ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সেতু নয়, সেতুর কঙ্কাল এখন মরণফাঁদ 

নিজস্ব সংবাদদাতা,বাকেরগঞ্জ বরিশাল

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ৯ জুন ২০২৩

সেতু নয়, সেতুর কঙ্কাল এখন মরণফাঁদ 

কাটাদিয়া খালের উপর নির্মিত জরাজীর্ণ সেতু।

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পাদ্রীশিপুর ইউনিয়নের ছাব্বিশ ঘর গ্রামের কাটাদিয়া খালের উপর নির্মিত জরাজীর্ণ সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে। সেতুটির ওপর স্ল্যাব না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা এর নাম দিয়েছেন কঙ্কাল সেতু। প্রায় এক যুগ ধরে সেতুটির এই হাল হলেও নতুন সেতু নির্মাণ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তৎকালীন বাকেরগঞ্জের সংসদ সদস্য সৈয়দ মাসুদ রেজার আমলে ছাব্বিশ ঘর গ্রাম ও ভরপাশা গ্রামের সাথে সংযোগ এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় দুই যুগ আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর আয়রন সেতুটি নির্মাণ করে। এই সেতু পারাপার হয়ে প্রতিদিন দুই গ্রামের শত শত শিক্ষার্থীরা প্রায় দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করে। এই জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দিয়ে চলাচল করে কালিগঞ্জ হাট, কাঁঠালতলিরহাট, চেয়ারম্যান হাট, বিসমিল্লাহর হাট, কানকিরহাট,গাজীর হাট, নুরনগর বাজারসহ আটটি হাটে দুই গ্রামের মানুষ চলাচল করে। অথচ সংস্কারের অভাবে সেতুটি এখন চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে রয়েছে। শুধু দাড়িয়ে আছে সেতুর কঙ্কাল। 

সরেজমিনে দেখা যায়, নড়বড়ে ও ভেঙে যাওয়া সেতুর সিমেন্টের ঢালাই দেয়া স্লিপারের বেশির ভাগই ভেঙ্গে পড়ে গিয়েছে। ক্রস এ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এক যুগ আগেই। স্থানীয়রা লোহার এ্যাঙ্গেলগুলো ওপর কাঠের মাচা তৈরি করে বেঁধে দিয়েছে। সেতুর বিভিন্ন অংশের স্লিপার ভেঙ্গে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। সেতুর ক্রস এ্যাঙ্গেল গুলো মরিচা ধরে বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে গেছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সেতুটি সামনে দাঁড়ালে দেখা যায় লতা পাতা আর জঙ্গলে ঘিরে রেখেছে সেতুটিকে। 

স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেতুটি নির্মাণ কিংবা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়নি এখনও। সেতুটির দুই পাশে পাকা রাস্তা থাকলেও কোন যান বাহন সেতুটি দিয়ে না চলায় গর্ভবতী মা কিংবা মুমুর্ষ বয়স্ক রোগীদের নিয়ে পড়তে হয় মহা বিপাকে। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া দুরহ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের বাড়িতে বসেই মৃত্যুর প্রহর গুনতে হয়। চরম দুর্ভোগে পড়ে এই অঞ্চলের কৃষকেরা। 

কৃষকদের  উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিয়ে আসতে কোনো প্রকার পরিবহন সেতু পার হতে পারে না। মাথায় নিয়ে বহন করতে হয় ধান চালসহ গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি। সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুটি পুনঃনির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। 

উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া জানান, বর্তমানে আয়রন সেতু নির্মাণের প্রজেক্ট হাতে নেই। তবে এই সেতুগুলো একটি নতুন প্রোজেক্টে দেয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি সেতুটি যাহাতে নতুন করে দ্রুত নির্মাণ করা যায়।

এমএম

×