ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

দখল-দূষণের কবলে নাজিরহাট খাল

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২২:৪১, ১ জুন ২০২৪

দখল-দূষণের কবলে নাজিরহাট খাল

নাজিরহাটের বুক চিরে বয়ে যাওয়া খাল এভাবেই দখল হচ্ছে

হালদা থেকে নেমে আসা এক সময়ের খরস্রোতা ‘মরা খাল’ এখন  ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।  উপজেলার নাজিরহাটের বুক চিরে বয়ে গেছে এ খাল।  এটি দুইভাগে ভাগ হয়ে মাদ্রাসা, বিদ্যালয়, ঝংকার, ডাইনজুরী, পূর্ব ফরহাদাবাদ ও দক্ষিণ ধুরুং মৌজা ঘেঁষে কয়েকটি গ্রাম ভেদ করে প্রবাহিত হয়েছে। অন্তত তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এটির একটি শাখা খালে গিয়ে মিশেছে।
নাজিরহাটের মধ্যখান থেকে পূর্বদিকে প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে খালটি দখল করে গড়ে উঠেছে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা। এর কোনোটি বসতঘর আবার কোনোটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বাজার এবং ঝংকারের আশপাশে প্রতিনিয়ত অপরিকল্পিতভাবে অবাধে খালটি ভরাট করে বিলীন করা হচ্ছে, যা এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন কাগজপত্র তল্লাশি করে দেখা যায়- আরএস, বিএস খতিয়ান ও সিট মূলে এটি রেকর্ডীয় খাল। ভূমির শ্রেণিও দেখানো হয়েছে খাল। দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার। 
নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র এ কে জাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘বাজারের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম এটি। এক সময় খরস্রোতা ছিল। বর্তমানে এটিতে বিভিন্নভাবে আগ্রাসন চলছে। বাজারের পয়োপ্রণালি ও বর্জ্য এ খালে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া খালটির বিভিন্ন অংশ ভরাট হওয়ায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বিষাক্ত পানির আগ্রাসন বেড়েছে।

তিনি দাবি করেন, যে যার মতো করে দখলের ফলে খালটি নিজস্বতা হারিয়েছে। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। স্থানীয়রা জানান, প্রথমে খালের বিভিন্ন অংশে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়। পরে সেখানে নির্মাণ করা হয় বিভিন্ন স্থাপনা। এলাকাবাসীর মতে, প্রভাবশালীরাই এসব কাজে জড়িত। 
ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘যত দখল আর ভরাট এই খালে। অথচ বাজারের একমাত্র পানির উৎস এটি। এলাকাবাসীর স্বার্থে এটি রক্ষা করা দরকার। দখল, ভরাট ও দূষণ থেকে মুক্ত হওয়া জরুরি।
নাজিরহাট আদর্শ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ জালাল বলেন, ‘এখানে আবর্জনা ফেলার কোনো জায়গা নেই। ফলে বাজারের কিছু ব্যবসায়ী খালটিতে আবর্জনা ফেলে দূষণ করছে। এটি কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। নাজিরহাট ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তা জাকারিয়া বলেন, ‘খালটির কিছু অংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন। বাকি পুরোটাই খাল। আমরা নিয়মিত অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু তাতেও তারা দমে না।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে খালটি পূর্বের অবস্থায় ফেরাতে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে। এ ছাড়া অবৈধ দখলদার ও দূষণের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দখল, ভরাট ও বর্জ্য না ফেলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আছে। দ্রুত অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় এনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

×