
ছবি: সংগৃহীত
ইলেকট্রনিক্স পণ্য নির্মাতা হিসেবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জনকারী চীনা প্রতিষ্ঠান শাওমি এবার ইলেকট্রিক গাড়ির দুনিয়ায় বাজিমাত করেছে। টেক জায়ান্ট টেসলাকে টেক্কা দিয়ে তাদের প্রথম স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল (এসইউভি) ‘SU7’ উন্মোচনের পরপরই এক ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৮৯ হাজার প্রি-অর্ডার পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি—যা অটোমোবাইল শিল্পে এক রেকর্ড গড়েছে।
শাওমির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও লেই জুন জানিয়েছেন, গাড়ি উন্মোচনের মাত্র দুই মিনিটেই তারা পেয়েছেন ১ লাখ ৯৬ হাজার পেইড প্রি-অর্ডার এবং ১ লাখ ২৮ হাজার লক-ইন অর্ডার। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুততম প্রি-বুকিংয়ের ঘটনা।
প্রাথমিকভাবে গাড়িটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ ইউয়ান (প্রায় ৩৫ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ৪২ লাখ টাকা)। শক্তিশালী ফিচার এবং সাধারণ গ্রাহকের নাগালের মধ্যে দাম—দুইয়ের সংমিশ্রণেই SU7 অল্প সময়ে টেক প্রেমিকদের মন জয় করে নিয়েছে।
গাড়িটির বৈশিষ্ট্য:
- ডুয়াল মোটর সিস্টেম, সর্বোচ্চ ৬৯০ হর্সপাওয়ার
- ০ থেকে ১০০ কিমি/ঘণ্টা গতি তুলতে সময় লাগে মাত্র ৩.২ সেকেন্ড
- সর্বোচ্চ গতি ২৬৫ কিমি/ঘণ্টা
- উন্নত ব্যাটারির কারণে এক চার্জে রেঞ্জ ৮৩৫ কিমি (টেসলার মডেল ওয়াই-এর থেকে ১১৬ কিমি বেশি)
- ৪৮০ কিলোওয়াট ফাস্ট চার্জিং, ১০% থেকে ৮০% চার্জ মাত্র ১২ মিনিটে।
টেসলার সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ডিজাইন করা এই গাড়িটিকে অনেকেই ইতোমধ্যেই ‘ইভির ফেরারি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফিচার, স্পিড, রেঞ্জ—সবদিক থেকেই SU7 এখন পর্যন্ত বাজারে থাকা অন্যতম শক্তিশালী ইভি।
তবে শাওমির এই যাত্রা শুধুই মসৃণ নয়। গত মার্চে তাদের একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে তিন শিক্ষার্থী নিহত হন, যেটি ছিল ড্রাইভিং অ্যাসিস্ট মোডে। যদিও সেই ঘটনা ইন্টেলিজেন্ট ড্রাইভিং ফিচার নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তবে SU7-এর প্রকাশ ও ব্যাপক প্রি-অর্ডার প্রমাণ করেছে, শাওমির প্রতি গ্রাহকদের আস্থা আগের চেয়েও বেড়েছে।
গাড়িটির বাজারে আগমনের পরপরই হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে শাওমির শেয়ারের দাম বেড়ে যায় ৮ শতাংশ পর্যন্ত, যা প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্যে নতুন গতি যোগ করেছে।
টেসলাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে শাওমি যে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে লম্বা দৌড়ের জন্য প্রস্তুত, SU7 তার প্রথম সাক্ষ্য।
সূত্র: https://youtu.be/mVDBkxqVUIM?si=2ggzkHjpqd-Lmm3F
রাকিব