ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কমিটিতে দুজনকে সভাপতি, সেক্রেটারি পদেও দুজন, সমালোচনার ঝড়

অনলাইন রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ৪ অক্টোবর ২০২২; আপডেট: ২০:০৪, ৪ অক্টোবর ২০২২

কমিটিতে দুজনকে সভাপতি, সেক্রেটারি পদেও দুজন, সমালোচনার ঝড়

জেপি’র লোগো

পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলায় ১০২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি (জেপি)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলটির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব এই কমিটির অনুমোদন দেন। যেখানে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি রাজনৈতিক দল এক উপজেলায় ২ জন সভাপতি ও ২ জন সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেছে। যা নিয়ে স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনা, সমালোচনা ও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। 
কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে মনিরুল হক মনি জোমাদ্দারকে আর কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি করা হয়েছে মাহিবুল হোসেন মাহিমকে। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান টুলুকে উপদেষ্টা সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দিয়ে নতুন করে আতিকুল ইসলাম উজ্জ্বল তালুকদারকে করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক। একই কমিটিতে কিভাবে দুই জন সভাপতি ও দুজন সাধারণ সম্পাদক হয়, এ নিয়ে দলের মধ্যে ইতিমধ্যেই ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপশি নবনির্বাচিত সভাপতি মনিরুল হক মনি জোমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম উজ্জল তালুকদারের পরিবার গহিত অপরাধে জড়িত থাকার পরেও কিভাবে মহাজোটের শরিক একটি দলের কমিটিতে স্থান পেল তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। 
উপজেলার যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. আজিজ শিকদার ও ভান্ডারিয়ার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খান এনায়েত করিম এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, কমিটির কয়েকজন বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এদের কমিটিতে রাখায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। শুধু তাই নয়; কমিটিতে থাকা বেশ কয়েকজনের বাবা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পূর্ব পাকিস্তান ভান্ডারিয়া উপজেলা শান্তি কমিটির (পিস কমিটি) তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন বলেনও অভিযোগ তাদের। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাদের উদ্দেশ্য ছিল- বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধরত বাঙালি মুক্তিবাহিনীকে দমন করা। সে সময়ের শান্তি কমিটির বিভিন্ন অফিসিয়াল কাগজে তাদের সিল সম্বলিত সাক্ষর করা নথি রয়েছে বলেও দাবি অভিযোগকারীরা। 
রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভান্ডারিয়ায় তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন এবং ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগের অপরাধমূলক ঘৃণ্য কার্যকলাপ দ্বারা নিরীহ মানুষের উপর যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত করেছিলেন। সেই রাজাকার ও শান্তি বাহিনীর সক্রিয় সদস্যদের সন্তানদের দিয়ে কিভাবে মহাজোট সরকারের সমর্থিত দল জাতীয় পার্টি (জেপি)’র উপজেলা কমিটি হয়, তা নিয়ে মুক্তযোদ্ধারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একই কমিটিতে দুই জন সভাপতি ও দুই জন সাধারণ সম্পাদক করার বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার থেকে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার ঝড় চলছে। কেউ কেউ প্রকাশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছেন। 
এর আগে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর জেপির নবনির্বাচিত এক নেতার নারী কেলেঙ্কারির পৃথক দু’টি আপত্তিকর ভিডিও এবং একটি অডিও ফাঁস হয়। যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য তখন থেকেই জেপির এক অংশ ওই নেতার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল। 
এসব ব্যাপারে জেপি’র নতুন কমিটির মনিরুল হক মনি জোমাদ্দার ও আতিকুল ইসলাম তালুকদারের সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ফোন ধরেননি।

এমএস

×