ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মমতাজ লতিফ

খালেদার ‘সুদিন’ ও ‘হাসিনাহীন নির্বাচন’ কৌশল

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২৬ এপ্রিল ২০১৬

খালেদার ‘সুদিন’ ও ‘হাসিনাহীন নির্বাচন’ কৌশল

জনগণের উদ্দেশে দেয়া খালেদা জিয়ার সংক্ষিপ্ত মৌখিক বক্তব্য থেকে কিছু বাক্য বাছাই করে তা নিয়ে বিশ্লেষণ করার প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে। কেননা এই একটি কাজ করতে পারলে ভবিষ্যতের রাজনৈতিক অঙ্গনের দৃশ্যপট অনেকটাই অনুমান করা সম্ভব হবে। এর জন্য জ্যোতিষী হওয়ার প্রয়োজন নেই। পাঠক জানেন, কিছুদিন আগেই খালেদা জিয়া ‘হাসিনাহীন নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। সে সময় সবাই ভেবেছিল, এমনকি প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং মন্তব্য করেছিলেন যে, আবারও কি ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো কোন হামলায় তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা হতে যাচ্ছে? এর পরপরই খালেদা জিয়া বললেন, ‘সামনে সুদিন’ আসছে অর্থাৎ বিএনপির দুঃখ, কষ্ট, গ্রেফতার এসব বন্ধ হয়ে যাবে এবং খালেদা, তারেক ও বিএনপির সামনে শেখ হাসিনার মতো শক্ত কোন প্রতিপক্ষ আর থাকবে না। পুত্র জয়কে হত্যা করলে ভবিষ্যতের নেতা যেমন থাকবে না, তেমনি পুত্র নিহত হলে শেখ হাসিনা ভেঙ্গে পড়বেন এবং রাজনীতি হবে খালেদা-তারেকের জন্য প্রতিপক্ষহীন। পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন করতে এর আগে খালেদা জিয়াকে খুব একটা দেখা যায়নি। এবার খুব সম্ভবত বাঙালীর প্রাণের অসাম্প্রদায়িক এই উৎসবকে পরিকল্পিতভাবে অপমানিত করার উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠানে না দাঁড়িয়ে বসে বসে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে পহেলা বৈশাখ ও জাতীয় সঙ্গীতকে আঘাত দিল। এটি পরিকল্পিত, কেননা খালেদা জিয়া বা বিএনপি নেতা-নেত্রী, কর্মীবৃন্দ জাতীয় সঙ্গীত যে সব দেশেই দাঁড়িয়ে গাইতে হয়, সে বিষয়টি খুব ভালো করেই জানেন। জেনে শুনেই যেমন খালেদা সম্ভবত তার জীবনের অর্ধেক বয়স শেষে আকস্মিকভাবে ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু হত্যার শোকের দিনে জন্মদিন পালন শুরু করে বাঙালীর সংবেদনশীলতাকে আঘাত করে নিজেকে প্রথমবারের মতো চরম নিষ্ঠুর মায়াদয়াহীন মানবী হিসেবে প্রমাণ করেছিল, ঠিক তেমনি আজ তার মুখে ‘সুদিন’ এবং ‘শেখ হাসিনাহীন নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা জানতে পেরে নিশ্চয় জনগণ বিস্মিত হচ্ছেন। এর সঙ্গে আরও একবার স্মরণ করাতে চাই- একজন বিএনপি নেতা কিন্তু সম্প্রতি বলেছেন- সামনে বিএনপি রাজনীতিতে বড় ঝড় তুলবে। ১৫ আগস্টে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪১ বছর পর শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্র কোন্ বাঙালী করবে- তা স্বপ্নেও ভাবেনি। ’৭৫-এর পর এই পরিবারের দু’কন্যা ও সন্তানরা এবং জেল হত্যার শিকার হওয়া চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দীন, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানের স্ত্রী, সন্তানরা রাষ্ট্রের হাতে কে কিভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন এবং মাতৃভূমিতে ফিরে আসা অথবা মাতৃভূমিতে প্রাণে বেঁচে থাকা তাদের জন্য কত বিপজ্জনক ছিল এখন