
ঢাকার মাইলস্টোন স্কুলে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, রাজধানীর আকাশ প্রতিরক্ষা নিশ্চিতে ঢাকায় যুদ্ধবিমান ঘাঁটি রাখা অত্যাবশ্যক। বিমান বাহিনীর পরিচালনা পরিদপ্তরের পরিচালক এয়ার কমোডর শহিদুল ইসলাম বলেন, কৌশলগত (স্ট্র্যাটেজিক) ও কার্যকরী (অপারেশনাল) প্রয়োজনে বিশ্বের যেকোনো দেশের মতো ঢাকাতেও যুদ্ধবিমান ঘাঁটি থাকা জরুরি।
দুর্ঘটনার তদন্তে আন্তর্জাতিক সহায়তার অংশ হিসেবে চীনের একটি বিশেষজ্ঞ দল আসতে পারে বলেও জানান তিনি। বিমান বাহিনী মনে করে, চীনের সহায়তা দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর প্রতিদিনই দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসছেন বহু মানুষ। স্কুল প্রাঙ্গণ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। আগত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর তাগিদ দিয়েছেন। একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা চাই দ্রুত অন্য কোনো ভবনে হলেও ক্লাস শুরু হোক। স্কুল খুলে দিলে মনের ভয় কেটে যাবে।”
আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় সাত দিনের মেডিকেল ক্যাম্প চালু করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, “আহত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ইচ্ছুক অন্য শিক্ষার্থীরাও এই ক্যাম্প থেকে চিকিৎসা নিতে পারবে। টিচার ও স্টাফরাও এর আওতায় থাকবেন।”
দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে ভবন নির্মাণ নীতিমালা ও নিরাপত্তা নিয়ে। মাইলস্টোন স্কুলের অধ্যক্ষ দাবি করেন, “আমরা রাজউকের অনুমোদন নিয়েই ভবন নির্মাণ করেছি। শুধু টিউশন ক্লাস চালানোর জন্য আলাদা অনুমতি লাগে না। রাজউকের উচ্চতা নির্দেশিকা মেনেই নির্মাণ হয়েছে।”
তবে দুদিন আগে প্ল্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে জানায়, মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের অনুমোদন নেয়নি।
সরকারি ব্যর্থতা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একজন অভিভাবক বলেন, “সরকার জানে এখানে বিমান প্রশিক্ষণ হয়, আবার স্কুলও জানে সরকার। এটা সরকারের ব্যর্থতা। সতর্ক ব্যবস্থা থাকলে এমন দুর্ঘটনা হতো না।”
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক ভয় কাটাতে দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালুর দাবি জোরালোভাবে উঠেছে। বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে রাজধানী থেকে যুদ্ধবিমান ঘাঁটি সরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।
Jahan