ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

দিনাজপুরে মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নানযাত্রা

প্রকাশিত: ০১:২৪, ৭ আগস্ট ২০১৭

দিনাজপুরে মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নানযাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরে প্রতি বছরের মত এ বছরও যথাযোগ্য মর্যাদা, পুজার্চনা ও ধর্মীয়-ভাবগাম্ভির্যের মধ্যদিয়ে শেষ হলো হিন্দু ধর্মালম্বীদের ৩ দিনব্যাপী ৪৪তম মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নানযাত্রা উৎসব। আয়োজকরা জানান, মূলত দেশ ও দেশের শান্তি কামনা ও শিব ঠাকুরকে রাজি-খুশি করতে প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে ঝুলন যাত্রা থেকে রাখি পূর্নিমার মাঝে সোমবার তিথিতে এই কৈলাশপতির মহাস্নানযাত্রা উৎসব পালন করেন হিন্দু ধর্মালম্বীর নারী-পুরুষরা। ৫ আগস্ট শনিবার রাতে হাজার হাজার ভক্ত-পূন্যার্থী বাসযোগে দিনাজপুর শহর হতে ৩৪ মাইল দুরে বীরগঞ্জ উপজেলাধীন মহুয়গাঁ গ্রাম শশ্মান ঘাট মন্দির সংলগ্ন পূনর্ভবা নদীর উত্তর মুখি প্রবাহিত জল সংগ্রহ করতে যায়। সেখানে রাতব্যাপী কীর্ত্তন চলে। পরদিন ৬ আগস্ট রবিবার ভোরে উত্তর মুখি প্রবাহিত জল সংগ্রহ করতে নদীতে নেমে পড়েন হাজার হাজার নারী-পুরুষ। সুর্য্য দেবতাকে প্রনাম করে সেই জল সংগ্রহ করে সেখানে অবস্থিত শিব মন্দিরে জল ঢেলে পুনরায় একই নিয়মে জল সংগ্রহ করে সেখানকার পুরোহীত দ্বারা সেই জল পবিত্র করে শহরের আনন্দ সাগরস্থ শ্রী শ্রী গোষ্ঠধাম প্রাঙ্গনে শিব মন্দিরের উদ্দেশ্যে খালি পায়ে যাত্রা শুরু করেন। সেখানকার পুরোহিত মাখনলাল চক্রবর্তী ও প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী জানান, প্রতি বছর এই মহুয়া নদীতে হাজার হাজার ভক্ত-পুন্যার্থীরা পুন্য জল সংগ্রহ করতে যান। পরে ৩৪ মাইল রাস্তা খালি পায়ে হেটে শহরের চকবাজারস্থ শীতলা মন্দিরে পৌছায় সন্ধ্যার সময়। ৭ আগস্ট সোমবার দিনাজপুর শহরের আনন্দ সাগরস্থ শ্রী শ্রী গোষ্ঠধাম প্রাঙ্গনে শিব মন্দিরে সেই সংগ্রহকৃত পূণ্যজল শিব ঠাকুরের মাথায় ঢেলে এই মহাস্নানযাত্রা উৎসব সম্পন্ন করেন ভক্ত ও পূন্যার্থীরা। অপরদিকে একই নিয়মে আনন্দ সাগর হতে ৭ মাইল পূর্বে অবস্থিত কাঁউগাঁও-সাহেবগঞ্জ হাট সংলগ্ন আত্রাই নদীর উত্তরামূখি প্রবাহিত পুণ্যজল সংগ্রহ করেন হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভক্তবৃন্দ। সেখানে থেকে পুন্যজল সংগ্রহ করে খালি পায়ে হেটে আনন্দ সাগরস্থ মন্দির অভিমুখে যাত্রা করেন তারা। দুই দিক থেকে পুন্যজল সংগ্রহ করার পর ভক্ত-পুন্যার্থীরা রাতে আনন্দ সাগরস্থ শ্রী শ্রী গোষ্ঠ ধামে অবস্থান করেন। পরদিন ভোরে শিব ঠাকুরের মাথায় জল ঢেলে পূজা-অর্চনা করা হয়। সকালে ভক্তদের মাঝে প্রসাদ বিতরন করা হয়। ‘বলে বোম কমিটি’র সাধারন সম্পাদক অশোক আগরওয়ালা জানান, দিনাজপুরে ১৯৭৪ সালে এই মহাস্নানযাত্রা উৎসব শুরু হয়। পরে প্রতি বছর এই উৎসব পালন করা হয়। এটিই বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ কৈলাশপতির মহাস্নানযাত্রা কমিটির সদস্য সন্তোষ আগরওয়ালা বলেন, আমরা এই পুজা পরিচালনা করছি ৪৪ বছর ধরে। প্রথম ১১ জন থেকে শুরু করে আজ প্রায় লক্ষাধিক ভক্ত-পুন্যার্থীর সমাগম ঘটেছে।
×