
ছবি: জনকণ্ঠ
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের সাঁজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলামের একমাত্র ছেলে আব্দুল্লাহ ওরফে তামিম (১৩) গত ২০ মে সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া তামিম বাড়ির পাশের গ্রাম সরিষা-প্রেমটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। নিখোঁজের দিন তার গায়ে গোলাপি রঙের স্কুল ড্রেসের জামা, পরনে টাউজার, হাতে একটি ঘড়ি ছিল এবং সে একটি বাইসাইকেল নিয়ে বের হয়েছিল।
পুত্র নিখোঁজের ঘটনায় পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোক ও উৎকণ্ঠা। একমাত্র ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় বাবা-মা দিন-রাত প্রহর গুনছেন। আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব এমনকি আশপাশের কয়েকটি জেলাতেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।
তামিমের পিতা নজরুল ইসলাম বলেন, “তামিম খুবই শান্ত ও নম্র স্বভাবের ছেলে। নিয়মিত নামাজ পড়ত, কোনো ঝামেলায় জড়াত না। আমরা তাকে ঘিরেই আমাদের জীবনের স্বপ্ন দেখতাম। তার এভাবে হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া আমাদের মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না। সে আর বাড়ি ফিরছে না।”
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত তামিম গণিত শিক্ষক কবিরুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। এরপর সে বাড়িতে ফিরে আবার স্কুলে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তামিম অত্যন্ত শান্ত ও বিনয়ী ছাত্র ছিল। তার নিখোঁজ হওয়ায় তারাও মর্মাহত।
নিখোঁজের পরদিন, অর্থাৎ ২১ মে, তামিমের বাবা পাংশা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন (জিডি নম্বর-৯১৪)। পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এ বিষয়ে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “ছেলেটিকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। এখনও তার কোনো সুনির্দিষ্ট সন্ধান পাওয়া যায়নি। তামিম তার সাইকেলসহ নিখোঁজ রয়েছে, যা আমাদের কিছুটা বিভ্রান্তিতে ফেলেছে। যদি কেউ অপহরণ করত, তাহলে অন্তত বাইসাইকেলটি পাওয়া যেত। আমরা সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি।”
নজরুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার একমাত্র ছেলেটিকে ফিরে পেতে আমি যেকোনো মূল্যে প্রস্তুত। কেউ যদি তার কোনো খোঁজ দিতে পারেন, তাকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে।”
শহীদ