ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

হাড়িপাড়ার নারীরাই প্রতিমা গড়ে উৎসবে মেতেছেন

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী

প্রকাশিত: ০০:১৯, ৩ অক্টোবর ২০২২; আপডেট: ১১:২৫, ৩ অক্টোবর ২০২২

হাড়িপাড়ার নারীরাই প্রতিমা গড়ে উৎসবে মেতেছেন

নারায়াণগঞ্জ শহরের টানবাজার সাহাপাড়ার এলাকায় ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো মন্ডপ

গ্রামটির প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষরা পেশায় ঢুলি। দুর্গাপূজার এই সময়ে ঢাক বাজাতে তারা ছুটে গেছেন বিভিন্ন স্থানের পূজামন্ডপে। বলা যায়, গ্রামটি এখন প্রায় পুরুষশূন্য। তাই বলে কী থেমে থাকবে পূজা-পার্বণের আয়োজন? না, থেমে যায়নি। ১৫ বছর ধরে গ্রামটিতে শারদীয় দুর্গাপূজার সব আয়োজন করছেন নারীরাই। নিজেরাই গড়েছেন প্রতিমা। পুরোহিত, ঢুলি সবাই নারী। সুন্দর সাজসজ্জায় গড়ে তোলা হয়েছে পূজামন্ডপ। সেখানে চলছে পূজা-অর্চনা।
রবিবার ছিল মহাসপ্তমী পূজা। সরেজমিনে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নবপত্রিকার স্নানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় মহাসপ্তমীর শারদীয় দুর্গাপূজার পর্ব। পুকুরে শুরু হয় কলাবউ স্নানের পর্ব। আয়োজকরা শোভাযাত্রা করে কলাবউ স্নান করাতে নিয়ে আসেন পুকুর পাড়ে। সকাল থেকেই তা দেখার জন্য অনেক ভক্ত ভিড় করেন। নব পত্রিকা স্নান রীতি মেনে কলাগাছে প্রথমে হলুদ মাখানো হয়। তারপর করানো হয় কলাবউ স্নান। একজন নারী ঢাক বাজাচ্ছেন। আর শত শত নারী ছুটে আসছেন পূজা দেখতে।
সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের হাড়িপাড়া গ্রাম। এখানকার পুরুষরা ঢাক-ঢোল বাজাতে বিভিন্ন পূজামন্ডপে দায়িত্ব পালন করতে গ্রাম ছেড়েছে। মূলত ৩০ পরিবারের এই পাড়ার সনাতন ধর্মের এই মানুষগুলো ঢোল বাজিয়ে ও বাঁশ দিয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।  হাড়িপাড়া পূজা উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক গীতা রানী জানান, আমাদের স্বামীরা পেশায় ঢুলি। তারা ঢাক বাজানোর জন্য এ সময়টায় নানা জায়গা থেকে আমন্ত্রণ পান। ফলে এ গ্রামের নারীদেরই পূজার সব আয়োজন করতে হয়। তিনি জানালেন ১৫ বছর ধরে আমরা নারীরাই পূজার আয়োজন করে আসছি।

নারায়ণগঞ্জে পাট ও মৃৎশিল্পের ছোঁয়ায় ঝলমলে মন্ডপ

স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, উনিশ বছর ধরেই নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার সাহাপাড়া এলাকার পূজামন্ডপটি ভিন্ন আঙ্গিকে সাজানো হচ্ছে। এবার সাজানো হয়েছে বাংলার ঐতিহ্য পাট, চট, বাঁশ ও মৃৎশিল্পের কারুকাজ দিয়ে। প্রায় সাড়ে চার মাস সময়  লেগেছে এ পূজামন্ডপটি সাজাতে। পূজামন্ডপের গেট থেকে শুরু করে পুরো মন্ডপটি এবার পাট, চট, বাঁশ ও মৃৎশিল্পের ছোঁয়ায় ঝলঝল করছে। দূর-দূরান্ত থেকে এ পূজাম-পটি দেখতে দর্শণার্থীরা ছুটে আসছেন। পুরো জেলায় এবার দুইশ’ আঠারোটি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
 জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, এ বছর নারায়ণগঞ্জ জেলার ৭টি থানায় ২১৮টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় ৪২টি, ফতুল্লায় ২৮টি, সিদ্ধিরগঞ্জে ৭টি, বন্দরে ২৭টি, সোনারগাঁয়ে ৩৩টি, আড়াইহাজারে ৩৩টি ও রূপগঞ্জে ৪৯টি পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজায় উপচেপড়া ভিড় পড়েছে। শনিবার রাতে শহরের সাহাপাড়া পূজামন্ডপে সরেজিমন গিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
টানবাজার সাহাপাড়া সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির অর্থ সম্পাদক বিপ্লব বসু বলেন, গত ১৯ বছর ধরে এ পূজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করে আসছি। প্রতিবছর শুরু থকেই শারদীয় দুর্গাপূজায় দর্শণার্থীদের ভিন্ন একটি কিছু দেয়ার জন্য চেষ্টা করে আসছি। এবার বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করে চেষ্টা করেছি নতুনত্ব কিছু উপহার দেয়ার জন্য। আমাদের এখানে দেশের ঐতিহ্য পাটশিল্পের কিছু কারুকাজ রয়েছে, রয়েছে মৃৎশিল্পের কিছু কারুকাজ। এছাড়াও রয়েছে বাঁশের কাজও। আমাদের সংস্কৃতি ও গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য আমাদের প্রয়াসটি অব্যাহত  রেখেছি। প্রায় সাড়ে চার মাস সময় লেগে আমাদের পুরো পূজাম-পটি সাজাতে। এখানে ১০ জন কারিগর কাজ করেছেন।

বাগেরহাটে এক মন্ডপে ১৫১ প্রতিমা

স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট থেকে জানান, এ বছর চুলকাঠি বনিকপাড়া মন্দিরে ১৫১ প্রতিমা নিয়ে জেলার বৃহৎ শারদীয়া দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রংতুলির আঁচড়ে সুনিপুণ ভাস্কর্যে মা দুর্গার ৯ রূপের পাশাপাশি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সনাতন ধর্মের পৌরাণিক কাহিনী। সঙ্গে অপরূপ সাজসজ্জা। সব মিলিয়ে মনোমুগ্ধকর আয়োজন। তাই এ মন্ডপ ঘিরে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বত্র সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার। বাড়তি উচ্ছ্বাসের। শিশু থেকে বৃদ্ধ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে রং-বেরঙের বাহারি পোশাকে দলে দলে আসছেন পূজারী-ভক্ত-দর্শনার্থীরা।
এবার জেলায় ৬৬৩টি মন্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৬৮টি চিতলমারী, মোল্লাহাটে ৮৪টি, মোরেলগঞ্জে ৭৭টি, ফকিরহাটে ৬৮টি, কচুয়ায় ৪৪, রামপালে ৪১, মোংলায় ৩৭, শরণখোলায় ২৮ এবং সদর উপজেলায় ১১৬টি মন্ডপ রয়েছে।

 

×