
রাজশাহীর তানোর উপজেলা সদর পোস্ট অফিস থেকে লোপাট হওয়া এক কোটি ৮৪ লাখ টাকা এখনো বুঝে না পাওয়ায় বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা পোস্ট অফিস তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে তানোর সদরের কুঠিপাড়াস্থ পোস্ট অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে পোস্ট মাস্টারসহ দায়িত্বশীলরা এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে গ্রাহকরা তালা খুলে দিয়ে বিক্ষোভ স্থগিত করেন।
বিক্ষোভকারী গ্রাহকরা জানান, তানোর পোস্ট অফিসের মাধ্যমে তারা এফডিআর ও বিভিন্ন মেয়াদি আমানত জমা রাখেন। এরমধ্যে কয়েক বছর আগে ৫৩ জন গ্রাহকের ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান তৎকালিন পোস্ট মাস্টার মকছেদ আলী।
পরে বিপুল অঙ্কের টাকা লোপাটের ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মকছেদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করে দায় সারেন সংশ্লিষ্টরা। ওই সময় ভুক্তভোগি গ্রাহকরা থানায় মামলাও করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনও বিষয়টি তদন্ত করে। কিন্তু গ্রাহকের টাকা উদ্ধার হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক রেজিয়া খাতুন বলেন, তাদের টাকা আত্নসাৎ করা হলেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে তারা পোস্ট অফিস ঘেরাও করে গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন।
তানোর উপজেলার কামারগাঁ বারঘরিয়া গ্রামের জয়নাল আবেদীন নামের একজন গ্রাহক বলেন, আমি ২০২১ সালে বাংলাদেশ পোস্ট অফিস সঞ্চয় ব্যাংকে এফডিআর করি ছয় লাখ টাকা। পরে ২০২২ সালে আবারও চার লাখ টাকা এফডিআর করি। প্রথম বারের ছয় লাখ টাকার হিসেব সরকারি খাতাসহ পাস বইতে আছে। কিন্তু পরের চার লাখ টাকা আমার পাস বইতে হাতে লিখে তুলে নেওয়া হয়েছে। ওই টাকার হিসেবে সরকারি রেজিস্ট্রি খাতায় নেই। তিনি চার লাখ টাকার কোনো হদিস পাননি।
জানা যায়, জয়নালের মত অরূপ কুমার নামে এক গ্রাহকের পাঁচ লাখ ৩৮ হাজার, পুষ্পা রানীর পাঁচ লাখ, সাবিয়া খাতুনের চার লাখ, কৃষ্ণা রানীর পাঁচ লাখ, রাশেদুলের তিন লাখ, পার্থ দাসের এক লাখ, আঙ্গুরা খাতুনের পাঁচ লাখ, রেজিয়া খাতুনের পাঁচ লাখ টাকাসহ ৫৩ জন গ্রাহকের ১ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকার কোন হদিস নেই। এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন মকছেদ আলী। এতো টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ডাকবিভাগের পদক্ষেপ নেই। যদিও টাকা উদ্ধারে কাজ করছে ডাক বিভাগ বলে দাবি করেছেন বর্তমান পোস্ট মাস্টার আব্দুল মালেক।
তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন জানান, কিছু গ্রাহক পোস্টঅফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছে। পরে তারা বিক্ষোভ স্থগিত করেছেন। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
Jahan