
.
সৈয়দ উছওয়াত ইমাম। জনপ্রিয় দেশী ডেলিভারি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘এক্সপ্রেস ইন টাউন লিমিটেড’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। কখন কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়, তারা কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে কথা হয়েছে এই উদ্যোক্তার সঙ্গে। তিনি বলেন, কর্মজীবনের শুরু ২০০৯ সালে। কিন্তু ২০১৪ সালে বিক্রয় ডটকম এ অর্থ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার ইচ্ছা হয়েছিল। কিন্তু তখন সেভাবে সময় সুযোগ হয়ে ওঠেনি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে একটি সুনামধন্য কুরিয়ার কোম্পানির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই এই ইচ্ছাটি পুনরায় উজ্জীবিত হয়।
এক্সপ্রেস ইন টাউন লি.-এর যাত্রা শুরু হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ তারিখে। যখন অন্য একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের (কুরিয়ার) আকস্মিকভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত আমরা জানতে পারি, তখন এক সঙ্গে প্রায় দেড় শ’ কর্মী বেকারত্বের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভবনা তৈরি হয়। তখন সকলের পরিবারের কথা চিন্তা করে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নিয়ে এক্সপ্রেস ইন টাউন লি.-এর যাত্রা শুরু করি।
এই মুহূর্তে আমরা সারা বাংলাদেশে হোম-ডেলিভারি সেবা প্রদান করছি যাতে করে প্রত্যেক ক্রেতা তাদের কাক্সিক্ষত পণ্যটি নির্ধারিত সময়ে হাতে পেতে পারেন। আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই আমাদের সেবা পৌঁছে দেয়ার। উদ্যোক্তাদের ডেলিভারি সংক্রান্ত ঝামেলা নিরসন করাই ‘এক্সপ্রেস ইন টাউন লি.’-এর মূল লক্ষ্য। তিনি জানান, সেবা নিশ্চিত করার আগে আমাদের জানতে হবে মার্চেন্টরা সাধারণত কি কি সমস্যার সম্মুখীন হন এবং কি কি সেবা তাদের প্রয়োজন। তারই আলোকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। যেমনÑ প্রতিনিয়ত মার্চেন্টদের থেকে যথাসময়ে পার্সেল সংগ্রহ করা প্রথম কাজ। সংগৃহিত পার্সেলগুলো আমাদের সফটওয়্যারে সঠিকভাবে এন্ট্রি করা, যাতে মার্চেন্টরা তাদের পার্সেলের আপডেট সবসময় যে কোন জায়গা থেকে মনিটর করতে পারেন। এজন্য আমাদের ডাটা-এন্ট্রি টিম এবং আইটি টিম সদা তৎপর। যতেœর সঙ্গে কাস্টমারের নিকট সময়মতো পার্সেল পৌঁছে দেয়া। কাস্টমারের অসুবিধার কারণে পার্সেল হোল্ড করার প্রয়োজন হলে আমরা সাধারণত সর্বোচ্চ ৫ দিন অবধি হোল্ড করে থাকি। পার্সেল ডেলিভারি হলে মার্চেন্টদের সুবিধা অনুযায়ী সময়ে এবং উপায়ে আমরা পেমেন্ট দিয়ে থাকি। সকল মার্চেন্টদের একটি অভিযোগ হচ্ছে তারা যথাসময়ে কুরিয়ার কোম্পানি থেকে রিটার্ন পার্সেল ফেরত পান না। আমরা এ সমস্যা নিরসন করেছি এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পার্সেল ফেরত পাঠাচ্ছি। আমরা শীঘ্রই আমাদের মার্চেন্টদের জন্য নতুন কিছু সেবা নিয়ে আসছি, ওয়্যারহাউস, প্যাকেজিং, কল সেন্টার, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফটোগ্রাফি এবং ডিজিটাল মার্কেটিং। এর আগে আমাদের ফল উৎসব এবং ফেসবুক মার্কেটিং সেশান উদ্যোক্তারা খুবই পজিটিভভাবে নিয়েছেন।
প্রতিজন মার্চেন্ট তারা একে-অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছেন এবং ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে পেরেছেন। যা তাদের ব্যবসায়িক সমস্যা সমাধানের জন্য একত্র হয়ে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কর্মশালাটি তাদের ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করেছে। এতে করে তাদের মার্কেটিং পলিসি আরও উন্নত হয়েছে। অনলাইনের এই যুগে ফেসবুক কমার্সের মাধ্যমে বর্তমান সমাজে তরুণরা আত্মনির্ভরশীল হতে পারছে খুব সহজেই। ব্যবসার পরিধি অল্প সময়ে বাড়াতে পারছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি পরামর্শ থাকবে, তাদের কাস্টমারের প্রয়োজন বুঝে কাজ করতে হবে এবং কাজের প্রতি পূর্ণ সৎ থাকতে হবে। কাজ ফেলে রাখা যাবে না, আজকের কাজ আজকে না করলে অন্য কেউ সেই কাজটা করে আমার থেকে এগিয়ে যাবে।