
ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার আলোচিত হাবিব উল্লাহ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত মো. কামাল মীরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মুহাম্মাদ আব্দুর রকিব।
পুলিশ জানায়, ১১ জুলাই মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের গোপালকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে একটি পুকুরে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের মুখমণ্ডল, চোখের নিচে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়।
নিহত হাবিব উল্লাহ (৫৫) নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার গন্ধব্যপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পেশায় রিকশাচালক এবং মতলব উত্তরের পুটিয়ারপাড় গ্রামের মনোয়ারা বেগমের স্বামী।
ঘটনার পর হাবিবের স্ত্রী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন মো. কামাল মীরা (৫৫)। তিনি বরিশালের চরমোনাইয়ের বাসিন্দা এবং ডেমরার কোনাপাড়ায় একটি প্রেসে নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
একটানা ২১ ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে পুলিশ সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে কামাল মীরাকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কামাল স্বীকার করেন, কয়েক মাস আগে নারায়ণগঞ্জের একটি চায়ের দোকানে হাবিবের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। কামালের প্রথম স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় তিনি পুনরায় বিয়ের চিন্তা করছিলেন। এই সুযোগে হাবিব তাকে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে দুই দফায় ১০ হাজার টাকা নেন।
১০ জুলাই হাবিব কামালকে চাঁদপুরে ডেকে নেন। বিকেলে তারা মাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করেন এবং রাতে গোপালকান্দি স্কুলের পাশে যান। সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়।
হাবিব কামালের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের চেষ্টা করলে আত্মরক্ষায় কামাল তার তলপেটে ও অণ্ডকোষে আঘাত করেন। পরে হাবিব দুর্বল হয়ে পড়লে কামাল তাকে পুকুরে চুবিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
এরপর তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকায় আত্মগোপন করেন।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার বলেন, “এটি ছিল একটি ক্লুলেস হত্যা মামলা। কিন্তু চাঁদপুর জেলা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা দক্ষতায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই এর রহস্য উন্মোচন করেছে এবং মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।”
আসিফ