
মঙ্গলবার মোহাম্মদ আলী বক্সিং রিংয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন জিনাত ফেরদৌস (বাঁয়ে) ও আসিয়া খাতুন
প্রথমবার বাংলাদেশে এসেই স্বর্ণসাফল্যের দ্বোরগোড়ায় পৌঁছে গেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বক্সার জিনাত ফেরদৌস। মঙ্গলবার জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। প্রত্যাশিতভাবেই ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনালে উঠেছেন। মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে আজ ফাইনাল অর্থাৎ স্বর্ণপদকের লড়াইয়ে জিনাতের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের বোন আফরা খন্দকার তূর্য।
জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে এবারই প্রথম অংশ নিচ্ছেন জিনাত। খেলছেন নরসিংদীর গুডওয়েল বক্সিং ক্লাবের হয়ে। তবে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক আসরে আগেই অভিষেক হয়েছে তার। গত বছর এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে নেলসন ম্যান্ডেলা আন্তর্জাতিক বক্সিংয়ে এলিট ৪৮ থেকে ৫০ কেজি লাইট ফ্লাইওয়েট ক্যাটাগরিতে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন জিনাত। পর্তুগালে ব্রাগা ওপেন বক্সিংয়েও নিজের ইভেন্টে হন সেরা। পোল্যান্ডে আরেকটি আন্তর্জাতিক আসরে ব্রোঞ্জ জয় করেন।
এবারের জাতীয় বক্সিং নিয়ে মিডিয়াকর্মীদের আগ্রহ ব্যাপক। কেননা এবার মার্কিন প্রবাসী জিনাত ফেরদৌস খেলছেন। মঙ্গলবার ৫২ কেজি ওজন শ্রেণিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আসিয়া খাতুনকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছেন তিনি। ৫২ কেজি ওজন শ্রেণিতে নারী বক্সার ছিলেন ৬ জন। জিনাত প্রথম পর্যায়ে বাই পেয়ে সেমিফাইনালে উঠেন। আসিয়াকে হারিয়ে আজ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য লড়বেন।
আরেক সেমিফাইনালে বাংলাদেশ আনসারের আফরা খন্দকার তূর্য বক্সিং ক্লাবের অন্তরা আক্তার বৃষ্টিকে পরাজিত করেন। বাংলাদেশে প্রথমবার রিংয়ে নামার পর জিনাত বলেন, খুব ভালো লাগছে। এই প্রথম বাংলাদেশে খেললাম। সবাই অনেক উৎসাহ দিয়েছে। মেয়েটা (আসিয়া) ভালোই ফাইট করার চেষ্টা করেছে। মাইন্ড সেট স্ট্রং, গিভ আপ (ম্যাচ ছেড়ে দেওয়া) করেনি। টেকনিক্যালি একটু পিছিয়ে তবে সাহস আছে।
ফুটবল ও ক্রিকেট ছাড়া দেশের অন্য খেলাগুলো সব দিক থেকেই পিছিয়ে। ভালো মানের ভেন্যু ও অনুশীলন সুবিধাও পান না ক্রীড়াবিদরা। তবে বক্সিং স্টেডিয়ামের রিং নিয়ে সন্তুষ্টিই প্রকাশ করেন জিনাত। বলেন, সমস্যা হয়নি। ভালোই লেগেছে। বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী আফরার আরেকটি পরিচয় তিনি বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফইদা খন্দকারের বড় বোন। আফরা কয়েক বছর ধরে বক্সিং করলেও আফঈদা খন্দকার কয়েক মাস আগে জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক হওয়ার পরই মূলত তিনি আলোচনায় এসেছেন। ফাইনাল নিয়ে আফরার মন্তব্য, জিনাত অনেক ভালো মানের বক্সার। আশা করি একটি উপভোগ্য ফাইনাল হবে।
জিনাত যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে থাকেন। গত দুই বছর বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেললেও ঢাকায় অংশগ্রহণ এই প্রথম। তাই তার বাংলাদেশের বক্সারদের সম্পর্কে ধারণা কম। ফাইনালের প্রতিপক্ষ আফরাকে নিয়ে জিনাত বলেন, আসলে আমি প্রতিপক্ষ নিয়ে সেভাবে চিন্তা করি না। যেই হোক, নিজের খেলাটা খেলে জিততে চাই। বাংলাদেশে প্রথমবার খেলতে এসেছি, চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্মরণীয় করতে চাই।
বক্সিং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। বাংলাদেশের মহাদেশীয় গেমস পর্যায়ে এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যক্তিগত সাফল্য বক্সিংয়ে। কয়েকটি জেলায় বক্সিংয়ের বেশ চর্চা থাকলেও খেলাটি তেমন বিকশিত হতে পারেনি। নারী প্রবাসী বক্সার জিনাতের আগমনে একটু আলোচনায় এসেছে।
প্যানেল হু