তা অনুধাবন করা কঠিন বৈকি! প্রাণাশংকা যে এখনও আছে- তা ভেবে নিশ্চয়ই হতবিহ্বল হচ্ছেন। আমরা জানি যে, ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং তারও আগে পঞ্চাশের দশক থেকে বঙ্গবন্ধু যেহেতু সরকারবিরোধী রাজনীতিতে সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত ছিলেন এবং তার ফলস্বরূপ প্রায়ই পাকিস্তানী শাসকের দ্বারা গ্রেফতার হয়ে জেলে থাকতেন, সে কারণে তাঁর স্ত্রী-ছেলেমেয়েরা কঠিন জীবন যাপন করেছেন। শুধুমাত্র শেখ মুজিবের স্ত্রী-সন্তান পরিচয়ের জন্য তাঁরা অধিকাংশ সময় বাড়ি ভাড়া পাননি। অনেকে মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। স্বজনরা সাহায্য করতে সাহসী হতো না। এর মধ্যেও কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সব ছেলেমেয়ে মায়ের ঐকান্তিক চেষ্টায়, দাদা ও মায়ের কৃষি সম্পত্তির সাধারণ আয়ে জীবন ধারণ করেছেন, লেখাপড়া শিখেছেন। ’৭১-এ তো বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে, তাঁর ফাঁসি নির্ধারণ করে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা, সে অবস্থায় বেগম মুজিব, বঙ্গবন্ধুর চাচাত ভাই, শেখ হাসিনার খোকা চাচার সহায়তায় সদ্য বিবাহিত ও গর্ভবতী শেখ হাসিনাসহ সব সন্তানদের নিয়ে পুরনো ঢাকা থেকে মধ্য ঢাকা, শেষে ধানম-িতে উদ্বাস্তুর মতো আজ এ বাসা, কাল ও বাসা ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। অনেক বাড়িওয়ালাই পরিচয় জেনে বাসা ভাড়া দেননি। ’৭২ থেকে ’৭৫-এর আগস্ট, মাত্র সাড়ে তিন বছর বঙ্গবন্ধু পরিবার এ অসহনীয় পরিবেশ থেকে মুক্ত ছিল। তারপর তো আরও কঠিন নির্দয় সময় এলো ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট হত্যাকা-ের পর। বঙ্গবন্ধুর পুত্রেরা নিহত। তাজউদ্দীন ও সৈয়দ নজরুলের দুই পুত্র এবং বঙ্গবন্ধুর বিদেশে থাকা দুই কন্যার জন্য তাদের পিতার শ্রমে, কষ্টে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশ হয়ে উঠেছিল তাদের জন্য অনিরাপদ। পাঠককে ভেবে দেখতে বলব, কিশোরী শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনা, ড. ওয়াজেদকে পুরো পৃথিবীতে আশ্রয়ের স্থান দিয়েছিলেন মহীয়সী নারী ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তাঁর কাছ থেকে নিরাপত্তা, আশ্রয়, সাহস ও উপদেশ পেয়েছিলেন এরা। যখন ’৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলের ঐক্যের তাগিদে দিল্লী থেকে শেখ হাসিনাকে স্বদেশে ফেরত এসে দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করতে বারংবার অনুরোধ করছিল এবং একসময় তিনি সম্মত হয়ে মাতৃভূমিতে ফিরে আসেন তখন কিন্তু শেখ রেহানার তত্ত্বাবধানে ভারতে রেখে আসা দু’সন্তানের বয়স মাত্র দশ-এগারো ও সাত-আট। মাথার ওপর ’৭৫-এর জল্লাদের খাঁড়া বুলেটের শিকার হতে পারেন- এমন ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক পরিবেশে শুধু বাঙালীর মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে, মুক্তিযোদ্ধাদের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্ষা করতে দুটি শিশুকে মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে কত দূরে রেখে চলে এসেছিলেন। শেখ রেহানা ও এই শিশুদের জীবন কতটা কষ্টের, মাতৃভূমিতে আসতে না পারার কষ্ট কতটা, তা জনগণ জানতে না পারলেও অন্তত অনুভব করা যায়। সেই শিশুরা হোস্টেলে থেকে