ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আতঙ্ক নয় চাই সচেতনতা

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ ভূমিকম্প

প্রকাশিত: ০৩:৫৯, ২৮ এপ্রিল ২০১৬

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ ভূমিকম্প

শফিক শামীম বাংলাদেশে মাঝে মধ্যেই ঘটে হরেক রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ঘটে ভূমিকম্প। প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর ব্যাপারে সচেতন না থাকার কারণে অকালে জীবনও দিচ্ছেন অনেকে। অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করে জীবন কাটাচ্ছেন। কিভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো মোকাবেলা করা যায় সে ব্যাপারে আজও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য জনসচেনতামূলক কাজ হচ্ছে না। সরকারী-বেসরকারীভাবে যতটুকু হচ্ছে তাও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অধরাই রয়ে যাচ্ছে দুর্যোগ মোকাবেলা করা সচেতনতা। বরং দিনে দিনে ধাবিত হচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দিকে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন ভাবে চাঁদে গিয়ে কিভাবে বসবাস করা যায় ঠিক সেই সময় আমরা স্যানিটারি ল্যাট্রিন কিভাবে করা যায় তার ওপর সচেতন হচ্ছি। দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন স্বপ্ন দেখেন কিভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা যায়; এক শ্রেণীর অসুস্থ রাজনীতিবিদ ঠিক তখনই উন্নয়নের চাকা পিছন থেকে টেনে ধরে। রাজধানীসহ সারাদেশে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে নগরায়ন। প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলো ধবংস করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠছে দালানকোঠা। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মানুষ বসবাস করছে রাজধানীতে। যে কারণে ৬ তলার অনুমতি নিয়ে ১২তলা বিল্ডিং ওঠাচ্ছে অনেকে। তোয়াক্কা করছে না নিয়ম-নীতির। বিবিসি বাংলা’য় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের দুই দিকের ভূ-গঠনে শক্তিশালী ভূমিকম্পের শক্তি জমা হয়েছে। ওই শক্তি যদি রিখটার স্কেলে প্রকাশ করা হয়, তা ৭.৫ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে। সিলেট এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভূমিকম্পের শক্তি জমা হওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, একটা হচ্ছে উত্তর-পূর্ব কোণে সিলেট অঞ্চলে ডাউকি ফল্টে, আরেকটা হচ্ছে আমাদের পুবে চিটাগাং ত্রিপুরা বেল্টে পাহাড়ী অঞ্চলে। এখানে আসলে দুইটা বড় ধরনের ভূমিকম্প আমাদের বাংলাদেশের দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছে। উত্তর প্রান্তে যেটা ডাউকি ফল্ট এখানে সংকোচনের হার হচ্ছে প্রতি এক শ’ বছরে এক মিটার। গত ৫শ’ থেকে ৬শ’ বছরে বড় ধরনের ভূমিকম্পের কোন রেকর্ড নেই। তার মানে ৫-৬ মিটার চ্যুতি ঘটানোর মতো শক্তি অর্জন করেছে। এটা যদি আমি রিখটার স্কেলে প্রকাশ করি তাহলে এটা হচ্ছে ৭.৫ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি করতে পারে। এখান থেকে ঢাকা শহর হচ্ছে দেড়শ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে ৭.৫ থেকে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প যদি বাংলাদেশে আঘাত হানে তবে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হয়। ঢাকা শহরে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় রয়েছে চার লাখের বেশি ভবন। রাজউক এলাকায় যে সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি। যার অধিকাংশই ভূমিকম্প সহনীয় নয়। ভূমিকম্পসহ সকল দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য সরকারীভাবে প্রচার চালাতে হবে। টিভি, পত্রিকা, অনলাইন, রেডিও, ফেসবুক, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা এবং সরকারী-বেসরকারী সভা-সেমিনারের মাধ্যমে মানুষের সচেতন করতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ আতঙ্ক নয় মোকাবেলা করার জন্য মানসিকভাবে সকলকে সচেতন হতে হবে। গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী থেকে
×