ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভোটের সময় ঠিক করতে কাল নির্বাচন কমিশনের বৈঠক

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১১ মার্চ ২০১৫

ভোটের সময় ঠিক করতে কাল নির্বাচন কমিশনের বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও ভোট গ্রহণের সময় নির্ধারণ করতে আগামীকাল বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন কমিশন সচিব মোঃ সিরাজুল ইসলাম। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সুত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্র্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব কিনা এ বিষয় নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি প্রাধান্য পাবে। অন্যদিকে দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় নির্ধারণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। বিশেষ করে পরীক্ষা ও রোজার আগে সম্ভাব্য কোন সময়ে নির্বাচন যথোপযুক্ত হবে তা আলোচনার পরেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে এ বৈঠকে অংশ নেয়ার জন্য ইসির নির্বাচন সহায়তা ও সমন্বয় শাখা থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ মহা পরিদর্শক, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক, সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও নির্বাচন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশের পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশনের সীমানা নির্ধারণী গেজেট নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশকে অনুরোধ জানানো হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এ আদেশের পর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করা হয়। নির্বাচন কমিশন সচিব জানান, প্রাথমিক প্রস্তুতি কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে। এর পর নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। জানা গেছে, নির্বাচনের সাম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ ও বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করা সম্ভব হবে কিনা তা জানতেই এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি ভোটের উপযোগী কিনা বা পরিস্থিতির উন্নতি কবে নাগাদ হবে এসব বিষয়ে বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রধানদের কাছে জানতে চাইবে কমিশন। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর কমিশন ভোটের সময় নির্ধারণ করতে বসবে। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে চলমান এসসি পরীক্ষা শুরু হলে রাজনৈতিক জটিল পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০ দলীয় জোটের ক্রমাগত হরতাল বৃদ্ধির কারণে সরকার এসএসসি পরীক্ষা পিছাতে বাধ্য হচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষা শেষেই শুরু হবে এইচএসসি পরীক্ষা। এইচএসসি পরীক্ষার পর পর শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য এইচএসসি মধ্যে বা রমজানের আগে উপযুক্ত সময় বেছে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, এসএসসি পরীক্ষা চলছে। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার সময় শ্রেণীকক্ষগুলো একভাবে সাজানো থাকে। নির্বাচনের জন্য অন্যভাবে সাজাতে হয়। আবার সামনে রোজা রয়েছে। রোজার মধ্যে নির্বাচন এড়াতে হবে। এমতাবস্থায় দরকার পরীক্ষা ও রোজার মধ্যে কিছুদিনের একটা ফাঁক। বড় না হলেও মাঝারি ধরনের একটা ফাঁক যদি দেখিয়ে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তার মধ্যেই আমরা নির্বাচন করে ফেলার চেষ্টা করব। দ্রুত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে সব ঠিক করব। এছাড়া তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনও রোজার আগেই সম্পন্ন করার আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এখনও ডিসিসি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচন একসঙ্গে করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। কমিশন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেব। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিশেষ করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল লিস্ট, ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার তালিকাসহ আনুষঙ্গিক তথ্য প্রস্তুত করে ইতোমধ্যে কমিশনের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। এসব রিপোর্টের ভিত্তিতেই নির্বচনের সময় নির্ধারণে বিষয়ে আগামীকাল বৈঠকে আলোচনা করা হবে।
×