বড় হয়েছে, উচ্চশিক্ষিত হয়েছে, শেখ রেহানা বিবাহিত হয়ে দুই সন্তানের মা হয়েছেন, তার সন্তানরাও সুশিক্ষিত হয়েছেন। এখন যদি সেই বহুকষ্ট করে বড় হওয়া শেখ হাসিনার সন্তান যার নাম ’৭১-এ জন্ম হওয়ায় বাংলাদেশের জন্মযুদ্ধে জয়ের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা নাম জয়, তারও প্রাণ সংহারের পরিকল্পনা বাংলাদেশবিরোধী, রাষ্ট্রদ্রোহী ছাড়া করতে পারে না- তা বলাবাহুল্য। শুধু রক্তপিপাসু খালেদা-তারেক এই অকল্পনীয় হত্যা পরিকল্পনা করে থাকলে বিস্মিত হলেও তবু অবিশ্বাস করি না। কিন্তু সত্যিকার অর্থে, বিএনপি দলটির ঐ দু’জন প্রধান নেতা হওয়া সত্ত্বেও বিএনপির অন্য কোন নেতানেত্রীকে এই রকম ঘৃণ্য হত্যাকা-ের পরিকল্পনার কথা ভাবতে পারে বলেও মনে করি না। বহু শ্রম, স্বার্থ ত্যাগ ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে মাতৃভূমি থেকে বহু দূরে নিজের ভাষা ও সংস্কৃতির বাইরে ভিন্ন সংস্কৃতির একটি দেশে জয়, পুতুল, শেখ রেহানা, তার দুই সন্তান জীবিকা ও নিরাপত্তার জন্য বাস করতে বাধ্য হয়েছে- এ তো সবার জানা। খালেদা-তারেক জীবিত থাকা পর্যন্ত জয় যেন এদেশে স্থায়ীভাবে থাকতে না আসে- জনগণের একাংশ প্রধানমন্ত্রীকে এমন অনুরোধ করার চেষ্টাও করেছে। অথচ আজ একজন প্রগতিশীল অধ্যাপক সাঈদুর রহমানের পুত্র বর্ষীয়ান সাংবাদিক, দীর্ঘকাল সুবিধাবাদী সাংবাদিকতা করেছেন, তেমন ব্যক্তি খালেদা-তারেকের এবং নিশ্চয় তাঁরও ‘সুদিন’ ফিরিয়ে আনতে শেখ হাসিনার মেরুদ-, মনোবল ভেঙ্গে দিতে পুত্র জয়কে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনার মতো ঘৃণ্য, নীচ একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবেন- এ কথা অকল্পনীয় তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তার মতো ওপর মহলের কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হলে প্রথমেই বুঝতে হবে, কোন বড় অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে। যদিও ’৭৬ থেকে আজ পর্যন্ত দেশের বেশকিছু বড় সাংবাদিক প্রাণপাত প্রচারণা চালিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে, শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছে সমতুল্য গণ্য করার অপতৎপরতা অব্যাহতভাবে করে চলেছে। তবু, তাদের বিপক্ষেও কিছু সাংবাদিক, কলাম লেখক ক্রমাগত সত্য উদঘাটনে নিজেদের প্রচেষ্টাও অব্যাহত রাখার ফলে এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, শাহ কিবরিয়া হত্যা, জঙ্গী জন্মদান ও তাদের সাহায্য সারাদেশে বাঙালী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহনকারী দল ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা, পেট্রোল বোমা হামলা ইত্যাদি প্রত্যক্ষভাবে খালেদা-তারেকের নির্দেশে সংঘটিত হওয়ায় জনগণ ঐ দু’জনকে বাঙালীর শত্রু গণ্য করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু একজন ব্যক্তি অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন, এমন তথ্য যদি কোন দেশের আদালত থেকে আসে, তখন সে ব্যক্তি শিক্ষক, সাংবাদিক, ডাক্তার, উকিল, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী- যেই হোক, তার বয়স যাই হোক, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার মাধ্যমে সত্যটি বেরিয়ে আসুক, জনগণ এটাই কি চাচ্ছে না? এই চাওয়াটাই তো স্বাভাবিক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি