
পিস্তলসহ গ্রেফতার সাজাপ্রাপ্ত আসামি
দীর্ঘ একুশ বছর দেশে ও বিদেশে পালিয়ে থাকার পর অবশেষে নারায়ণগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি জাকির খানকে (৪৯) বিদেশী পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। শুক্রবার রাতে ঢাকার ঢাকার ভাটারা থানার বসুন্ধরা এলাকা থেকে জাকির খানকে গ্রেফতার করা হয়। জাকির খান নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। শনিবার দুপুরে র্যাব-১১’র ব্যাটেলিয়ন সদর দফতরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে র্যাব-১১’র অধিনায়ক (সিও) লেঃ কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে র্যাব-১১’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা জানান, নারায়ণগঞ্জের এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী, একচ্ছত্র, ক্ষমতার অধিকারী আন্ডার ওয়ার্ল্ডের গডফাদার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচিত নাম জাকির খান। যার নামে ৪টি হত্যাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে এবং বিভিন্ন সময়ে তিনি এ সকল মামলায় জেল খাটেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি আরও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন। এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জের দেওভোগ এলাকায় বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে দেওভোগ এলাকার অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পিছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শহরের ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যাকান্ডের পরে তিনি দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। এ সময়ে বিভিন্ন মামলায় বিজ্ঞ আদালতে জাকির খান দোষী সাব্যস্থ হলে বিজ্ঞ আদালত তাকে সাজা প্রদান করেন। এরপর থেকেই গ্রেফতার এড়াতে জাকির খান দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন। তিনি আরো জানান, দীর্ঘদিনের পলাতক এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের গ্রেফতারে র্যাব-১১’র ধারাবাহিক কার্যক্রমের প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিন পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জাকির খানের বিষয়ে র্যাব-১১ খোঁজ-খবর শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে র্যাব-১১’র নারায়ণগঞ্জের একটি বিশেষ অভিযানে ঢাকার ভাটারা থানার বসুন্ধরা এলাকা হতে ১টি বিদেশী পিস্তলসহ জাকির খানকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-১১’র অধিনায়ক আরো জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামী জাকির খানের বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে সন্ত্রাসমূলক অপরাধ দমন বিশেষ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় আসামী জাকির খানের ১৭ বছরের সাজা হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে তার সাজা কমে ৮ বছর হলেও তিনি গ্রেফতার এড়াতে দেশে ও বিদেশে প্রায় ২১ বছর পলাতক ছিলেন। মূলত ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যা মামলায় আসামী হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, তিনি দীর্ঘ দিন থাইল্যান্ডে আত্মগোপনে ছিলেন এবং সম্প্রতি ভারত হয়ে তিনি বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে তিনি পরিচয় গোপন করে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করছিলেন।
টিএস