ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বিজিবি ও র‌্যাবের টহল টিম মাঠে সতর্ক

অবরোধে যান চলাচল স্বাভাবিক, সড়কে ভয়াবহ যানজট

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:১৪, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

অবরোধে যান চলাচল স্বাভাবিক, সড়কে ভয়াবহ যানজট

দশম দফার অবরোধের প্রথমদিন বুধবার রাজধানীসহ সারাদেশে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল

বিএনপি ও জামায়াতসহ কয়েকটি দল ঘোষিত দশম দফার অবরোধের প্রথমদিন বুধবার রাজধানীসহ সারাদেশে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। সড়কে যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, মালবাহী ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের চাপ ছিল বেশি। মোটরসাইকেল, সিএনজি ও রিক্সা চলাচল ছিল চোখের পড়ার মতো। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজকর্ম স্বাভাবিক ছিল। বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমলে ক্রেতাসমাগম ছিল লক্ষণীয়। ঢাকা থেকে ছেড়ে গেছে দূরপাল্লার বাস। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সব মিলিয়ে অবরোধের কোনো লক্ষণ ছিল না রাজধানীতে। 
তবে কিছু জায়গায় অবরোধের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল থেকে গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি ও সমমনা দলের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর বাইরে কিছু স্থানে অবরোধকারীরা চোরাগোপ্তা হামলা চালায়। বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে ১৫৬ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাবের ৪২২ টহল দলসহ আইন প্রয়োগকারী একাধিক টিম সতর্ক পাহারায় ছিল। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় তিন পরিবহনে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা।
দশম দফা অবরোধের প্রথম দিন বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকারসহ সকল ধরনের যানবাহনের চাপ ছিল। এর ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা, কুড়িল, মহাখালী, তেজগাঁও, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, মৎস্যভবন, হাইকোর্ট, প্রেস ক্লাব এলাকায় সড়কে ভয়াবহ যানজট ছিল। মগবাজার চৌরাস্তা, ওয়্যারলেস গেট এলাকা, মৌচাক, মালিবাগ, বাড্ডা, মধ্যবাড্ডা, বসুন্ধরা, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার একই অবস্থা ছিল। সেগুনবাগিচা, নয়াপল্টন, পল্টন, কমলাপুর, মুগদা, সবুজবাগ এলাকার সড়কে গাড়ির জট দেখা গেছে। ভয়াবহ যানজটে আটকে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষার পর কর্মস্থল থেকে বাসস্থানে ফিরেছেন অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে গুলিস্তান, পুরনো ঢাকার বংশাল, সিদ্দিকবাজার, রায় সাহেববাজার, কোর্ট প্রাঙ্গণ, ভিক্টোরিয়া পার্ক, সদরঘাট, পাটুয়াটুলী, ইসলামপুরে কর্মজীবী মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। যাত্রীবাহী বাসগুলোতে যাত্রীদের ভিড় ছিল। সেখানে ভয়াবহ যানজট দেখা গেছে।
অপরদিকে নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি, আসাদগেট, শ্যামলী, গাবতলী মিরপুরে সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ট্রাফিক পুলিশকে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও এলাকায় যাত্রীবাহী বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনের জট দেখা যায়। এতে অবরোধের কোনো প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে গুলিস্তান, টিকাটুলী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, কাজলা, শনিরআখড়ায় ভয়াবহ যানজট দেখা গেছে। রাস্তায় রাস্তায় যানজটে নগরবাসীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। 
বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর চারটি বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে গেছে। বাসে যাত্রী আগের তুলনায় বেড়েছে বলে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন। তারা জানান, হরতাল-অবরোধ এখন ফেসবুক-ইউটিউবে সীমাবদ্ধ। ভোরে টুকটাক মিছিলের কথা শুনি, বাস্তবে তার উল্টো। অবরোধের কোনো লেশমাত্র নেই। মুখে অবরোধ। বাস্তবে উল্টো। সকালে ঢাকা-খুলনা রুটের পর্যটক পরিবহন, নবীনগর রুটের তিশা গোল্ডেন, গোপালগঞ্জ রুটের টুঙ্গিপাড়া পরিবহন, সিলেট ও সুনামগঞ্জ রুটের সুনামগঞ্জ এক্সপ্রেস, মিতালী এক্সপ্রেস, মামুন পরিবহন ও ইকোনো সার্ভিস, চট্টগ্রাম রুটের সিডিএম, মাদারীপুর রুটের সার্বিক পরিবহন, নোয়াখালী রুটে একুশে পরিবহন, হিমাচল পরিবহনসহ বিভিন্ন রুটের বাস গন্তব্যস্থলে ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।
খিলগাঁওয়ে স্টাফ বাসে আগুন ॥ বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলায় অগ্রণী ব্যাংকের স্টাফ বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
২৪ ঘণ্টায় তিন পরিবহনে আগুন ॥ মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনটি পরিবহনে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। এ নিয়ে সারাদেশে ২৫৬টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। বুধবার ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে মিডিয়া কর্মকর্তা শাজাহান শিকদার এ তথ্য জানান।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত সারাদেশে ২৫৬টি আগুনের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আড়াইশ যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনায় আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্স। আগুন দেওয়া যানবাহনের মধ্যে রয়েছে ১৫৫টি বাস, ৪৩টি ট্রাক, ২১টি কাভার্ড ভ্যান, ৮টি মোটরসাইকেল ও ২৩টি অন্যান্য গাড়ি।
আশুলিয়ায় বাসে আগুন ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, সাভার জানান,  সাভারের আশুলিয়ায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার সকাল দশটার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া এলাকায় ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন সকালে ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসযাত্রী নিয়ে রাজধানী ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বাসটি বাড়ইপাড়া এলাকায় পৌঁছলে বাসটিতে আগে থেকেই যাত্রীবেশে ওঠা দুর্বৃত্তরা বাসের পেছনের দিকে সিটে আগুন দিয়ে আগুন, আগুন, চিৎকার করতে করতে নেমে যায়। এ সময় অন্য যাত্রীরাও বাস থেকে নেমে যাওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। 
বগুড়ায় ট্রাকে আগুন ॥ স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস থেকে জানান,  বগুড়ায় বিএনপি ও সমমনাদের অবরোধে মঙ্গলবার রাতে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় দুর্বৃত্তরা একটি খড় বোঝাই ট্রাকে আগুন দিয়েছে। অবরোধে বগুড়ার সার্বিক জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক। সড়ক মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে। বিএনপি দ্বিতীয় বাইপাসের লিচুতলা ও ফণীর মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তবে শহর থেকে জেলার সর্বত্র হরতালের কোনো প্রভাব আগের মতোই ছিল না।
রাজশাহীতে রিজভীর নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল ॥ স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী জানান, ‘আত্মগোপনে’ থাকা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হঠাৎ রাজশাহী নগরে এসে ঝটিকা মিছিল করে আবারও মুহূর্তে হাওয়া হয়ে গেছেন। এ সময় তার সঙ্গে স্থানীয় ২০/২৫ জন নেতাকর্মী ছিলেন।
বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় রাজশাহীর নগরীর তেরোখাদিয়া শহীদ কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামের সামনের সড়কে ‘ঝটিকা’ মিছিল করেন তিনি। এ সময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী একতরফা নির্বাচন জনগণ হতে দেবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ আবারও একটি পাতানো নির্বাচনের পথ ধরে এগোচ্ছে। তারা (আওয়ামী লীগ) ভেবেছে ১৪ ও ১৮ সালের মতো সাজানো নির্বাচন করে পার পেয়ে যাবে। কিন্তু তা এবার হতে দেওয়া হবে না। সরকারের নীল নকশার এই নির্বাচন জনগণ যেকোনো মূল্যে রুখে দেবে। ভোটারবিহীন নির্বাচনের পরিকল্পনা জনগণ গুঁড়িয়ে দেবে।

নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে তালা ॥ বুধবারও নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলছিল। কার্যালয়ের দুপাশে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। দলটির কার্যালয়ে কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘাতের পর ৪০ দিন ধরে তালা ঝুলছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। বিএনপির নেতারা বলছেন, গ্রেপ্তার এড়াতেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসছেন না দলটির নেতা-কর্মীরা। 
বিএনপির ঝটিকা মিছিলে গাড়ি ভাঙচুর ॥ বুধবার দুপুরে গুলশান-১ থেকে গুলশান-২ অভিমুখে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি আকতারুজ্জামান আক্তার, নাছির উদ্দিন নাছির, যুগ্ম-সম্পাদক এম এম মুসা, রিয়াদ রহমান, মনজুরুল আলম রিয়াদ, সহসাধারণ সম্পাদক আহি আহমেদ জুবায়ের, জুয়েল হাসানসহ ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও কর্মীরা। এ ছাড়া রাজধানীর সেগুনবাগিচা-বারডেম-২ হাসপাতালের সামনের সড়ক, কমলাপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এ ছাড়া  দুপুর ১২টার দিকে পুরানা পল্টন থেকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নেতাকর্মীরা অবরোধ সমর্থনে মিছিল করে। মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে ফকিরাপুল, বিএনপি অফিস হয়ে বিজয়নগর আলরাজির সামনে শেষ হয়। এ সময় এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নেয়ামূল বশিরের নেতৃত্বে মিছিলে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য আওরঙ্গজেব বেলাল, এসএম মোরশেদ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাহে আলম চৌধুরী প্রমুখ ছিলেন।
ককটেলের ব্যবহার বেড়েছে ॥ হরতাল-অবরোধে ককটেলের ব্যবহার বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) ড. খ. মহিদ উদ্দিন। বুধবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
৩০ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়সহ ২১টি স্থানে ‘সিরিয়াল ককটেল নাশকতা ও অগ্নিসংযোগের’ মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে আশিকুর রহমান পান্না, পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল, সুমন হোসেন রনি ও বিল্লাল হোসেন। মঙ্গলবার গভীররাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ও ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ড. খ. মহিদ উদ্দিন জানান, গত ৩০ নভেম্বর বিভাগীয় কমিশনার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার নির্বাচনী আসনগুলোর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের পাশে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেদিন ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। বিকেল ৩টার একটু পরে রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসের পাশে দুই-তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনার পর ডিএমপির কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর প্রেক্ষিতে এনবিআর অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সন্দেহাতীতভাবে সঠিক ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে আমরা কাজ করি। এরই ধারাবাহিকতায় আশিকুর রহমান পান্না ও পল্টন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা ভয়ংকর তথ্য দিয়েছেন। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ছাড়াও তারা দুজন আরও আটটি ঘটনা ঘটিয়েছেন। এ ছাড়া রমনার বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন হোসেন রনি ও বিল্লাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ১২টি ঘটনা সফলভাবে ঘটিয়েছেন। এ নিয়ে এই চারজন সর্বমোট ২১টি ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু মামলা রয়েছে। আরও কোনো ঘটনায় জড়িত কি না এবং তাদের পেছনে কারা রয়েছে, তাদের আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করব।
ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হরতাল-অবরোধে যে নাশকতা কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা হচ্ছে, এর বড় একটি অংশ আমরা এক্সিকিউট (সম্পাদন) করতে দিইনি। তারপরও কিছু ঘটনা ঘটেছে।
বিভিন্ন ঘটনার সময় আমরা হাতেনাতে ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় যাদের নাম আসছে, তাদের গ্রেপ্তার করেছি। যাতে কোনো নিরীহ কেউ ভুক্তভোগী না হন, সেজন্য নিশ্চিত না হয়ে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
তিনি জানান, কম হলেও আমরা কোয়ালিটি অ্যারেস্ট করতে পেরেছি। তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করতে না পারলেও তদন্তে কারও নাম এলে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা যে কোনোভাবে মহানগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধের প্রথমদিকে ককটেলের ব্যবহার কম ছিল। কিন্তু গত ২ সপ্তাহ ধরে ককটেলের ব্যবহার বাড়ছিল। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ককটেলের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ আহ্বান করে, তাদের উদ্দেশ্য সর্বসাধারণকে ভীতসন্ত্রস্ত করা।

এজন্য তারা এ ধরনের কাজ করছে। তারা গ্রেপ্তারের ভয়ে এসব করার জন্য ভাড়া নেয়, তারা আবার খাবার-টাকার বিনিময়ে কাউকে ভাড়া করে এসব ঘটনা ঘটায়। এ ছাড়া দলে একটা অবস্থান করে দেওয়া হবে, এ ধরনের আশ্বাসে তাদের দিয়ে নাশকতা করানো হচ্ছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছদ্মবেশে-যাত্রীবেশে কোনো বাসে আগুন দিলে তা প্রতিরোধ করা কষ্টসাধ্য। কোনো একটি স্থানে আগুন দেওয়া সেকেন্ডের বিষয়। তারপরও হাতেনাতে তদন্তে অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু তারা পরিস্থিতিকে যে ভয়াভহ রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তা পারেনি।

সাইবার জগৎ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের বিচরণ। আমাদের সাইবার প্যাট্রোলিং চলছে। কেউ যদি সাইবার স্পেসে নাশকতার পরিকল্পনা করে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঘোষিত মানববন্ধন কর্মসূচির অনুমতির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

×