ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

ক্যান্ডিতেও দূরন্ত তাসকিন

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৫৫, ৯ জুলাই ২০২৫

ক্যান্ডিতেও দূরন্ত তাসকিন

শ্রীলঙ্কার ইনিংস বড় স্কোরের পথে থাকলেও শেষ দিকে তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ ও শামীম হোসেন পাটোয়ারীদের আটসাঁট বোলিংয়ে থেমে যায় ২৮৫ রানে। ৪৬.৫ ওভারে যখন ৭ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা, তখনও বোর্ডে ৩০০ ছোঁয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু শেষ ৪১ বলে মাত্র ৪৪ রান তুলেই হারায় ৪ উইকেট। শেষ ১০ ওভারে আসে ৬৩ রান, কিন্তু সেই পথে পতন ঘটে ৪ উইকেটেরও।

তাসকিন ও মিরাজ নেন দুটি করে উইকেট, একটি করে শিকার তানভীর ইসলাম, শামীম হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিবের। কলম্বোতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৪ উইকেট নেওয়ার পরও ইনজুরি কনসার্ন থাকায় দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্রামে রাখা হয়েছিল তাসকিনকে। ক্যান্ডিতে সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে ফিরেই ফের জ্বলে ওঠেন অভিজ্ঞ এ ডানহাতি পেসার। ১০ ওভারে ৫১ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। অধিনায়ক মিরাজও নিয়েছেন ২ উইকেট। এরপরও লঙ্কানদের চ্যালেঞ্জিং স্কোরের রুপকার কুসল মেন্ডিস। ১১৪ বলে ১৮ চারে ১২৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন এ লঙ্কান। 
চোট-আঘাত মাঝে মধ্যে তাঁর ছন্দে ব্যাঘাত ঘটালেও, বদলে যাওয়া তাসকিনের বোলিংয়ের ধারাবাহিকতা থেমে নেই। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাঁর গতিময় নিয়ন্ত্রিত বোলিং বাংলাদেশের পেস আক্রমণের ভরসার নাম। পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে কমপক্ষে ১৫০ ওভার বল করেছেন, এমন পেসারদের তালিকায় ইকোনমি রেটের দিক দিয়ে সবার ওপরে তাসকিন আহমেদ। মঙ্গলবারের ম্যাচটি হিসেবের বাইরে রেখে ২৭ ইনিংসে ৪.৮৭ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৪৬ উইকেট। এই সময়ে তাসকিনের চেয়ে ম্যাট হেনরি ৩টি উইকেট বেশি নিলেও তাঁর ইকোনমি তাসকিনের চেয়ে বেশিÑ৫.১৫।

কাগিসো রাবাদা ৫.৩২ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট। আর হ্যাজলউড ও সিরাজ ৩০ ও ৪৭ উইকেট নিলেও তাদের ইকোনমি আরও বেশিÑ৫.৩৮ ও ৫.৪১। এ দিন টস হেরে বোলিং পায় বাংলাদেশ। শুরুতেই আঘাত হানেন তানজিম সাকিব। নিশান মাদুশকাকে স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান। দ্বিতীয় উইকেটে পাতুম নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস ৫৯ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়ে দলকে সামাল দেন। তবে তানভীর ইসলামের করা বল লং স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ারে পারভেজ হোসেন ইমনের হাতে ধরা পড়েন নিশাঙ্কা (৪৭ বলে ৩৫)। কামিন্দু মেন্ডিস মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হলে ১০০ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় লঙ্কানরা। এরপর ইনিংস গুছিয়ে নেয় মেন্ডিস–আসালঙ্কা জুটি। চতুর্থ উইকেটে দুজন গড়েন শতরানের জুটি। ৬০ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন আসালঙ্কা, আর ৯৫ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন কুসল। 
তবে হাফসেঞ্চুরি করে থেমে যেতে হয় আসালঙ্কাকে। ব্যক্তিগত ৫৮ রানে মিরাজের বলে হিট উইকেট হন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক। এরপরই শামীম হোসেন নিজের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড করে ফেরান শতক করা কুসল মেন্ডিসকে। ক্যারিয়ারের ১৪৬তম ওয়ানডেতে কুসলের এটি ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। হাফ সেঞ্চুরি আছে ৩৪টি। আগের বলেই পয়েন্টে ভেল্লালাগের ক্যাচ ধরার চেষ্টায় দ্বিধা ছিলÑতাই কুশলের আউট নিয়ে ছিল বাড়তি উচ্ছ্বাস। দুনিথ ভেল্লালাগেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১২ রানে। তাসকিনের বলে কভারে শামীমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর যদিও আর উইকেট হারায়নি লঙ্কানরা, তবে শেষ তিন ওভারে মাত্র ২৫ রান আসায় ইনিংস থেমে যায় ৫০ ওভারে ২৮৫ রানে। স্বাগতিকরা যে তিনশ’ করতে পারেনি এ জন্য বোলারদের ডেথ ওভারের দারুণ বোলিং প্রশংসিত। তবে আসল পরীক্ষাটা ব্যাটিংয়ে। কারণ আগের দুই ম্যাচেই আড়াইশ’র নিচে গুটিয়ে গিয়েছিল মিরাজের দল। ২৪৫ রানের লক্ষ্যে ১৬৭ রানে অলআউট হয়ে প্রথম ম্যাচে হার ৭৭ রানে। আর ২৪৮ রান করে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় ১৬ রানে। ৫ উইকেট নিয়ে যেখানে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম।

×