ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

নিরাপত্তার চাদরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

নিরাপত্তার চাদরে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘যেহেতু এবার বাংলাদেশের দুটি দলসহ বিদেশী ছয়টি দল অংশগ্রহণ করছে। টুর্নামেন্টটি নিরাপদে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমরা নিñিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। তাছাড়া দলগুলো বিমানবন্দর থেকে শুরু করে, হোটেল, ম্যাচ ভেন্যু, অনুশীলন ভেন্যু যেখানেই যাবে। তাদের নির্বিঘেœ চলাচলের জন্য বিশেষ ট্রাফিক পরিকল্পনা করেছি। যথাযথ নিরাপত্তা জোরদার করতে নিরাপত্তা যাচাই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সব পরীক্ষা করে দেখবেন। সব রকম ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। ফুটবল বিশ্বে আমরা যাতে সফল আয়োজকের গৌরব অর্জন করতে পারি, সে চেষ্টাই থাকবে।’ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনে বসে এমনটাই বললেন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টের সিকিউরিটি এ্যান্ড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এবং পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান। বহুল প্রতীক্ষিত আন্তর্জাতিক ফুটবল আসর ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’ শুরু হচ্ছে শুক্রবার থেকে। যশোরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশ জাতীয় দল মোকাবেলা করবে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে। সেখানে গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলো চলবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ১২ জানুয়ারি থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক এই টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো। এবার এ টুর্নামেন্টে বিদেশী দলের সংখ্যা ছয়টি। বাংলাদেশের ও দু’টি দল খেলছে। টুর্নামেন্টকে ঘিরে তাই এবারও নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছে টুর্নামেন্টের সিকিউরিটি এ্যান্ড ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট কমিটি। মারুফ হানান আরও জানান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টিমের সদস্যরা পাসপোর্ট এন্ট্রি করেই বের হয়ে আসবেন। এরপর তাদের নির্বিঘেœ চলাচলের জন্য ট্রাফিক পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। যেহেতু ইতোমধ্যে ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশের নিরাপত্তার অভাবের অজুহাত দেখিয়ে আসতে আপত্তি জানিয়েছে। এমন অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসেছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ছয় বিদেশী দলের কোনটি কী বাংলাদেশে আসতে কোন রকম আপত্তি জানিয়েছে কিনা? এই প্রশ্নের জবাবে অর্গানাইজিং কমিটির সদস্য ও বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানিয়েছেন, ‘ইতোমধ্যে শ্রীলঙ্কা দল বাংলাদেশে চলে এসেছে। এএফসির সদস্য কোন দেশ কোন টুর্নামেন্টে এন্ট্রি করে ফেললে তা প্রত্যাহার করার উপায় নেই। যেই দলগুলো টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা ইনশাআল্লাহ আসবে। আর আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিও ভালই। তাই এ ধরনের চিন্তা করার অবকাশ নেই।’ মারুফ জানান, অন্যান্য আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে যেমনটি হয়, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। দর্শকদের জন্য কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে, ‘স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথে সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তা ডিভাইস থাকবে। দর্শকরা স্টেডিয়ামের আউটার গেটে নেমে নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করবেন। সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের দোকানগুলো বন্ধ থাকবে। অন্যান্য খেলায় দুপুর ১টা থেকে দোকান বন্ধ থাকবে। সেভাবেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ উল্লেখ্য, ৮ জানুয়ারি টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমা শুরু এবং ১০ জানুয়ারি হবে আখেরি মোনাজাত। তাই স্বাভাবিকভাবেই যানজট থাকবে ঢাকায়। ৯ জানুয়ারি কম্বোডিয়া এবং ১০ জানুয়ারি মালদ্বীপ জাতীয় দল আসবে বাংলাদেশে। এজতেমার বিষয়টি মাথায় রেখে সে অনুযায়ীই ট্রাফিক পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানান মারুফ। তাদের যাতে যানজটে পড়তে না হয়, তাই এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি ক্যান্টনমেন্টের ভেতর দিয়ে ফুটবলারদের টিম বাস নিয়ে আসা হবে। যশোর জেলা স্টেডিয়ামে যে প্রচুর দর্শক সমাগম হবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। এর আগেও একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে টিকেট কিনেও মাঠে ঢুকে খেলা দেখতে পারেননি অনেক দর্শক। কেননা যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে দর্শক ধারণ ক্ষমতার বেশি টিকেট ছাপানো হয়েছিল! তবে সেবার টিকেটের দায়িত্বে ছিল যশোরের স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু আন্তর্জাতিক এ টুর্নামেন্টে দর্শকরা যাতে এ ধরনের ভোগান্তির শিকার না হন সেটি মাথায় রেখে টিকেট ছাপানোর দায়িত্বে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে বাফুফে। যশোরে প্রতিম্যাচের জন্য ১২ হাজার এবং বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিম্যাচের জন্য ২১ হাজার ৮০৫টি করে টিকেট ছাপানো হচ্ছে।
×