বলেছেন, তিনি যদি দোষী না হন, তাহলে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসবেন। তথ্যমন্ত্রী বলেছেন- সাংবাদিকতার জন্য নয়, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে বলে গ্রেফতার হয়েছেন। সারাদেশে গণজাগরণ মঞ্চসহ প্রায় প্রতিদিন সরকারবিরোধী নানা শ্রেণী, পেশার প্রতিবাদী সভা, মানববন্ধন হচ্ছে, সংবাদপত্রে স্বাধীনভাবে খবর, কলাম প্রকাশ হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গীদের বিচার হচ্ছে- এর কিছুই খালেদা-তারেক ক্ষমতায় থাকলে হতো না, এগুলো সম্ভব হয়েছে জয়ের মা, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই। যুদ্ধাপরাধীর বিচার হতে দিত না, শাহবাগে গণজাগরণকে সভা-সমাবেশ করতেও তারা দিত না। এর মধ্যে গণজাগরণের কোন ব্লগার হত্যার বিচার এখনও সম্পন্ন হয়নি; তদন্তাধীন আছে। তবে আশ্চর্য এই যে অভিজিত হত্যার আলামতের ডিএনএ টেস্টের দায়িত্ব নিয়েও এফবিআই আজও কিছুই করেনি। তবু এ সরকার তো বিশাল বিডিআর বিদ্রোহ, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা শেষ করেছে। বড় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও প্রায় শেষের পথে। নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলা চলছে। তবে, অবশ্যই কুমিল্লার তনু হত্যা, সাগর-রুনি হত্যা, নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যা, সব ব্লগার হত্যার প্রকৃত অপরাধী তারা যত ক্ষমতাবানই হোক না কেন- দ্রুত বিচারের আওতায় দেখতে চায় জনগণ। এ কাজটি যত কঠিনই হোক, সরকারকে করতে হবে তার নিরপেক্ষ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। জনগণকে স্মরণ করতে হবে, ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় নেতাদের হত্যার পর দেশকে যেমন পাকিস্তানীকরণের উল্টো পথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, আজ যদি শেখ হাসিনা বা তাঁর পুত্র জয় তেমন হত্যাকা-ের শিকার হন, তাহলেও সেই মধ্য ’৭৫-এর অন্ধকার যুগ আবারও নেমে আসবে, এতে সন্দেহ নেই। তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি, শিল্প, বাণিজ্যের অগ্রগতি আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, পাকিস্তানের মতোই অন্ধকারে হারিয়ে যাবে। সাংবাদিক বেবী মওদুদকে একসময় বলেছিলাম, বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে, তাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে ’৭৫- এর পর চরম দুর্দশার মধ্যে কিভাবে জীবন কাটিয়েছিলেন, কিভাবে ছেলেমেয়েরা সুশিক্ষিত হলো, তা জেনে একটি বই লিখতে চাই। ’৭৫-এর পর ওই পরিবারগুলোর শিশু দেশের স্কুলেই ভর্তি পর্যন্ত নিষিদ্ধ হয়েছিল। তাদের অবর্ণনীয় কষ্টগাথা লেখা দরকার। সেসব বাঙালী জাতিকে প্রয়োজন। সেই বইটি লিখতে পারিনি। বেবী মওদুদ সংক্ষেপে বলেছিলেন, উনি নিজের কষ্টের কথা বলতে চান না। বাঙালী বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ করে ঐ ত্রাতা মহামানবকে চিনেছে। বাঙালীকে ’৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন, সৈয়দ নজরুল, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানের স্ত্রী, সন্তানদের চরম প্রতিকূল পরিবেশে জীবন সংগ্রামের এবং চরিত্র হননের হলুদ সাংবাদিকতার প্রকৃত ঘটনাগুলো জানতে হবে। বাঙালীর শত্রু, মিত্রের চেহারা চিনতে এসব ঘটনা জানার কোন বিকল্প নেই।
×