ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

চ্যাটজিপিটি দিয়ে সিভি বানাচ্ছেন? সাবধান! জেনে নিন বিপদগুলো

প্রকাশিত: ১৮:৪৯, ১৩ জুলাই ২০২৫

চ্যাটজিপিটি দিয়ে সিভি বানাচ্ছেন? সাবধান! জেনে নিন বিপদগুলো

ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এখন আমাদের জীবনের নানা কাজে জড়িয়ে পড়েছে। ই-মেইল লেখা থেকে শুরু করে সিভি তৈরির মতো ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও অনেকেই ভরসা করছেন চ্যাটজিপিটির ওপর। এতে সময় বাঁচে, ঝামেলাও কমে—এমনটা অনেকের ধারণা। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিভির মতো সংবেদনশীল ও ব্যক্তিগত ডকুমেন্ট চ্যাটজিপিটির হাতে ছেড়ে দিলে হতে পারে মারাত্মক বিপদ।

চাকরিদাতা প্রথম যে কাগজটি হাতে পান, তা হলো আপনার সিভি। সেটি আপনার ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। কিন্তু চ্যাটজিপিটি দিয়ে বানানো সিভিতে সেই ‘আপনি’ অনেক সময়ই অনুপস্থিত থাকেন। শুধু কিওয়ার্ডের ভিত্তিতে বানানো সিভি হয়তো গোছানো হতে পারে, কিন্তু সেটি হয়তো আপনার প্রকৃত শক্তিমত্তা তুলে ধরে না। ফলে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও আপনি তালিকায় জায়গা হারাতে পারেন।

চ্যাটজিপিটির মতো এআই টুল একই ধরনের তথ্য পেলে প্রায় একই ছাঁচে সিভি তৈরি করে দেয়। ফলে বহু প্রার্থী একই রকম সিভি জমা দেয়—যা চাকরিদাতাদের কাছে একঘেয়ে হয়ে ওঠে। এতে ব্যক্তিগত স্বকীয়তা হারিয়ে যায়।

চ্যাটজিপিটির ভাষা হয় অত্যন্ত যান্ত্রিক ও নিখুঁত—যেটি সবসময় ভালো নাও হতে পারে। চাকরিদাতারা এখন বুঝতে পারছেন, কোন সিভি মানুষ নিজে লিখেছে আর কোনটি এসেছে কোনো এআই টুল থেকে। অতিরিক্ত নিখুঁত বা নিস্তরঙ্গ সিভি বরং নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

তাহলে করণীয় কী?

সহকারী হিসেবে ব্যবহার করুন এআইকে

চ্যাটজিপিটির কাছ থেকে ধারণা বা গঠন সম্পর্কে পরামর্শ নিতে পারেন। কীভাবে একটি আকর্ষণীয় সিভি তৈরি করা যায়, সেটি জিজ্ঞেস করুন। তবে নিজের অভিজ্ঞতা, গুণাবলি, আগ্রহ ও লক্ষ্য নিজেই নির্ধারণ করুন।

ব্যক্তিগত স্পর্শ দিন

যে প্রতিষ্ঠান বা পদটির জন্য আবেদন করছেন, তাদের সম্পর্কে জানুন। এরপর নিজের গুণগুলো কীভাবে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মানানসই—তা যুক্ত করে নিজের মতো করে সিভি লিখুন।

ব্যাকরণ ঠিক করতে ব্যবহার করুন চ্যাটজিপিটি

নিজের লেখা সিভি চ্যাটজিপিটিকে দিয়ে সংশোধন করিয়ে নিতে পারেন। এতে ভাষাগত সৌন্দর্য বাড়বে, কিন্তু মূলত আপনার লেখাই থাকবে।

যদি চ্যাটজিপিটি দিয়েই বানাতে চান

তাহলে প্রথমেই বিস্তারিত চিন্তা করুন—আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, প্রতিষ্ঠান ও পদ সম্পর্কে। তারপর সেসব তথ্য চ্যাটজিপিটিকে দিন এবং সেগুলো দিয়ে সিভি তৈরির অনুরোধ জানান। এভাবেই আপনি এআইয়ের সহযোগিতায় একটি ‘আপনার মতো’ সিভি তৈরি করতে পারবেন।

সর্বোপরি, সিভি তৈরির পর সেটি ভালোভাবে পড়ে দেখুন। যান্ত্রিক মনে হলে সংশোধন করুন। কখনোই পুরো দায়ভার চ্যাটজিপিটির হাতে ছেড়ে দেবেন না।

চ্যাটজিপিটি যতই শক্তিশালী হোক না কেন, চাকরির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনি নিজেই আপনার সবচেয়ে বড় প্রতিনিধি। তাই ‘আপনার লেখা, আপনার ভাষা, আপনার উপস্থাপনাই’ হতে পারে সাফল্যের চাবিকাঠি।

 

সূত্র: অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন।

রাকিব

×