
ছবি: জনকণ্ঠ
রাজবাড়ী শহরের গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল সড়কে বৃষ্টির পানিতে হাঁটুসমান পানি জমে আছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীরা। এ অবস্থায়, সড়কের পানিতে বঁড়শি দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে পারভেজ খান নামে এক ঔষধ ব্যবসায়ীকে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরা এসব সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজবাড়ীর দুই নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে সদর হাসপাতাল পর্যন্ত এবং পাবলিক হেলথ মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দে ভরা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে এসব গর্তে জমে গেছে পানি। পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায়, তা দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকছে। ফলে হাসপাতালে যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রোগীদের সঙ্গে আসা স্বজনদের কষ্টের যেন শেষ নেই।
সদর উপজেলার বেলগাছি এলাকার সোবাহান তার স্ত্রীকে নিয়ে ইজিবাইকে করে হাসপাতালে আসছিলেন। তিনি বলেন, “পানি দেখে ইজিবাইক চালক আমাকে পাবলিক হেলথ মোড়েই নামিয়ে দিল। এখন কীভাবে হাঁটু পানি পার হয়ে হাসপাতালে যাব? রিকশা চালককে অনুরোধ করলাম, সে বলল এইটুকু পথ যেতে ২০ টাকা। এখন অপেক্ষা করছি যদি কেউ কমে নিয়ে যায়।”
হাসপাতাল সড়কের বেহাল দশা নিয়ে পথচারী মোজাহার বলেন, “রাজবাড়ী পৌরসভায় একটাও ভালো সড়ক নেই। রেলগেট থেকে শুরু করে হাসপাতাল পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গভীর গর্ত। গতকাল সেগুনবাগিচার পাশে একটি ইজিবাইক উল্টে যায় যাত্রীসহ। আমরা চাই দ্রুত পৌরসভার পক্ষ থেকে সংস্কারকাজ শুরু হোক।”
ইজিবাইক চালক ইব্রাহিম বলেন, “এই সড়কে বড় বড় গর্তে চলাচলে আমাদের চরম কষ্ট হয়। ইজিবাইকের যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর রোগী থাকলে সমস্যা আরও বাড়ে। গত সরকার কোনো কাজ করেনি। দেখেছি, কিছু ছাত্র ট্রাকে পচা ইট এনে নিজেরা মেরামতের চেষ্টা করছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে?”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সড়কের গর্তে কেউ পড়ে না যায়, সেজন্য এলাকাবাসী গর্তের পাশে লাল কাপড় বেঁধে রেখেছে।
রাজবাড়ী পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, ১০৮ কিলোমিটার পৌর এলাকার মধ্যে ৬৮ কিলোমিটার সড়ক বেহাল দশায় রয়েছে। সর্বশেষ ৮ বছর আগে তৃতীয় নগর উন্নয়ন ও অবকাঠামো প্রকল্প (UGIIP-3) এর আওতায় কিছু রাস্তা সংস্কার হয়েছিল। তারপর আর কোনো কাজ হয়নি। বিটুমিন ও খোয়া উঠে গিয়ে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পৌরসভার প্রশাসক মাজহারুল ইসলাম (উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার) বলেন, “হাসপাতাল সড়কের দুরবস্থার বিষয়টি আমরা অবগত। এ সপ্তাহেই মেরামতের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হবে এবং ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে। শুধু হাসপাতাল সড়ক নয়, পৌর শহরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সংস্কারকাজও দ্রুত বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।”
শহীদ