ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ব্যাটারিবিহীন ফোন!

রাহাত আল জুবায়ের

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ৮ নভেম্বর ২০২৪

ব্যাটারিবিহীন ফোন!

.

টেসলা এবার ব্যাটারিবিহীন ফোন বাজারে আনছে। ফোনটি সোলার সেল ও ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সফার প্রযুক্তির মাধ্যমে চলবে এবং চার্জিংয়ের ঝামেলা ছাড়াই ফোনটি দীর্ঘক্ষণ সচল থাকবে। এমনকি ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সিম কার্ড বা ডেটা প্ল্যানের প্রয়োজন হবে না, বরং স্টারলিংক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সরাসরি ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে, এমনকি এটি মঙ্গলগ্রহেও কাজ করতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই ফোনে একটি নতুন ধরনের ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সফার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, যা আশেপাশের বিদ্যুৎ উৎস থেকে শক্তি সংগ্রহ করতে পারবে। এমনকি সূর্যালোক ছাড়াও এটি কাজ করবে, ফলে ফোনটি রাতেও সচল থাকতে পারবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা বারবার ফোন চার্জ করার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবে। চার্জার বা পাওয়ার ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে, এই ফোন সবসময় সক্রিয় থাকবে।

পরিবেশের জন্যও এটি বেশ ইতিবাচক হতে পারে, কারণ এতে ইলেকট্রনিক বর্জ্য কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্যাটারি ছাড়াই এমন একটি ডিভাইস তৈরি হলে তা ইলেকট্রনিক পণ্যগুলোর পরিবেশগত প্রভাব অনেকাংশে কমাতে পারে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ব্যাটারিবিহীন ফোন তৈরি করা এখনো অনেকটাই প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জের বিষয়। বর্তমান সময়ে সোলার সেল এবং ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সফার প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ডিভাইস চালানো সম্ভব হলেও তা সীমিত শক্তি প্রদান করে। সূর্যের আলো বা কাছাকাছি বিদ্যুৎ উৎস থেকে যে শক্তি পাওয়া যায়, তা বেশিরভাগ সময়েই ফোনের মতো শক্তিশালী ডিভাইসকে পুরোপুরি সচল রাখতে সক্ষম নয়। এজন্য এই প্রযুক্তি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। টেসলা অবশ্য এখনো অফিসিয়ালি ব্যাটারিবিহীন ফোন আনার ঘোষণা দেয়নি। তবে গুঞ্জন আছে, তারা ভেতরে ভেতরে এগিয়ে গেছে অনেক দূর।
টেসলা এই ফোনে ইন্টারনেট সংযোগের জন্য স্টারলিংক স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করবে বলে শোনা যাচ্ছে। স্টারলিংক ইতোমধ্যে পৃথিবীর অনেক স্থানে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীর দুর্গম এলাকা থেকে শুরু করে যেখানে প্রচলিত মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া কষ্টসাধ্য, সেখানেও ব্যবহারকারীরা সহজে ইন্টারনেট সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন। এটি যদি সত্যি হয়, তবে এমন ফোন প্রত্যন্ত অঞ্চলের জন্য একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। টেসলার লক্ষ্য সবসময়ই পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন, কিন্তু এই ফোনটির বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো অফিসিয়াল ঘোষণা আসেনি। টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক বা টেসলার পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে কেউ কেউ এটিকে নেহাত গুজব বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন।
প্রযুক্তি জগতে প্রায়ই এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয়, যেখানে ভবিষ্যতের উদ্ভাবনের সম্ভাবনা নিয়ে কল্পনা করা হয়।
প্রযুক্তিবিদদের মতে, ব্যাটারিবিহীন ফোনের ধারণাটি আকর্ষণীয় হলেও, বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা কঠিন। বিশেষত, এমন ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সফার ব্যবস্থা যা ফোনকে সবসময় সক্রিয় রাখতে পারবে, তা নিয়ে এখনো দীর্ঘ গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তবে ইলন মাস্কের মতো উদ্ভাবক যিনি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে প্রযুক্তির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তার কাছে এটি কতটুকু কঠিন তা বলা মুশকিল।
এই ধরনের উদ্ভাবন যদি ভবিষ্যতে সত্যি হয়, তাহলে তা স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে।

×