ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্সটাগ্রাম ও লিংকডিন’র প্রতি নজরদারী বাড়াতে হবে

প্রকাশিত: ১৯:৪৫, ২৭ আগস্ট ২০২২

ইন্সটাগ্রাম ও লিংকডিন’র প্রতি নজরদারী বাড়াতে হবে

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, গুজব ছড়াতে শুধু ফেসবুক নয়; ইন্সটাগ্রাম-লিংকডিনও ব্যবহার হচ্ছে। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিসহ দেশের শান্তি, অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতা নষ্টের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

শনিবার (২৭ আগস্ট) নিজের সরকারি বাসভবন থেকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি অস্ট্রেলিয়া শাখা আয়োজিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মৌলবাদ প্রতিরোধ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দেন।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী শুধু ফেসবুক ব্যবহার করছে না, ওরা ইন্সটাগ্রাম-লিংকডিনসহ আরও অনেক মাধ্যম ব্যবহার করছে। তাই আমাদের শুধু ফেসবুকের দিকে খেয়াল রাখলে চলবে না। অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দিকেও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

এ ব্যাপারে মন্ত্রী একটি ‘কমন ডাটাবেজ’ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশুভ শক্তির বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বানও জানান।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বাংলাদেশে যেভাবে শেকড় গেড়েছে তা উপড়ে ফেলা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি দীর্ঘদিন যাবত সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কাজ করছে। এ কারণে তাদের সাধুবাদও জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।

এ সময় মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, বিটিআরসি’র মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালের আপত্তিকর পোস্ট ও কমেন্ট মুছে ফেলার জন্য একটি অ্যাপস তৈরির পরিকল্পনা করছি। ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্ট রিপোর্ট করে তা মুছে ফেলার ক্ষেত্রে আগে আমাদের সফলতার হার ছিল ৫ ভাগ, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ ভাগ। মৌলবাদী সন্ত্রাস নির্মূলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা অগ্রণী। আমরা সন্ত্রাস নির্মূলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এ বিষয়ে সচেতন করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছি।

শহীদ জননী জাহানারা ইমামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিনি যে পথ দেখিয়ে গেছেন সেই পথেই আমরা চলছি। স্বাধীনতা বিরোধী মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে তার কর্মজীবন আমাদের কাছে পাথেয়।

সংগঠনের অস্ট্রেলিয়া শাখার সভাপতি ডা. একরাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, অস্ট্রেলিয়া শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান রিতু, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েতুর রহমান বেলাল, চট্টগ্রাম ইসলামিয়া কলেজের সাবেক ভিপি ইফতেখার ইফতু, ছাত্রলীগ অস্ট্রেলিয়া শাখার সাবেক সভাপতি মুহিতুল ইসলাম সুজন ও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতা শফিকুল আলম বক্তব্য দেন।

কাজী মুকুল বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ এবং ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক বাংলাদেশ গড়ার বয়ান কীভাবে আরও সংঘবদ্ধভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায় সেটি ভাবতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. একরাম চৌধুরী বলেন, তিন দশকেরও বেশি আগে আমরা শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যে অভূতপূর্ব নাগরিক আন্দোলনের সূচনা করেছিলাম তার দুটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল- একাত্তরের গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং স্বাধীনতাবিরোধী গণহত্যাকারীদের ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধর্মনিরপেক্ষ কল্যাণ রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলা। আমরা সে পথে এগিয়ে যাচ্ছি।

 

×