ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বোলিং-ফিল্ডিং নিয়ে হতাশ মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬

বোলিং-ফিল্ডিং নিয়ে হতাশ মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ম্যাচের ফলটা আরও ভাল হতে পারত। এমনকি আসতে পারত জয়। কিন্তু উইকেটে সেট হয়ে যাওয়ার পর সাকিব আল হাসান ৫৯ রানে সাজঘরে ফিরলেন। এরও আগে বাংলাদেশের বোলাররা নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং যেমন করেছেন, তেমনি ফিল্ডাররা বেশ কয়েকটা ক্যাচ ছেড়েছেন। এসবকেই ক্রাইস্টচার্চে সোমবার প্রথম ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৭৭ রানের বড় হারে মূল কারণ হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি মনে করেন, দীর্ঘদিন পর একইসঙ্গে ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংÑ এ তিন বিভাগেই বাজে নৈপুণ্য দেখিয়েছে দল। সে কারণেই এত বড় পরাজয় মানতে হয়েছে। তবে ইতিবাচক অনেক কিছুই ছিল এ ম্যাচে। সেটিকে আগামী ম্যাচগুলোর জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবেও দেখছেন মাশরাফি। টস জিতে নিউজিল্যান্ড প্রথম ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৫৮ রানেই হারিয়ে ফেলেছিল ৪ উইকেট। কিন্তু এরপরই পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বাজে এই পরিস্থিতির পেছনে ছিল বোলারদের নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং আর ফিল্ডারদের বাজে ফিল্ডিং। কারণ পঞ্চম উইকেটে টম লাথাম ও কলিন মুনরো ১৫৮ রান তুলেছেন মাত্র ১০৭ বল খেলে। তখনই বিশাল এক সংগ্রহ পেয়ে গেছে কিউইরা। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের ফিল্ডিং অনেকটাই ছিল জরাগ্রস্ত। অনেক ২/৩ নিয়েছে ওরা, যেগুলো আমরা হয়ত আটকাতে পারতাম। ২০ রানের মতো ওখানেই বেশি হয়েছে। বোলিংয়ে শর্ট বল বেশি করেছি। ২৮০-৩০০ রান এখানে হবেই। বোলিং-ফিল্ডিং ভাল হলে আমরা ৪০ রান কম দিতে পারতাম। সেক্ষেত্রে শুরুতে দ্রুত উইকট হারানোর পরও আমাদের সুযোগ থাকত। বাড়তি ওই রানটাই আমাদের ভুগিয়েছে।’ শুরুতে মাশরাফি ও মুস্তাফিজুর রহমান ভালই বল করছিলেন। বোলাররা খানিকটা মুভমেন্টও পাচ্ছিলেন। খুব দ্রুত রান করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। সাকিবের বাঁহাতি স্পিনেও তেমন সুবিধা করতে পারছিল না কিউই ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু ক্রমেই বোলিং বাজে হতে থাকে আর চড়াও হয় প্রতিপক্ষ। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘এই কন্ডিশনে শর্ট বল অবশ্যই করতে হবে। তবে সেটা কার্যকরভাবে করতে হবে, নিউজিল্যান্ডের বোলাররা যেমন করেছে। ওদের শর্ট বলগুলো এসেছে আমাদের মাথা বরাবর। আমাদের শর্ট বল ছিল ওদের বুক উচ্চতায়, যেটা ওরা অনায়াসেই খেলতে পেরেছে। যদি ছোট ছোট জায়গা আমরা ঠিক করতাম, তাহলে আরেকটু ভাল হতো। যেটা বললাম, বড় হতাশার জায়গা ছিল ফিল্ডিংয়ে আমরা হতোদ্যম ছিলাম। ফিল্ডিংয়ে একটু ভাল করলে বোলাররাও হয়ত একটু অনুপ্রাণিত হতো।’ দলের ব্যাটিংটাও শুরুর দিকে তেমন ভাল হয়নি। ৩৪২ রানের বিশাল টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে তিন টপঅর্ডার ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কিছুই করতে পারেননি। ৮১ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল দল। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘এই রান তাড়া করতে হলে শুরুতে দ্রুত রান করতে হবে। উল্টো শুরুতে উইকেট পড়েছে।’ এরপরও সুযোগ শেষ হয়নি। মুশফিকুর রহীম ও সাকিব দারুণ ব্যাটিং করছিলেন। কিন্তু মুশফিকের ইনজুরি নিয়ে মাঠ ত্যাগ এবং সাকিব ৫৪ বলে ৫৯ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পরই ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘সাকিব শেষ পর্যন্ত থাকলে... উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য যতটা সহজ ছিল, অন্যরকম কিছু হতে পারত। ওই সময় সাব্বিরও আউট হয়ে গেছে। দুই বিগ হিটার আউট হয়ে যাওয়ায় কাজটা কঠিন হয়ে যায়।’ তরুণ মোসাদ্দেক হোসেন অবশ্য ৫০ রানের হার না মানা ঝড়ো ইনিংস খেলে ব্যবধান কমিয়েছেন। এ বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘মুশফিক ও সৈকত (মোসাদ্দেক) যখন ছিল, একপর্যায়ে ৮৪ বলে ১৪০ লাগত। টি২০ ম্যাচের মতো। তখন মুশফিকের চোট সমস্যা করল। না হলে হয়ত আমরা ৩০০-৩১০ পর্যন্ত গিয়ে তার পর কিছু করার চেষ্টা করতাম।’ আপাতদৃষ্টিতে এটিকে ভুলে যাওয়ার মতো একটি ম্যাচ মনে হলেও সামনের পথচলার জন্য অধিনায়ক খুঁজে পাচ্ছেন কিছু ইতিবাচক দিকও। পরের ম্যাচে এটিই হবে অনুপ্রেরণা।
×