ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রায়পুরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ধর্ষিতা ও তার পরিবার ॥ মামলা তুলে নিতে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি

প্রকাশিত: ০১:০৪, ২৫ জুন ২০১৬

রায়পুরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ধর্ষিতা ও তার পরিবার ॥ মামলা তুলে নিতে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি

সংবাদদাতা, রায়পুর, লক্ষ্মীপুর ॥ লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ধর্ষিত কিশোরী গৃহকর্মীর (১৪) পিতাকে মামলা তুলে নিতে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছে শাহাজালাল রাহুল (৩৫) নামে এক সাবেক যুবলীগ নেতা। ওই দিনমজুর পিতা রাহুল ও তার লোকদের হামলার ভয়ে গত সাত মাস ধরে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অভিযোগ পেয়ে শনিবার সকালে সরজমিনে ঘটনাস্থল উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নের চরকাছিয়া গ্রামের মিয়ারহাট বাজার এলাকায় গেলে ওই গৃকর্মীর পিতা, দাদি ও প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন। ধর্ষক যুবলীগ নেতা শাহাজালাল রাহুল ওই গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ বেপারীর ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক। মামলার এজাহার, ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানান, গত বছরের ৩০ নভেম্বর গৃহকর্মী কিশোরী (১৪)কে শাহাজালাল রাহুল তার ঢাকার শেরেবাংলা নগর তালতলা ২২নং পশ্চিম কাফরুল এলাকার ভাড়া বাসায় কাজ করতে নিয়ে যান। সেখানে রাহুল তার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে মেয়েটিকে প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষন করেন। এক পর্যায়ে মেয়েটি বাড়ীতে এসে তার অভিভাবকদের ঘটনাটি জানান। মেয়েটির অভিভাবক রাহুলের পরিবার ও এলাকার গনমান্যদের জানিয়ে বিচার না পেয়ে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর শেরেবাংলা নগর থানায় মেয়েটির বাবা বাদি হয়ে রাহুলকে আসামী করে একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ মেয়েটিকে ধর্ষনের ডাক্তারী পরীক্ষায় সত্যতা পেয়ে রাহুলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। এই মামলা তুলে নিতে রাহুল তার দলীয় নেতাকর্মীসহ স্বজনদের দিয়ে আপোষ মিমাংসার জন্য মেয়েটির পরিবারের ওপর একাধিকবার চাপ সৃস্টি করে। নিরুপায় হয়ে মেয়েটির বাবা হুমকী পেয়ে মেয়েকে নিয়ে ঢাকাতেই আত্মগোপন করে থাকেন। গত মঙ্গলবার মেয়েটির বাবা তার বৃদ্ধ মায়ের সাথে দেখা করতে গ্রামে আসেন। এখবর জানতে পেরে রাহুল তার অনুসারী আবুল হোসেন, বিপ্লব পাটোয়ারী, শাহা, বোরহান, মামুন ও নুরু বেপারীকে দিয়েবাড়ী থেকে ডেকে মিয়ার হাট বাজারে রাহুলের নিজের মাছ বিক্রির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। সেখানে এক পর্যায়ে তারা ধর্ষিতা কিশোরীর পিতাকে পিস্তল ঠেকিয়ে মামলা তুলে না নিলে হত্যার হুমকি দেয়। পরে তারা বিষয়টি মিমাংসার জন্য ধর্ষিতার পিতাকে মোটর সাইকেল যোগে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যান। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান রবিবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন জানিয়ে তাকে ছেড়ে দেন। এ ঘটনার পর থেকেই আতংকে ধর্ষিতার পিতা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অভিযুক্ত ধর্ষক শাহাজাল রাহল মোবাইল ফোনে জানান, আমি গ্রামের অপরাজনীতির শিকার। আমার প্রতিপক্ষ স্বড়যন্ত্র করে মেয়েটিকে দিয়ে মিথ্যা ধর্ষন মামলা করিয়ে আমাকে হয়রানী করছে। আমি পিস্তল দেখানোর অভিযোগ মিথ্যা। মিমাংসার জন্য মেয়েটির বাবাই উপজেলা চেয়ারম্যানকে মুরব্বি মেনেছে। এঘটনায় বক্তব্য জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান মাস্টার আলতাফ হোসেন হাওলাদারের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।
×