ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরাশক্তিদের হতাশা, সোয়ানসির ইতিহাস

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৩ জানুয়ারি ২০১৭

পরাশক্তিদের হতাশা, সোয়ানসির ইতিহাস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইলিশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে শনিবার রাত ছিল ঘটনাবহুল। এ রাতে সব পরাশক্তিরাই হোঁচট খেয়েছে, ইতিহাস গড়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানির দিকে থাকা সোয়ানসি সিটি। এ্যানফিল্ডে স্বাগতিক লিভারপুলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়া জয় পেয়েছে সোয়ানসি। নিজেদের ইতিহাসে এই প্রথম এ্যানফিল্ডে জয় পেয়েছে দলটি। স্টোক সিটির মাঠে হারতেই বসেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। প্রথমার্ধে জুয়ান মাতার আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচের শেষ মুহূর্তে (৯৪ মিনিট) অধিনায়ক ওয়েন রুনি হার এড়ানো গোলটি (১-১) করেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও নাটকীয়তায় ভরপুর ম্যাচে ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে দুই গোলে এগিয়ে যেয়েও টটেনহ্যাম হটস্পারের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। রবিবার রাতের ম্যাচের আগে ২১ খেলায় ৫২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে চেলসি। ২২টি করে ম্যাচ শেষে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে টটেনহ্যাম। ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে লিভারপুল। এক ম্যাচ কম খেলা আর্সেনাল ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে। গত রাতে জয় পেলে আবারও দুই নম্বরে উঠে আসবে গানার্সরা। ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানসিটি পাঁচে ও ৪১ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানইউ ছয় নম্বরে। এ্যানফিল্ডে শুধু সোয়ানসিই ইতিহাস গড়েনি, অপরাজেয় যাত্রা থেমেছে স্বাগতিক লিভারপুলেরও। ইপিএলে টানা দুই ড্রয়ের পর এবার হেরেছে দ্য রেডসরা। এই মাঠে লীগে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত ছিল লিভারপুল। আর এ্যানফিল্ডে নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে প্রথম জয় পেয়েছে সোয়ানসি। ফার্নান্ডো লরেন্টের জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ব্রাজিলিয়ান তারকা রবার্টো ফিরমিনোর দুই গোলে সমতায় ফেরে লিভারপুল। কিন্তু জিলফি সিগার্ডসনের গোলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের ম্যাচে প্রথমার্ধে গোল হয়নি। বিরতির পর চার মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে সোয়ানসিকে এগিয়ে নেন লরেন্টে। ৪৮ মিনিটে কর্নার থেকে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার ফেডেরিকো ফার্নান্ডেজের হেডে বল জটলার মধ্যে পেয়ে টোকা দিয়ে জালে জড়ান লরেন্টে। চার মিনিট পর বাঁদিক থেকে ক্যারোলের দারুণ ক্রসে জোরালো হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ড। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি লিভারপুল। ৫৫ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে জেমস মিলনারের ক্রসে হেডে ব্যবধান কমান ফিরমিনো। ৬৯ মিনিটে ডাচ ফরোয়ার্ড জর্জিনিও ভিনালডামের ক্রস বুক দিয়ে নামিয়ে বাঁ পায়ের দৃষ্টিনন্দন শটে সমতা ফেরান ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। কিন্তু ৭৪ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় সোয়ানসি। পাল্টা আক্রমণে এস্তোনিয়ার ডিফেন্ডার রাগনার ক্লাভান বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে কোনাকুনি শটে গোল করেন আইসল্যান্ডের মিডফিল্ডার সিগার্ডসন। টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও জিততে পারেনি ম্যানচেস্টার সিটি। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে মূল্যবান ১ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মাওরিসিও পচেট্টিনোর দল। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে দুই গোল করে সিটি। ৪৯ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়ানো বল বিপদমুক্ত করতে অনেকখানি এগিয়ে এসেছিলেন গোলরক্ষক। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হলে সেই সুযোগে বল জালে জড়ান লেরোয় সানে। পাঁচ মিনিট পর আরও বড় ভুল করে বসেন অতিথি গোলরক্ষক হুগো লরিস। ডানদিক থেকে রাহিম স্টার্লিংয়ের ক্রস ধরতে ব্যর্থ হন তিনি। ফিরতি বলে গোল করেন ব্রুইন। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার চার মিনিট পরেই ব্যবধান কমায় অতিথিরা। ডানদিক থেকে কাইল ওয়াকারের গোলমুখে বাড়ানো ক্রসে হেড করে গোল করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার ডেলে আলি। ৭৭ মিনিটে হ্যারি কেইনের বাড়ানো বল থেকে সমতাসূচক গোল করেন দক্ষিণ কোরিয়ান মিডফিল্ডার সন হিউং-মিন। ৮২ মিনিটে স্টার্লিংয়ের বদলি হিসেবে গাব্রিয়েল জেসুসকে নামান সিটি কোচ পেপ গার্ডিওলা। মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যে বল জালে পাঠিয়ে উল্লাসে মাতেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। ফলে সিটির জার্সিতে সম্ভাবনায় তরুণের অভিষেকটা স্মরণীয় হয়নি। গোলটি বাতিল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন গার্ডিওলা। স্টোক সিটির মাঠে হারতে বসেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে রুনির ইতিহাস গড়া গোলে মূল্যবান এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরেছে জোশে মরিনহোর দল। এই নিয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকলো ইউনাইটেড। শেষ মুহূর্তে দলের হার এড়ানো গোলটি করে স্যার ববি চার্লটনকে পেছনে ফেলে ম্যানইউর ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গেছেন রুনি। ক্লাবের হয়ে তার মোট গোল হলো ২৫০টি। জাতীয় দলেরও সর্বোচ্চ গোলদাতা এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড।
×