাদেশের কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এবারের সফরের সময় দেশটির মানব সম্পদমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে বাংলাদেশী কর্মীদের আকামা পরিবর্তনের সুযোগ দেবে তারা। এতে বাংলাদেশী দক্ষ কর্মীরা উচ্চ বেতনে চাকরি পাবেন। আগে বেশি কর্মী কাজ করে যে পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন। আগে দেশটিতে বাংলাদেশী প্রায় ২৩ লাখ কর্মী কাজ করতেন। এখন সেখানে মাত্র ৭ লাখ কর্মী কাজ করছেন। বাকি অবৈধ কর্মীদের দেশে থেকে বের করে দিয়েছে। ২০১২ সালের ১২ সেপ্টম্বর থেকে দেশটি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বন্ধ রেখেছিল। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশটি সফর করার পর আবার কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী অল্প দিনের দেশটি সফরে যেতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর শ্রমবাজারটি আরও ইতিবাচক হবে। উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৩ লাখ অধিক কর্মীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজারের বেশি নারী কর্মী দেশটিতে কর্মরত রয়েছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার উন্মক্তকরণে জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে।
×