
ছবি: সংগৃহীত
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগ ডেটা—প্রযুক্তির দুনিয়ায় শীর্ষে উঠতে চীন দৌড়াচ্ছে দুরন্ত গতিতে। এই লড়াইয়ের মূলে এক জিনিস—ডেটা। সেই ডেটা প্রক্রিয়াজাত করতে গড়ে তোলা হচ্ছে একের পর এক ডেটা সেন্টার। কিন্তু প্রতিটি সেন্টার চালাতে লাগে বিপুল বিদ্যুৎ, এবং যন্ত্রপাতি ঠান্ডা রাখতে হাজার হাজার গ্যালন পানি। ফলে প্রযুক্তি বনাম পানির লড়াই শুরু হয়েছে।
এই সংকটের সমাধানে চীন নিচ্ছে অভিনব উদ্যোগ—সমুদ্রের তলদেশে ডেটা সেন্টার। ২০২৫ সালের জুনে সাংহাই উপকূল থেকে ৬ মাইল দূরে এই প্রকল্পের নির্মাণ শুরু হয়। এটি চালু হবে অফশোর উইন্ড ফার্মের বিদ্যুতে। একদিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়, অন্যদিকে ঠান্ডা পানিতে কুলিং—দুইয়ের সমন্বয়।
হাইলান উইন নামের প্রতিষ্ঠান এটি বাস্তবায়ন করছে। মুখপাত্র লি লাংফিং জানিয়েছেন, সাধারণ ডেটা সেন্টারের চেয়ে এটি ৩০% বেশি বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী। প্রথম ধাপে থাকবে ১৯৮টি সার্ভার র্যাক, যার একেকটিতে ৪০০–৮০০টি এআই-সক্ষম সার্ভার বসবে। সেপ্টেম্বরেই চালু হবে পুরো সিস্টেম।
তবে গবেষণা বলছে, সমুদ্রের নিচে এই ধরনের সেন্টার পানির তাপমাত্রা বাড়াতে পারে, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। সাইবার হামলারও ঝুঁকি আছে—এই ডেটা সেন্টারগুলো বিশেষ প্রযুক্তিতে ব্যাহত করা সম্ভব।
তবুও চীন থেমে নেই। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরও নিচ্ছে অনুরূপ পরিকল্পনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তি প্রস্তুত হলেও, এই ধারা ছড়িয়ে পড়বে কি না তা নির্ভর করবে পরিবেশনীতি, সরবরাহব্যবস্থা আর নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর। যেখানে চীন অনেকটাই এগিয়ে।
ডেটা যখন ভবিষ্যতের তেল, তখন চীনের এই উদ্যোগ এক বিশাল টেক বিপ্লব—পরিবেশ, শক্তি আর উদ্ভাবনের যুগান্তকারী সংমিশ্রণ।
শেখ ফরিদ