ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

ট্রেন দুর্ঘটনা রুখে দেবে ডিজিটাল রেলক্রসিং

প্রকাশিত: ২০:৪০, ২৭ নভেম্বর ২০২২

ট্রেন দুর্ঘটনা রুখে দেবে ডিজিটাল রেলক্রসিং

ডিজিটাল রেল ক্রসিং

যশোরে চার বন্ধু মিলে উদ্ভাবন করেছে ডিজিটাল রেল ক্রসিং। এতে ট্রেন আসার আগে রেল ক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেমে যাবে; প্রয়োজন হবে না গেটম্যানের। ফলে ট্রেন দুর্ঘটনা রুখে দেবে ডিজিটাল রেলক্রসিং।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) যশোর সদর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় এ উদ্ভাবনটি প্রদর্শন করে চার স্কুলছাত্র।

সাজিন আহম্মেদ জয়, এম রোকনুজ্জামান, তাহামিদ মৃধা ও এসএম বায়েজিদ এটি উদ্ভাবন করেছে। তারা যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির দশম শ্রেণি ছাত্র। ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে তাদের তৈরি প্রজেক্টটি।

প্রজেক্টের দলনেতা সাজিন আহম্মেদ জয় জানায়, বিদ্যালয়ের পাশে একটি রেল ক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা দেখে তারা চার বন্ধু মিলে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের উদ্যোগ নেয়। তারাই নিজেরাই প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ইলেকট্রিক কিট সংগ্রহ করেছে।

প্রজেক্টটিতে ব্যবহার করা হয়েছে আরডিনো, আল্ট্রাসনিক সেন্সর, জাম্পার ওয়্যার, ব্রেড বোর্ড, সার্বো মোটর এবং বিদ্যুৎ সংযোগ। এটি তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা।

প্রজেক্টটিতে দেখা যায়, রেল ক্রসিংয়ের কিছু দূরে স্থাপন করা হয়েছে আল্ট্রাসনিক সেন্সর। ট্রেনের উপস্থিতি শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয় মোটরের মাধ্যমে রেল ক্রসিংয়ের ব্যারিয়ার নেমে যাচ্ছে। আবার ট্রেন চলে গেলে পুনরায় ব্যারিয়ারটি উঠে যাচ্ছে।

শুধু তাই নয়, ট্রেন আসার সংকেত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে সাংকেতিক বাতি। আর এ প্রযুক্তিটি সঞ্চালিত হচ্ছে সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক উপায়ে। ফলে প্রয়োজন হচ্ছে না গেটম্যানের।

রূপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির প্রধান শিক্ষক বিএম জহুরুল পারভেজ বলেন, আমার স্কুলের পাশে একটি রেলক্রসিং রয়েছে। সেখানে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। এ বিষয়টি আমার বিদ্যালয়ের ছাত্রদের নজরে এসেছে এবং তারা উদ্যোগ নেয় যে এবারের ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে নতুন কোনো প্রজেক্ট উদ্ভাবন করবে।

তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক কিট সংগ্রহ করে ডিজিটাল রেল ক্রসিংটি উদ্ভাবন করেছে। সরকার যদি এটি উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারে তাহলে ট্রেন দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।

যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে রূপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির ডিজিটাল রেল ক্রসিং প্রজেক্টটি প্রথম স্থান অর্জন করেছে। শিক্ষার্থীদের আবিষ্কৃত এ প্রজেক্টটি যদি সরকার বাস্তবায়ন করতে পারে তাহলে জনসাধারণের জন্য অনেক নিরাপদ হবে। রেল দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমে যাবে।

এর আগে শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী।

যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলসহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা।

 

 

এমএস

×