ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

শীতলক্ষ্যার খেয়াঘাটের তিন শতাধিক মাঝি ইজাদারের কাছে জিম্মি, দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০:১৬, ৮ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:১৮, ৮ জুলাই ২০২৫

শীতলক্ষ্যার খেয়াঘাটের তিন শতাধিক মাঝি ইজাদারের কাছে জিম্মি, দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা

ছবি: জনকণ্ঠ

নারায়ণগঞ্জ শহরের শীতলক্ষ্যা নদীর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট ও বন্দর ঘাটের নৌকার মাঝিরা ইজাদারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। এ ঘাটের নতুন ইজারাদার নৌকার মাঝিদের কাছ থেকে ঘাট জমা বাবদ প্রতিদিন অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে তিন শতাধিক মাঝিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভূক্তভোগীরা মাঝিরা ঘাট জমার টাকা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। 

 


ভূক্তভোগী মাঝিরা জানায়, প্রতিদিন বন্দর উপজেলাসহ পাশ^্র্বর্তী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ প্রতিদিন এ ঘাট দিয়ে নৌকা ও ট্রলার দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর পার হয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় আসা-যাওয়া করছেন। মাঝিদের অভিযোগ, বিগত ১৫ বছর ধরে সেন্ট্রাল খেয়াঘাট ও বন্দর ঘাটের মাঝিরা বিনা ঘাট জমায় ঘাটের নৌকা দিয়ে যাত্রীদের নদী পারাপার করছেন।

 

কিন্তু এবার ঘাটের নতুন ইজাদার মো. দিদার হোসেন খন্দকার প্রতিজন মাঝিদের উপর প্রতিদিন ৮০ টাকা ঘাট জমা নির্ধারণ করেন। নৌকার প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে জোরপূর্বক ২ টাকা করে টোল নির্ধারণ করেন। এতে মাঝিরা দিন দিন ফুসে উঠেন। ঘাট জমার উক্ত টাকা ও যাত্রী প্রতি ২ টাকাসহ অর্পিত অতিরিক্ত টাকা প্রত্যাহারের জন্য বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক বরাবরে সকল মাঝিদের পক্ষে মো. রজমান মুন্সী একটি আবেদন করেন। 
নৌকার মাঝি আনোয়ার হোসেন বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে নতুন ইজাদার ৮০ টাকার পরিবর্তে প্রতি মাঝি প্রতি এখন প্রতিদিন ঘাট জমা ৪০ টাকা করে আদায় করছেন। প্রতি যাত্রীর জনপ্রতি ২ টাকা টোল আদায় বন্ধ হয়েছে। তিনি বলেন, বহু ধরে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। কিন্তু কোন দিন ইজারাদারদের ঘাট জমার টাকা দিতে হয়নি। চলতি মাসে ১ জুলাই থেকে প্রতি মাঝি থেকে ঘাট জমা বাবদ ৪০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এতে আমাদের আয়ও কমে গেছে। আমাদের আয় খুবই সীমিত। এ সীমিত আয় থেকেই ইজারাদারকে নির্ধারিত টাকা দিতে হচ্ছে। স্বপন মাঝি বলেন, আমি দীর্ঘ ১২-১৫ বছর ধরে সেন্ট্রাল খেয়া ঘাট ও বন্দর ঘাট দিয়ে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। কিন্তু কোন দিন ঘাট জমার টাকা দিতে হয়নি। এখন দিতে হচ্ছে। ইজারাদারের কাছে আমরা জিম্মি হয়ে পড়েছি। ইজারাদার আমাদের উপর জুলুম করছেন। এর প্রতিকার হওয়া প্রয়োজন। আরেক নৌকার মাঝি তপন মিয়া বলেন, এ ঘাটে কমপক্ষে দেড়শ নৌকা রয়েছে। এ নৌকায় তিনশ’ মাঝি রয়েছে। প্রতি মাঝি থেকে ঘাট জমা বাবদ ৪০ টাকা করে আদায় করছেন ইজাদার। আমরা ঘাট জমার টাকা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মোবারক হোসেন বলেন, এ বিষয়ে মাঝিদের পক্ষে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগামী শনিবারের মধ্যে বিষয়টি মিমাংসার জন্য ইজারাদারকে বলা হয়েছে। শনিবারের মধ্যে মিমাংসা না হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। এ ঘাটে যাত্রীদের হয়রানী করা হলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ছামিয়া

×